দীর্ঘ বিরতির পর সম্প্রতি নতুন একটি চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন গায়িকা মিলা। সঞ্জয় সমাদ্দার পরিচালিত ‘ইনসাফ’ সিনেমার এই গানের সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন। দেড় যুগ আগে সংগীতাঙ্গনে দাপুটে বিচরণ ছিল মিলার। অডিও মাধ্যম, স্টেজ শো থেকে শুরু করে সবখানে তিনি সমানতালে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ করে নানা জটিলতায় গেল কয়েক বছরে গানে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। এখন আবার গানে গানে ব্যস্ত হওয়ার কথা জানান দিচ্ছেন।

আগামী ঈদুল আজহায় তাঁর নতুন একাধিক গান প্রকাশিত হবে। ঈদুল ফিতরের পর ব্যস্ত হয়ে উঠবেন স্টেজ শো নিয়েও। এদিকে শিল্পীদের কারও কারও মতে, সিন্ডিকেটের কারণে তাঁরা কাজ পান না। নতুন কাজের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মিলা জানান, এ বিষয়ের সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই একমত নন। মিলা বলেন, ‘এখন কেউ যদি বলেন, সুযোগ পাচ্ছেন না সিন্ডিকেটের কারণে, এটা মোটেও বিশ্বাসযোগ্য কথা নয়। আমি মনে করি, কোনো সিন্ডিকেট বলতে জীবনে কিছু নেই। কারও ট্যালেন্ট থাকলে তাঁকে নিতে সবাই বাধ্য এবং নেবেই। এটাই আসল কথা।’

গতকাল বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিও সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন জনপ্রিয় এই গায়িকা। আজ শুক্রবার মিলার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোরও। তখনো তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, তাঁদের সব জায়গায় থাকতে হবে। সব গান তাঁদের গাইতে হবে। আরে সব গান সবার পক্ষে তো গাওয়া সম্ভব নয়। সবাই তো গাইবে নাকি!’

সিন্ডিকেট প্রসঙ্গ উঠতেই মিলা বলেন, ‘এটা নিয়ে আমার কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। সবাই আমাকে দেখেছেন, আমি যখন কাজ করতে চেয়েছি, তখন কাজ করেছি। সবাই আমাকে তখন পছন্দ করেছেন। আমার ওই সময়ে আরও শিল্পী ছিলেন। সবাই যাঁর যাঁর মতো করে কাজ করেছেন। মাঝখানে আমি কাজ করতে চাইনি বলে, করিনি। এখন আবার চাইছি বলে কাজ করছি। মাঝেমধ্যে দেখি, কেউ কেউ কাজ না করতে না পারলে সিন্ডিকেটের দোহাই দেন। এটা কেন দিচ্ছেন, তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। আমি সব সময় মনে করি, যাঁর প্রতিভা থাকবে, তাঁকে ডাকা হবেই। ভালো ভালো কাজ তিনি করবেনই।’

আরও পড়ুনকানিজ সুবর্ণা, তিশমা ও মিলা এখন কোথায়০৭ জানুয়ারি ২০২৪মিলা ইসলাম.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের ঈদযাত্রায় প্রাণহানি গত ঈদের চেয়ে বেশি: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ১১৮২ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত, ১২ জন আহত হয়েছে। নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত ও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৫টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও ১১৯৪ জন আহত হয়েছে।

ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৩১ মে থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৪ জুন পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৯০ জন নিহত ১১৮২ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৪ সালের ঈদুল আজহায় ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৬ জন নিহত ও ৭৬২ জন আহত হয়েছিল। বিগত ঈদুল আজহার সাথে তুলনা করলে সড়ক দুর্ঘটনা ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রাণহানি ১৬ দশমিক ০৭ শতাংশ, আহত ৫৫ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এতথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “সড়কে দুর্ঘটনা ও মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে ঈদের আগে কমপক্ষে ৪ দিনের সরকারি ছুটি থাকা দরকার। ঈদের যাতায়াত ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। সবার আগে আমাদের গণপরিবহন ও ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে, ছোট যানবাহন মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। প্রশিক্ষিত দক্ষ চালক, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, মানসম্মত সড়কের পাশাপাশি আইনের সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।”

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি, অপহরণ ৩

রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৩

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশের সড়ক-মহাসড়কের বৃষ্টির কারণে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বেপরোয়া যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে। ঈদের পরে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালাতে গিয়ে সংগঠিত হয়েছে। ফলে এসব  দুর্ঘটনায় সিংহভাগ খাদে পড়ে ও দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনের লেগে যাওয়ার ঘটনা বেশি ঘটেছে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি এবারের ঈদেও চরমে ছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনদের ঈদে বাড়ি যাতায়াত করতে হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪৭ জন নিহত, ১৪৮ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৬১ জন চালক, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৮ জন পথচারী, ৪০ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ৭ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫ জন শিক্ষক, একজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী, ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

সংগঠিত দুর্ঘটনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট যানবাহনের ২৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ৬২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কার-মাইক্রো, ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ নছিমন-করিমন ও ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।

দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪০ দশমিক ৬৩ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২০ দশমিক ০৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায়, দশমিক ৭৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনে ও ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৭ দশমিক ২০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ২৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, দশমিক ৭৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও দশমিক ৭৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ, সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, ড্রাইভারস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. বাদল আহমেদ, জিএম মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

ঢাকা/এম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ