পুষ্টিবিদরা বলছেন, সেহেরি খাওয়ার তিন রকম উপকারিতা রয়েছে। শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক।সেহেরি কীভাবে এই তিনটি উপকার করে থাকে এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন ল্যাবএইড হসপিটালের সিনিয়র পুষ্টিবিদ কামরুন আহমেদ।
শারীরিক উপকারিতা:
১) শক্তি সরবরাহ করে – সেহেরি দিনের শুরুতে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগায়, যা রোজা রাখার সময় ক্লান্তি ও দুর্বলতা দূর করতে সহায়তা করে।
২) ডিহাইড্রেশন রোধ করে – পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করলে শরীরে পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় থাকে।
৩) হজমে সহায়ক – সাহরীতে হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কম হয়।
৪) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় – পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা সারাদিন সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে – পরিকল্পিত সেহেরি খেলে অতিরিক্ত ক্ষুধার অনুভূতি কম হয়, ফলে ইফতারে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
মানসিক উপকারিতা:
১.
২. মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখে – উপযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে মস্তিষ্ক সজাগ থাকে এবং কর্মক্ষমতা বাড়ে।
৩. শান্তি ও প্রশান্তি দেয় – রাতে সাহরীর জন্য ওঠার ফলে ভোরের প্রশান্ত পরিবেশ অনুভব করা যায়, যা মানসিক প্রশান্তি আনে।
আধ্যাত্মিক উপকারিতা:
১. সুন্নত পালন – সেহেরি খাওয়া একটি সুন্নত, যা পালন করলে সওয়াব পাওয়া যায়।
২.ইবাদতের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় – সেহেরি খাওয়ার মাধ্যমে ফজরের নামাজসহ অন্যান্য ইবাদতের প্রতি মনোযোগ বাড়ে।
৩. সবর ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায় – রোজার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা পাওয়া যায়।
সেহেরি শুধু একটি খাবার নয়, এটি সুস্থতা ও আত্মশুদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাই রোজার সময় সেহেরি খাওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত এবং স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া উচিত।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার
প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা।
কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।
মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ।
এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা।
কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে।
কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
ঢাকা/ইমরান/রফিক