শার্লিন ফারজানা। অভিনেত্রী ও মডেল। বিয়ে, ঘর-সংসার গোছানো ও মা হওয়ার কারণে অনেক দিন অভিনয় থেকে দূরে ছিলেন। বিরতি ভেঙে আবার অভিনয় জগতে পা রেখেছেন। এই সময়ের ব্যস্ততা, অভিনয় ভাবনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

বিরতি ভেঙে অভিনয়ে ফিরেছেন। সময়ের পালাবদলে কেমন লাগছে কাজের পরিবেশ? 
এখন তো ভালো কিছু করে দেখানোর সুযোগ অনেক গুণ বেড়েছে। অনলাইন বিনোদনের নতুন এক দুয়ার খুলে দিয়েছে। ওটিটির হাওয়ার ঝাপটা টেলিভিশনেও লেগেছে। সেখানেও বড় বাজেটে কাজ হচ্ছে। এসব তো আছেই, সেই সঙ্গে বেড়েছে নতুন মুখের আনাগোনা। নতুনরাও ভালো করছে। এসব দেখে কাজের আনন্দ বেড়ে গেছে। অস্বস্তি শুধু ভিউ নিয়ে কাড়াকাড়ির বিষয়টা। অনেকেই দেখছি শুধু ভিউয়ের পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ তারকা ও নির্মাতার কাজের মূল্যায়ন করছেন ভিউ দেখে, যা একদমই সমর্থন করতে পারছি না।   

যখন অনেকে নতুন কিছুর প্রত্যাশায় ছিলেন, তখনই অভিনয় থেকে সরে গিয়েছিলেন, কেন?
জীবনে এমন কিছু সময় আসে, যখন খুব হিসাবনিকাশ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিয়ে, সংসার, মাতৃত্বের স্বাদ পেতে অভিনয়ে বিরতি নেওয়া জরুরি ছিল। জানি না ওই সময়ে আমার কাছে দর্শকের কতটুকু প্রত্যাশা ছিল। যদি দর্শক মনে প্রত্যাশা তৈরি হয়েও থাকে, তবু সেটা ওই মুহূর্তে পূরণ করা সম্ভব ছিল না। তবে দর্শকের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টা যে একেবারে বুঝিনি, তা নয়। বুঝতে পেরেছি, বলেই ঘরসংসার– সব কিছু গুছিয়ে অভিনয়ের জন্য সময় বের করেছি। 

ছোট ও বড়পর্দার পর ওটিটিতে কাজ শুরু করেছেন। এই মাধ্যম কতটা সম্ভাবনাময় বলে মনে হচ্ছে?
বড় বাজেট ও যথেষ্ট সময় নিয়ে ওটিটির একেকটি সিরিজ, সিনেমা তৈরি করা হচ্ছে। প্রচুর নিরীক্ষাও চলছে। এতে শিল্পী ও নির্মাতাদের কাজে যেমন চ্যালেঞ্জ আছে, তেমনি আছে ভিন্ন ধাঁচের কিছু করে দেখানোর সুযোগ। এ কারণেই ওটিটির প্রতিটি আয়োজনে গল্প ও চরিত্র উপস্থাপন থেকে শুরু করে নির্মাণে ভিন্নতার ছাপ দেখা যাচ্ছে। এর সুবাদে ভালো ভালো কাজ দেখার সুযোগ পাচ্ছেন দর্শক।

সিনেমায় ফেরার ইচ্ছা আছে?   
‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ সিনেমার পর আর কোনো ভালো কাজের প্রস্তাব পাইনি। পাবই বা কীভাবে, সিনেমা তো বলতে গেলে হচ্ছেই না। বছরের হাতেগোনো কয়েকটি সিনেমা হচ্ছে। এর মধ্যে দর্শক মনে ছাপ ফেলার মতো সিনেমা হচ্ছে খুব কম। তারপরও সিনেমায় অভিনয় করতে প্রস্তুত, যদি ভালো কোনো পরিচালক কাছ থেকে ডাক পাই। কারণ আমি এখনও পরিচালকনির্ভর অভিনেত্রী।  

সমসাময়িক অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তুলনায় আপনাকে কাজ কম করতে দেখা যায়– এর কারণ কী?
অন্যদের তুলনায় কাজের সংখ্যা কম না বেশি– এই বিষয়টা আমাকে ভাবায় না। সবসময় ভালো কাজ করতে চাই। চাই ভালো ভালো গল্প, চরিত্র আর নির্মাতা; যাদের একেক জনের গল্প উপস্থাপন ভঙ্গি একেক রকম। কিন্তু চাইলেই তো পছন্দসই কাজ যখন-তখন আসে না। তাই যতক্ষণ তা না পাচ্ছি, নিজের মতো করেই ব্যস্ত থাকতে চাই।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

অধ্যাপক ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা থাকাকালে তাঁর ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের উল্টো যাত্রা ঘটল: অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ‘থ্রি জিরো’ (তিন শূন্য) তত্ত্ব সমর্থন করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনামলে তার উল্টো যাত্রা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তাঁর খেয়াল করা দরকার। আমরা চাই, থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নিয়ে আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। ‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শিরোনামে যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও প্রথম আলো।

বৈঠকে অর্থনীতির অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের “থ্রি জিরো” (তিন শূন্য) তত্ত্ব সারা পৃথিবীতে পরিচিত। আমি এটা খুবই সমর্থন করি যে শূন্য কার্বন নিঃসরণ, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য দারিদ্র্য। কিন্তু পুরো যাত্রাটা তো হচ্ছে উল্টো দিকে। অধ্যাপক ইউনূসের একটা সুযোগ ছিল যে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে থ্রি জিরো তত্ত্বের বাস্তবায়নের একটা মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে দাঁড় করানোর কিছু চেষ্টা করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কীভাবে কার্বন নিঃসরণ আরও বাড়ে, সেটার একটা চেষ্টা চলছে। গত ১০ মাসে লক্ষাধিক বেকারত্ব বেড়েছে শুধু কারখানা বন্ধ করার কারণে আর দারিদ্র্য বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ লাখ। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি থাকা অবস্থায় তাঁর থ্রি জিরো তত্ত্বের যে উল্টো যাত্রাটা ঘটল, এটা তো তাঁর একটু খেয়াল করা দরকার। এতে তো আমরা খুশি না। আমরা তো চাই যে থ্রি জিরো তত্ত্বটাই অগ্রসর হোক।’

‘রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর যেভাবে হতে পারে’ শীর্ষক গোলটেবিলে আলোচকদের একাংশ। সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ