এখন থেকে কোনো গ্রাহক খেলাপি ঋণ একবারে পরিশোধ করে দিতে চাইলে ঋণস্থিতির এককালীন ৫ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। এত দিন এককালীন ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ পরিশোধের আবেদন করতে হতো। ব্যবসায়ীরা যাতে সহজেই এই সুবিধা নিতে পারে, এ জন্য নীতিমালা সংশোধন করে এ-সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো গ্রাহক খেলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরিশোধিত ঋণ পরিশোধে এক্সিট সুবিধা নেওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট বা এককালীন জমা দিলেই চলবে। আগের নীতিমালা অনুযায়ী, গ্রাহককে এই সুবিধা পেতে ঋণের ন্যূনতম ১০ শতাংশ এককালীন জমা দিতে হতো। নতুন নির্দেশনায় গ্রাহকের আবেদনের ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে তা নিষ্পত্তির জন্য বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, মূল ঋণ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত হলে এক্সিট সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ঋণের পরিমাণ ২০ লাখ টাকার বেশি হলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগের নীতিমালা অনুযায়ী, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের সিদ্ধান্ত নিতে পারত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এমন বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতার পক্ষ থেকে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে এই এক্সিট বা প্রস্থান সুবিধা দেওয়া যাবে।

নীতিমালার সাধারণ নির্দেশনায় বলা হয়, এ নীতিমালা এক্সিট সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকগুলো এক্সিট-সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে, যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে অনুমোদন করতে হবে। এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধসূচি প্রণয়ন করতে হবে। তবে ঋণ পরিশোধের মেয়াদ দুই বছরের বেশি হবে না। তবে পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসংগত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বাড়াতে পারবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক স ট স ব ধ একক ল ন গ র হক ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়
  • জাফলংসহ দেশের পর্যটন উন্নয়নে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • পরিবেশবান্ধব পর্যটনে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি