বয়স ৩০ এর ঘরে যাওয়ার আগে করেছিলেন ৪৬৩ গোল। অথচ ৩০ বছরের পর গোল করেছেন তারও বেশি! দিন কয়েক আগেই এই মাইলফক ছুঁয়েছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এরপরও অবশ্য এই পর্তুগিজ তারকা তার গোল করার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন।
শুক্রবার (১৪ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে সৌদি প্রো লগির ম্যাচে আল-খলুদকে ৩-১ ব্যবধানে পরাজিত করেছে আল-নাসর। এই ম্যাচে আল নাসরের জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন রোনালদো। করেছেন দলের হয়ে প্রথম গোলটি। ফলে ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকার গোল সংখ্যা এখন ৯২৮টি। ক্যারিয়ার ‘১০০০’ গোল থেকে তিনি ৭২ গোল দূরে।
ঘরের মাঠ আল আওয়াল পার্কের দর্শকরা তখনও ঠিকঠাক বসতে পারেননি ঞ্জিজেদের চেয়াড়ে। তার আগেই গোল। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে গোল করেন ৪০ বছর বয়সী রোনালদো। এই মৌসুমে এটি তার ১৯তম লিগ গোল। ছয় গজ দূরে জটলাতে বল পেয়ে রোনালদো কোনো ভুল করলেন না বলটি জালে পাঠাতে।
আরো পড়ুন:
আর্জেন্টিনার বিপক্ষের ম্যাচের আগে ব্রাজিলের দুশ্চিন্তা, নিষেধাজ্ঞা শঙ্কায় নেইমারসহ ১০ তারকা
ব্রুনোর হ্যাটট্রিকে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানইউ
মিনিট পাঁচেক পরে সফরকারী দল আল-খলুদের মিজিয়ান মাওলিদা গোল করলেও তা অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। ম্যাচের ২৬ মিনিটে সাদিও মেনে আল নাসরের বযবধজান দ্বিগুন করেন। রোনালদো মধ্যমাঠ থেকে সালেম আল নাজদিকে থ্রুবল দেন। এই তরুণ লেফট ব্যাক ক্রস করলে দারুণ দক্ষতায় তা জালে পাঠান সাবেল লিভারপুল তারকা মানে।
প্রথমার্ধেই আগেই ক্ল ম্বিইয়ান ফরোয়ার্ড জন ডুরান বযবধান ৩-০ করে স্বাগতিকদের জয়ের নিশ্চয়তা এনে দেন। বিরতির পরপরই স্বাগতিকরা কিছুটা স্তব্ধ হয়ে যায়। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে আল নাসর রাইট ব্যাক নওয়াফ বোশাইল দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে দশ জনে পরিণত হয় তারা। খেলা শেষ হওয়ার ১৮ মিনিট আগে আলী লাজামির আত্মঘাতী গোল কিছুটা উদ্বেগের কারণ তৈরি করেছিল আল নাসরের। তবে শেষ পর্যন্ত ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
এই জয়ের ফলে টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আল নাসর। ২৫ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৫১। সমান সংখ্যক ম্যাচে সমান সংখ্যক পয়েন্ট নিয়েও, গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার কারণে চতুর্থ স্থানে আল কুয়াদাসিয়া। ২৫ ম্যাচ শেষে শীর্ষে অবস্থান করছে আল ইত্তিহাদ। অন্যদিকে ৫৪ পইয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল হইলাল খেলেছে এক ম্যাচ কম।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।
ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।
১৫ দফা প্রস্তাবনা
সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।
১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।