দেশের ক্রেডিট কার্ডে বিদেশে সবচেয়ে বেশি খরচ যুক্তরাষ্ট্রে
Published: 18th, March 2025 GMT
গত বছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় আসা ও অন্য দেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরবির্তন এসেছে। তবে প্রবাসী আয় আনা ও বাংলাদেশিদের বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর হয়ে পড়েছে।
প্রবাসী আয় ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারসংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয়ের প্রধান উৎস ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ মাসে দেশটি থেকে সর্বোচ্চ ৪৯ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে পেছনে ফেলে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ উৎস হিসেবে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইভাবে বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারও সবচেয়ে বেশি হয় সে দেশে। গত জানুয়ারিতে দেশটিতে ক্রেডিট কার্ডে বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ ৬৯ কোটি টাকা খরচ করেছেন। অথচ ২০২৪ সালের জুনেও বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করতেন প্রতিবেশী ভারতে। সে মাসে ভারতে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেছিলেন ৯২ কোটি টাকা। ওই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছিল ৭৭ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছয় মাসের ব্যবধানে ভারত শীর্ষ স্থান থেকে নেমে এসেছে ষষ্ঠ স্থানে। অর্থাৎ ছয় মাসে পাঁচ ধাপ নিচে নেমে গেছে দেশটি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করে ভারত। তাতে ভ্রমণ ও চিকিৎসার প্রয়োজনে বাংলাদেশিদের ভারত যাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়। এর প্রভাব পড়েছে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে। চিকিৎসা ও ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভারতের বড় বিকল্প হয়ে উঠেছে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। এ কারণে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় এখন বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে।
— বিদেশে জানুয়ারিতে মোট খরচ হয় ৪৪৬ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪৯২ কোটি টাকা।— যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্য—এ পাঁচ দেশেই খরচ হয় ২৩৯ কোটি টাকা।
— বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছয় মাসের ব্যবধানে ভারত শীর্ষ স্থান থেকে ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে।
— জানুয়ারিতে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয় ৩,১২৫ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ৩,২১৫ কোটি টাকা।
— ফেব্রুয়ারিতে দেশে সর্বোচ্চ ৪৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের বাইরে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় এখন থাইল্যান্ডে। দেশটিতে গত জানুয়ারিতে খরচ হয়েছে ৬৪ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ কোটি টাকা। থাইল্যান্ডের পর তৃতীয় অবস্থান পায় সিঙ্গাপুর। জানুয়ারিতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে দেশটিতে খরচ হয় ৩৮ কোটি টাকা; ডিসেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ৪১ কোটি টাকা।
বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে গত জানুয়ারিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৪৪৬ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে খরচ ৪৬ কোটি টাকা কম। জানুয়ারিতে বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে যে অর্থ খরচ হয়েছে তার অর্ধেকের বেশি খরচ হয়েছে পাঁচটি দেশে। দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশে গত জানুয়ারিতে খরচ হয়েছে ২৩৯ কোটি টাকা।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বিদেশের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে কিছুটা কমেছে। গত জানুয়ারিতে দেশের অভ্যন্তরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে ৩ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে দেশের ভেতরে ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে ৯০ কোটি টাকা বা প্রায় ৩ শতাংশ।
দেশে–বিদেশে জানুয়ারিতে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমলেও দেশে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ বেড়েছে। বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদেশিরা গত জানুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ডে খরচ করেছেন ২৫৩ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ২৪১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে বাংলাদেশে বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে ১২ কোটি টাকার। জানুয়ারিতে এ দেশে অবস্থানকারী যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ হয়েছে, যার পরিমাণ ৬৭ কোটি টাকা। এর পরের অবস্থানে ছিল যুক্তরাজ্য, দেশটির ক্রেডিট কার্ডে খরচ হয়েছে ২৮ কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র ড ট ক র ড র ব যবহ র ক র ড ট ক র ড ব যবহ র গত জ ন য় র ত ড স ম বর অবস থ ন প রব স র পর ম সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।