আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রক্সি ভোট দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এতে জাতীয় নির্বাচনের সময় যারা প্রবাসে থাকবেন, তাদের পক্ষ থেকে অন্য কেউ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এর আগে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে অংশ নেন তিনি।

নির্বাচন কমিশন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না জানিয়ে তিনি বলেছেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয়, সে জন্য ইসি সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে হলে অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে।

বৈঠকে আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পথে উত্তরণে তারা ইসিকে সহায়তা করতে চান। পর্যবেক্ষক, ভোটার তালিকা, দল নিবন্ধন ও কেনাকাটার বিষয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়েছে।

নাসির উদ্দীন বলেন, তারা জাতীয় নির্বাচনে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান। এই গণতান্ত্রিক উত্তরণে তারা আমাদের সহায়তা করতে চান। আমরা ভোটার ও দলের নিবন্ধনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগির কেনাকাটায় যাব। আমরা পর্যবেক্ষক নীতি পুনর্বিবেচনা করছি। পর্যবেক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আমরা সম্পন্ন করব।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু একটা সময়সীমা আছে, খুব সম্ভবত ডিসেম্বর। সেটা মাথায় রেখে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ডিসেম্বরে নির্বাচন, তাই অক্টোবরেই তপশিল ঘোষণা করতে হবে। সময়সীমা যেন আমরা অতিক্রম না করি, সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে হাইকমিশনারকে জানানো হয়েছে। 

কী ধরনের সহায়তা আপনারা চেয়েছেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনে দলগুলোর এজেন্টরা থাকেন। দলের কর্মী বলে তাদের এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়, অথচ তিনি নির্বাচনের নিয়মের কিছুই জানেন না। এখানে একটা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার পর দেখা যায়, তারা আমাদের নির্বাচনের পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না, আইনকানুন জানেন না। পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণের কথা আমরা জানিয়েছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শুরুর প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘এই ঘোষণাটা তো প্রধান উপদেষ্টা নিজেই দিয়েছেন। তিনি ট্রেনের হুইসেল বাজিয়ে দিয়েছেন যে নির্বাচন ডিসেম্বরে অথবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।’ পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার একটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। এটি তার এবং তার টিম যে কাজগুলো করছে, সে সম্পর্কে জানার একটি সুযোগ। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ তৈরিতে সংস্কার প্রক্রিয়ায় ঐকমত্য গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।’

এনআইডিতে একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) একাধিক স্ত্রীর নাম সংযুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রচুর সংশোধনের আবেদন আসছে। অনেক সময় দ্বিতীয় স্ত্রীরা এসে তাদের নাম ডেটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করতে বলেন। দুই নম্বর ফরমে একাধিক স্ত্রী যদি কারও থাকে, তার নামটা আগেই সংরক্ষণ করে নিই। তাহলে দেখা যাবে, ভবিষ্যতে ওই সমস্যা আর থাকবে না। এ জন্য দুই নম্বর ফরমে এটা রাখা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব স ড স ম বর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।

২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।

ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।

রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
  • ট্রাম্প কি রাজার শাসন চালাচ্ছেন