সিপিবির কার্যালয় দখলের হুমকির নিন্দা বাম জোটের
Published: 15th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও দখলের হুমকির নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, এ ধরনের হুমকি কিংবা তার সমর্থনে মব সৃষ্টি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সভায় এ আহ্বান জানান জোটের নেতারা। পরে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, আজ সিপিবি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) গণসংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনবিরোধী গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে, তা আশঙ্কাজনক। এই কর্মসূচি প্রতিহত করতে সিপিবির অফিস দখলের ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও সুপরিকল্পিত মব তৈরি করার ঘটনা উদ্বেগজনক এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের অন্তরায়।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিপিবির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পৃথক এক বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি বলেছে, তাদের অফিস দখলের ঘোষণা উদ্বেগজনক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও সংকটময় করবে।
অপর দিকে আরেকটি বিবৃতিতে সিপিবি অফিসে হামলা ও দখলের হুমকির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বামপন্থীদের কালিমালিপ্ত করা এবং ধর্ষণ–নির্যাতনের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টা করছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক দখল র
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে মেঘনার ব্লক বাঁধের ১২ স্থানে ধস, আতঙ্কে বাসিন্দারা
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ১২টি স্থানে নতুন করে ধস দেখা দিয়েছে। রামগতির ১০টি ও কমলনগরে ২টি স্থানে বাঁধের ব্লক ধসে পড়ে। এতে নদীতীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও প্রবল জোয়ারের তোড়ে গত শুক্রবার থেকে বাঁধের ব্লক ধসে পড়তে শুরু করে। এতে অনেক স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কিছু স্থানে ব্লক ধসে পড়ায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। রামগতি উপজেলায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়খেরী, চরগাজী, মাছঘাট, মালিবাড়ী, উছখালী ও ওয়াপদা অফিসসংলগ্ন এলাকায়। এ ছাড়া কমলনগরের মাতাব্বরহাট ও লুধুয়া বাজার অংশে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছি। সময়মতো কাজ শুরু না হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে।সৈয়দ আমজাদ হোসেন, ইউএনও, রামগতি উপজেলাস্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের ব্লক ব্যবহার করার কারণে জোয়ারের তোড়ে ব্লক ধসে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এর আগে গত বছরও একই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। নতুন করে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করার দাবি বাসিন্দাদের।
বড়খেরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ১৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে ব্লক দিয়ে সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে বাঁধের ব্লক বৃষ্টি-জোয়ারে ধসে পড়ছে। কাজের মান খুবই খারাপ ছিল, তা না হলে এত তাড়াতাড়ি ব্লক ধসে যেত না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি টেকসই বাঁধ দরকার। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসী চরম বিপদের মুখে পড়বে।’
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি এবং দ্রুত বাঁধ মেরামতের জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছি। সময়মতো কাজ শুরু না হলে বড় ধরনের বিপর্যয়ের ঝুঁকি রয়েছে।’
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেসব স্থানে ধস দেখা দিয়েছে, সেগুলো আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করব।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মেঘনার তীব্র ভাঙনে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ২৪২ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা নদীতে হারিয়ে গেছে। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় এক লাখ মানুষ।