বসুন্ধরাকে ঋণ পুনঃ তফসিলের সুবিধা না দেওয়ার দাবি
Published: 14th, March 2025 GMT
বসুন্ধরা গ্রুপকে ঋণ পুনঃ তফসিলের সুবিধা না দেওয়ায় দাবিতে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সামনে ঝটিকা প্রতিবাদ করেছে নারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘জাস্টিস ফর মুনিয়া’। এই কর্মসূচি থেকে মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার পুনঃ তদন্তের দাবিও জানানো হয়।
আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ৯ জন নারী একটি ব্যানার হাতে ঝটিকা প্রতিবাদ করেন। কর্মসূচিতে অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, অধিকারকর্মী নাজিফা তাসনিম খানম, নাসরিন সিরাজ, বীথি ঘোষ, প্রাপ্তি তাপসী ও সায়দিয়া গুলরুখ। এই প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে ছবিসহ একটি পোস্ট দেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একাধিক নারী বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর কলেজশিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তা সত্ত্বেও পুলিশ ও পিবিআই তাঁকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেয়। এ–সংক্রান্ত মামলায় আনভীরের পিতা আহমেদ আকবর সোবহানও আসামি। তাঁকেও গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ‘জাস্টিস ফর মুনিয়া’ নামে নারীদের প্ল্যাটফর্মটি মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার পুনঃ তদন্ত দাবি করছে।
ঝটিকা প্রতিবাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেহনুমা আহমেদ বলেন, ‘বর্তমানে ধর্ষণ ও খুনের বিরুদ্ধে দেশ উত্তাল। সরকারও কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা বলছে। অথচ আমরা দেখছি, মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগকে পাশ কাটিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপকে ঋণ পুনঃ তফসিলের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ধনী হলেই কি পার পেয়ে যাবে? আমরা সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানাতেই ঝটিকা প্রতিবাদ করেছি। একই সঙ্গে আমরা জানতে চাই, বাংলাদেশ ব্যাংক কি নিজের সিদ্ধান্তে নাকি সরকারের ওপরের চাপে এই গ্রুপকে ঋণ পুনঃ তফসিলের সুবিধা দিচ্ছে।’
সংগীতশিল্পী সায়ান বলেন, ‘ধর্ষণ প্রশ্নে আমরা দেখেছি রাষ্ট্রকাঠামোতে যাঁরাই থাকেন, তাঁরাই ক্ষমতাবান ধর্ষকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখেন। তাঁদের রাগাতে চান না; চটাতে চান না। এমনকি তাঁদের সঙ্গে বাণিজ্যও করেন। তার বিপরীতে গরিব ধর্ষকদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা দেখলাম। এটাও কাম্য নয়, কারণ এটি বিচারিক প্রক্রিয়া নয়।’
২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজশিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন রাতেই তাঁর বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে গুলশান থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তফস ল র স ব ধ ঋণ প ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।