বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও দখলের হুমকির নিন্দা জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, এ ধরনের হুমকি কিংবা তার সমর্থনে মব সৃষ্টি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরোধী। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সভায় এ আহ্বান জানান জোটের নেতারা। পরে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, আজ সিপিবি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) গণসংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও নারী নির্যাতনবিরোধী গণমিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে, তা আশঙ্কাজনক। এই কর্মসূচি প্রতিহত করতে সিপিবির অফিস দখলের ঘোষণা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও সুপরিকল্পিত মব তৈরি করার ঘটনা উদ্বেগজনক এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের অন্তরায়।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিপিবির সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুস সাত্তার প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে পৃথক এক বিজ্ঞপ্তিতে সিপিবি বলেছে, তাদের অফিস দখলের ঘোষণা উদ্বেগজনক রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যা দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আরও সংকটময় করবে।

অপর দিকে আরেকটি বিবৃতিতে সিপিবি অফিসে হামলা ও দখলের হুমকির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে বামপন্থীদের কালিমালিপ্ত করা এবং ধর্ষণ–নির্যাতনের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর অপচেষ্টা করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণত ন ত র ক দখল র

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ