সেনাবাহিনী নিয়ে ভলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা জানাল আইএসপিআর
Published: 10th, March 2025 GMT
জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সেনাবাহিনী। এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়েছে।।
বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘হার্ডটক’ এ গত বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের মন্তব্য নিয়ে একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবাধিকারের তাৎপর্য যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে এবং যেকোনো গঠনমূলক সমালোচনা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে, তবে অধিকতর সঠিকতা ও স্বচ্ছতার উদ্দেশে উক্ত মন্তব্যের কিছু বিষয়ে স্পষ্টীকরণ প্রয়োজন বলে মনে করে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার থেকে এ বিষয়ক কোনো ইঙ্গিত কিংবা বার্তা সম্পর্কে অবগত নয়। যদি এ সংক্রান্ত কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তবে তা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়ে থাকতে পারে, সেনাবাহিনীকে নয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করে এবং সর্বদা আইনের শাসন ও মানবাধিকার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে, ভলকার তুর্কের মন্তব্য কিছু মহলের মাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি এবং এর পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, নিরপেক্ষতা ও সততার মহান ঐতিহ্য ধারণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অতীতের ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষত ১৯৯১ সালের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করেনি। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ও সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং কোনো পক্ষপাত বা বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে, পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এখানে উল্লেখ্য যে, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্জিত আয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ শান্তিরক্ষীরা পেয়ে থাকেন এবং এর সিংহভাগ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, যার পরিমাণ গত ২৩ বছরে প্রায় ২৭০০০ কোটি টাকা।
আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের সাথে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ককে গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করে এবং দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেনাবাহিনীর ভূমিকা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে উদ্বেগ অথবা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে তা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে ফলপ্রসূভাবে সমাধান করা সম্ভব বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মনে করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন
জাতীয় নির্বাচনে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসায় সমসাময়িক ইস্যুতে কথা বলার সময় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
আরো পড়ুন:
বাগেরহাটে হরতাল প্রত্যাহার, নির্বাচন অফিস ঘেরাওয়ের ঘোষণা
নড়াইলে বিএনপি নেতা বহিষ্কার
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যে বা কিছু আসন বেশি পাওয়ার লোভে জাতীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে কেউ যদি পিআর চায় সেটা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।”
তিনি আরো বলেন, “উচ্চ-নিম্ন সবক্ষেত্রেই আমরা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে। তারা ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যাক, ম্যান্ডেট নিয়ে তারা তাদের ভাবনা বাস্তবায়ন করুক।”
জামায়াতসহ কয়েকটি দলের আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন,“যারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের দাবি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি আলোচনাধীন। এমন সময় আন্দোলন করা কতটা উচিত, সেটা জনগণ দেখবে।”
স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, “নির্বাহী আদেশে নয়, বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সমাধান হোক।”
নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পরিণাম ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর চর্চায় রূপ নিবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করতে গেলে স্বৈরাচারের সঙ্গে যুক্ত ২৮টি দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। নির্বাচন কাদের নিয়ে হবে? এটার উদ্দেশ্য এমন হতে পারে যে, নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধা নিতে আন্দোলনকারীরা আরো দলের নিষিদ্ধের দাবি জানাতে পারে। এতে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে। এ সূত্র ধরে পতিত শক্তি সুযোগ নেবে।”
স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে না পারলে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আঞ্চলিক নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ