৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি
Published: 22nd, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগের বিচার এবং নিষিদ্ধের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা। দাবি আদায় না হলে সারাদেশ থেকে ঢাকামুখী হয়ে আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘ওয়ারিঅরস অব জুলাই’ প্লাটফর্ম থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন।
সমাবেশে আন্দোলনে হাত হারানো আতিকুল গাজী বলেন, আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে পুনর্বাসন করা যাবে না। যদি করতে হয় আমার হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। দুই হাজার শহীদ এবং ত্রিশ হাজার আহতদের সুস্থ করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কোনোভাবেই করতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো, যেভাবেই হোক হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।
হাসানুর রহমান, এই বাংলার মাটিতে যতদিন পর্যন্ত বেঁচে আছি ততদিন আওয়ামী লীগ ও খুনি হাসিনার বাংলার মাটিতে জায়গা হবে না।
আহত মাকসুদুর রহমান বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়- ২৪ অভ্যুত্থানের পরে যোদ্ধাদের আবার নামতে হয়। অথচ সেই শেখ হাসিনার বিচার এখনও হল না। অনতিবিলম্বে আপনারা সাবধান হন, নইলে জুলাই যোদ্ধারা আবার আপনাদের নামে রাজপথে নেমে আসবে।
আহত আরমান হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা রাষ্ট্রপতি চুপ্পুসহ প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি প্রত্যাখ্যান করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে আমরা ৬৪ জেলা থেকে জুলাই যোদ্ধা শহীদ পরিবার ঢাকামুখী হব। আবার একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। এই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ হবেই আওয়ামী লীগকে যারা সমর্থন করছে, তাদেরও বিচারের মুখোমুখী করা হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা তাদের সমর্থন করেছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।
ওয়ারিঅরস অব জুলাইয়ের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, একটি অভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে খুনি হাসিনার দোসররা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দুই হাজার লাশ এবং হাজারো আহতের অঙ্গহানির উপর রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে। অবিলম্বে খুনি হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখী করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ ল ই অভ য ত থ ন ন ষ দ ধ কর আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।”
আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।”
ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।
গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ