দেশের প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা নির্বিঘ্ন করতে শূন্য পদগুলোতে নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

তিনি বলেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ‘মিডডে মিল’ চালু করা হয়েছে। যা অনেক শিশুকে উৎসাহিত করবে স্কুলে অবস্থান করতে এবং পড়াশোনা চালাতে। এছাড়াও যেসব শিশুর অর্থনৈতিক কারণে ঝরে পড়ছে তাদের জন্য আলাদা ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে উপআনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর। চট্টগ্রাম অঞ্চলে ‘স্কিলফো’ নামে একটি প্রকল্প চলছে। যেখানে শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা দেয়ার পাশাপাশি তাদের জীবনমুখী বিভিন্ন ধরনের কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যেন তারা কর্মক্ষম এবং উপার্জনক্ষম হয়ে ওঠে।’

রোববার সকালে কক্সবাজারে ‘মাঠ প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা।  

সভায় তিনটি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন শিক্ষাখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। চ্যালেঞ্জগুলো হলো- কর্মকর্তা, কর্মচারী, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে; জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রমে জটিলতা থাকায় শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদানে সমস্যা তৈরি হচ্ছে; শিশুশ্রমের সুযোগ বেশি থাকায় কিছু শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়মুখী করা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো.

মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নুর মো. সামশুজ্জামান ও উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী প্রমুখ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রযুক্তি কি ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে? ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য

প্রযুক্তির কল্যাণে হুটহাট বড় পরিবর্তন আসা নতুন কিছু নয়। করোনা মহামারির আগে বাসা থেকেও যে অফিস করা সম্ভব, সেটা মানতে চাইতেন না অনেকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হোম অফিস হয়েছে স্বাভাবিক। একই ঘটনা ঘটেছে ডিজিটাল দুনিয়ায়। একসময় যেকোনো তথ্য খুঁজে বের করার জন্য শরণাপন্ন হতে হতো সার্চ ইঞ্জিনের; এআই সেই উত্তর সবিস্তারে দিয়ে দিচ্ছে মুহূর্তেই। ফলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন শুধু জীবনকে সহজতর করছে না, বাঁচিয়ে দিচ্ছে সময় ও পরিশ্রমও। কিন্তু এই বেঁচে যাওয়া সময় ও পরিশ্রম মস্তিষ্কের ওপর ঠিক কীভাবে প্রভাব ফেলছে?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস ও বেলোর ইউনিভার্সিটির এক যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, এত দিন প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমার যে গুঞ্জন ভেসে বেড়িয়েছে, তার কোনো সত্যতা নেই। ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ নামে যে হাইপোথিসিস আছে, তার কোনো প্রমাণ নেই গবেষকদের কাছে। বরং পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষদের স্মার্টফোন, কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার তাঁদের স্বাভাবিক স্মৃতিভ্রম অনেকটা স্তিমিত করে।

ডিজিটাল ডিমেনশিয়া কী

২০১২ সালে প্রথম ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ তত্ত্ব নিয়ে হাজির হন জার্মান স্নায়ুবিজ্ঞানী ও মনোবিদ ম্যানফ্রেড স্পিৎজার। মূলত যে হারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং মানুষ যান্ত্রিক পর্দার সামনে প্রতিদিনের বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে, তাতে প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে অনেকটাই। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় তথ্যগুলোও মনে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে অনেকে। যেমন ফোন নম্বর। একসময় প্রিয়জনের ফোন নম্বর আমাদের মুখস্থ থাকত। এখন ফোন নম্বর ঠাঁই পায় মুঠোফোনের কনটাক্ট লিস্টে। ফোন নম্বর মনে রাখার চেষ্টাই করে না কেউ। আবার অনেকক্ষণ যান্ত্রিক পর্দার সামনে থাকলেও সেখান থেকে শেখার ইচ্ছা থাকে না অনেকের। চোখের সামনে যা আসছে, স্ক্রল করে চলে যাচ্ছে পরের কোনো কনটেন্টে। এতে মনোযোগ হারিয়ে যায় দ্রুত। আর প্রযুক্তির এমন অতিব্যবহার যে স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে, একেই ধরা হয় ‘ডিজিটাল ডিমেনশিয়া’ হিসেবে।

আরও পড়ুনডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহারের সময় ২০-২০-২০ নিয়ম মানাটা কেন জরুরি২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩গবেষণা যা বলছে

প্রায় ৪ লাখ ১১ হাজার পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষের ওপর চালানো ৫৭টি ভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যে স্মৃতিভ্রম দেখা দেয়, তার অনেকটাই হ্রাস করে প্রযুক্তির ব্যবহার। প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারের ফলে স্মৃতিশক্তি কমে আসার আশঙ্কা প্রায় ৫৮ শতাংশে নেমে আসে।

স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বরং আরও কিছু সূচকের (যেমন সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিবারিক অবস্থা) ওপর নির্ভর করে। মজার ব্যাপার হলো, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার থেকেও বেশি কার্যকর প্রযুক্তির ব্যবহার।

তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের ওপর। পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশির ভাগ সময়ই অনলাইনে কাটান ইউটিউব ভিডিও অথবা ফেসবুক স্ক্রল করে। এতে তাঁদের মস্তিষ্কের ব্যবহার হয় না বললেই চলে। মস্তিষ্ক সচল রাখতে পারে এমন কনটেন্টে তাঁদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে পারলে আনন্দ যেমন পাবেন, তেমনই ডিজিটাল দুনিয়া সম্পর্কে তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিও পালটে যাবে। এ ছাড়া অনলাইনের হাজারো গুজব ও উসকানি থেকে মুক্ত থাকবেন তাঁরা।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

আরও পড়ুনমাত্রাতিরিক্ত স্ক্রিনটাইম যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ