আদাবর ও মোহাম্মদপুরে ডাকাত–ছিনতাইকারী সন্দেহে গ্রেপ্তার ৩
Published: 14th, March 2025 GMT
রাজধানীর আদাবর ও মোহাম্মদপুরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ডাকাত ও ছিনতাইকারী সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছয়টি সামুরাই ও একটি চায়নিজ কুড়াল উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন শুভ হাওলাদার (২১), মো. রোহান (২০) ও আবদুল্লাহ হোসেন ওরফে মইদুল (২৫)।
আজ শুক্রবার র্যাব-২–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাতে র্যাব-২–এর একটি দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজধানীর আদাবর থানা এলাকায় ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে ডাকাতেরা জড়ো হয়েছেন। ওই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২–এর একটি আভিযানিক দল সেখানে বিশেষ অভিযান চালায়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা দৌড়ে পালানোর সময় র্যাব-২–এর একটি দল ধাওয়া করে শুভ হাওলাদার ও রোহানকে আটক করে। তাঁদের চার-পাঁচজন সহযোগী পালিয়ে যান।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে পরস্পর যোগসাজশে আদাবর এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছিলেন। তাঁরা সামুরাই, চাকু ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে পথচারীদের কাছ থেকে নগদ টাকাপয়সা, মুঠোফোন ও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেন।
এদিকে গতকাল রাতে র্যাব-২–এর আরেকটি দল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যান এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী আবদুল্লাহ হোসেন নামের আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ডাকাতি, ছিনতাইসহ মাদকদ্রব্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র য ব ২ এর
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।