হামাসের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
Published: 22nd, March 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সামরিক গোয়েন্দা প্রধানকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। খবর স্কাই নিউজের।
শুক্রবার এক্স-এ পোস্টে করা একটি বিবৃতিতে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) নিহত হামাস নেতার নাম ওসামা তাবাস বলে জানিয়েছে। তারা আরো জানিয়েছে, ওসামা তাবাশ হামাসের নজরদারি এবং স্থলভাগে যুদ্ধ কৌশল ইউনিটের প্রধান ছিলেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ওসামা তাবাশ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার সময় হামাস যোদ্ধাদের অনুপ্রবেশের পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়ক ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ
গাজায় এবার স্থল অভিযান শুরু করলো ইসরায়েল
কখন বা কোথায় তাকে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানায়নি আইডিএফ।
এদিকে ইসরায়েলের এ দাবির বিষয়ে হামাসের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, তিনি স্থল বাহিনীকে গাজার আরো গভীরে অগ্রসর হতে এবং আরো জমি দখল করতে নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে জিম্মিদের মুক্তির জন্য হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যায়।
ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, “হামাস যত বেশি অপহৃতদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাবে, তত বেশি এলাকা ইসরায়েলের কাছে হারাবে।”
এর আগে, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় পুনরায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছিল। এরপর ইসরায়েল এবং হামাস প্রথম পর্যায়ের পরে যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়। গত মঙ্গলবার থেকে গাজায় ফের বিমান হামলা এবং বুধবার থেকে স্থল অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয় ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন ‘আগুনের মুখেই’ হবে।
হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য মার্চের শুরুতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি এবং চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল সেনা এবং কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এতে আক্রমণে প্রায় ১২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। ইতিমধ্যেই বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা