চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র হাতে পাননি প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৭ মাসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয়পত্র হাতে পাননি তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্য সেবা, গ্রন্থাগার থেকে বই সংগ্রহ ও নিজের পরিচয় প্রদানের ক্ষেত্রে নানা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। অনেক সময় বিভিন্ন দপ্তর ও জরুরি কাজেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, আইডি কার্ড পাওয়ার আগ পর্যন্ত ভর্তি রশিদ (ব্যাংক স্লিপ) সঙ্গে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের  বিভাগগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ছাত্রশিবির অতিমাত্রায় পলিটিক্স পছন্দ করে না: নুরুল ইসলাম

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ

এ বিষয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো.

হাবিব বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো আইডি কার্ড পাইনি। আমি যে চবির একজন শিক্ষার্থী, তার কোন পরিচয়ও বাহিরে দিতে পারি না। কবে যে আইডি কার্ড হাতে পাব, তাও জানা নেই।”

তিনি বলেন, “আইডি কার্ড না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, হোটেল, ক্যাফেটেরিয়া ও ল্যাব ব্যবহারে অসুবিধা, ডিসকাউন্ট সুবিধা না পাওয়া এবং প্রশাসনিক কাজে জটিলতাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “সেদিন আমরা কয়েকজন বন্ধু বড়দীঘিরপাড় থেকে ভাটিয়ারীর দিকে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় সেনাবাহিনীর একটি চেকপোস্টে আমাদের জিজ্ঞাসা করা হয়, ‘তোমরা হাঁটতে হাঁটতে কোথায় যাচ্ছো, তোমাদের পরিচয় কি?’ তখন আমরা ব্যাংক স্লিপ দেখালে বলা হয়, ‘এটা হবে না, আমরা চাই আইডি কার্ড।”

তিনি বলেন, “এছাড়াও নানা সমস্যা রয়েছে। এজন্য কর্তৃপক্ষের শিক্ষার্থীদের পরিচয় বহনকারী আইডি কার্ড দ্রুত প্রদান করা উচিত।”

ইতিহাস বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসনাত হাসান রাহাত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ল্যাব, লাইব্রেরি, হাসপাতাল, ট্রান্সপোর্ট ও ব্যাংকিং সেবাসহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণে প্রয়োজনীয়। অনেক নবীন শিক্ষার্থী এখনো কার্ড না পাওয়ায় এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সেক্টর গতিশীল থাকলেও প্রতি বছর আইডি কার্ড প্রদানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা লক্ষণীয়। কর্তৃপক্ষের উচিত ভর্তির পর দ্রুততম সময়ে নবীন শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রদান করা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রবিউল হোসেন চৌধুরী বলেন, “২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রস্তুতের কাজ চলছে। আগামী ঈদের পরই শিক্ষার্থীরা পেয়ে যাবেন।”

তিনি বলেন, “করোনার সময় থেকে আইডি কার্ড প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আইডি কার্ড গত মাসে দেওয়া হয়েছে। সামনে থেকে ভর্তির দুই-তিন মাসের মধ্যেই আইডি কার্ড প্রদান করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “৭ মাসেও শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড পায়নি শুনে আমি খুবই দুঃখ প্রকাশ করছি। এটা তো শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। আমি বিষয়টি জরুরিভাবে দেখছি।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ বর ষ র র আইড

এছাড়াও পড়ুন:

আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ

২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে আইএমএফের চলমান ঋণ কর্মসূচির দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়টি উত্থাপনের কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন হলে চলমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ গতকাল শুক্রবার তার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকের এ তারিখ নির্ধারণসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আইএমএফের এ বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পেয়ে যাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে হতে পারে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ অনুমোদনের সময় আইএমএফ বলেছিল, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে এ ঋণ কর্মসূচি। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া—মূলত এ তিন কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার।

আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও তা আর পাওয়া যায়নি। আইএমএফের সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত। প্রায় প্রতিবছর ওয়াশিংটনসহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতে বড় ধরনের তুষারপাত হয়। গত বছরও তাই হয়েছে। অতিমাত্রার বরফের কারণে অচল হয়ে যায় জনজীবন। মার্কিন প্রশাসন সতর্কবার্তা জারি করে। তুষারপাতের কারণে আইএমএফসহ অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল অনেক দিন।

পরে আইএমএফের পক্ষ থেকে প্রথমে এ বছরের ফেব্রুয়ারি ও পরে মার্চে পর্ষদ বৈঠকের কথা বলা হয়। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি দল পর্যালোচনা করতে ঢাকায় আসে দুই সপ্তাহের জন্য। এর মধ্যে শর্ত পরিপালন নিয়ে দর–কষাকষিতে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তখন দর-কষাকষি হচ্ছিল মূলত মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা নিয়ে। আইএমএফ তা চাইলেও করতে চাইছিল না সরকার।

সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায় ও বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত পর্ষদ বৈঠকে অনুমোদন হওয়ার দুই থেকে তিন দিনের মাথায় আইএমএফ অর্থ ছাড় করে দেয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাকিবের যে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তামিম
  • ‘আমি একা হয়ে গিয়েছিলাম’—তামিমের আবেগঘন স্বীকার
  • ১৫ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিন গুণ
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা
  • শাহরুখের পারিশ্রমিক ৪২৩ কোটি টাকা!
  • অন্য বছরের চেয়ে এই জুনে ডেঙ্গু বেশি
  • ইরানকে পরমাণু জগতে ঠেলে দিয়েছে ইসরায়েলই
  • আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
  • আইএমএফের পর্ষদ বৈঠক ২৩ জুন, এরপর মিলতে পারে দুই কিস্তি অর্থ
  • সামরিক শক্তিতে ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে কে এগিয়ে