ভুয়া ফেসবুক নিয়ে বিড়ম্বনায় অপি করিম
Published: 24th, March 2025 GMT
তারকাদের নামে ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে বিভ্রান্ত করা নতুন ঘটনা নয়। এর আগে বহু তারকার নাম দিয়ে ভুয়া পেজ খুলে অপরাধ করেছে দেশের সক্রিয় একটি চক্র। যাদের অনেকেই হয়েছে গ্রেপ্তার। এবার নন্দিত অভিনেত্রী অপি করিমের নাম দিয়ে খোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেজ।
অপির ভুয়া ফেসবুক পেজ আর আইডিগুলো বেশ জনপ্রিয়। যেগুলোতে লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। যেগুলো থেকে প্রতিনিয়ত নানা বিষয়ে পোস্ট করা হচ্ছে; যা নিয়ে বেশ বিরক্ত অপি করিম।
বিষয়টি নিয়ে সমকালকে তিনি বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আমার নামে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন বিষয়ে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে কে বা কারা। আমার নামে আইডিগুলো তারা কেন খুলল, কিছুই বুঝতে পারছি না। আমার সব খবর তাদের কাছে থাকে। ওই আইডি দেখে মনে হতেই পারে, ওটাই আমার আইডি। এতে আমি খুবই বিরক্ত হচ্ছি।’
এরপর গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টও করেছেন এ বরেণ্য অভিনেত্রী। ভুয়া পেইজ আর আইডিগুলো নিয়ে অপি লিখেছেন, ‘আমার জীবনযাপন নিয়ে আমার অনেক আরাম! আমার অনেক বন্ধু নেই, আমি অনেক হট্টগোল পছন্দ করি না! পরিবার, কাজ, বই পড়া, ছবি আঁকা, গাছের যত্নে সারাদিন কেটে যায়!’
নিজের মোবাইল ফোন বিষয়ে অপি লিখেছেন, ‘ভাই-বোন আত্মীয়স্বজন দেশের বাইরে থাকার কারণে ফোন বিশেষ প্রয়োজনীয় জিনিস! গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ব্যবহার করতেই হয়! এর বাইরে আমার সঙ্গে ফোন থাকে খুবই কম! ফোনে তেমন ছবিও তোলা হয় না, সেলফির অভ্যা স নেই!’
ফেসবুকে নিজের আইডি প্রসঙ্গে অপি করিম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমার আইডি আছে, যা ভেরিফায়েড করা। কিন্তু তাতে বিচরণ নেই বললেই চলে! এমন কি আমি পারতপক্ষে মোবাইল ফোনে কোনো কনটেন্ট দেখি না! আয়েশ করে টিভিতেই দেখি! আর হ্যাঁ, জ্যা মে বসে চোখ বন্ধ করে শুনি ইউটিউব খেকে গল্প। চোখের আরাম, মনেরও! তাই মনে হয় সময় অনেকটাই বেঁচে যায় আমার! এবং আমার তাতেই শান্তি!
নিজের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি ও পেজগুলো যারা খুলেছেন তাদের নিয়ে অপি করিম লিখেছেন, ‘আপনারা যা লিখেন আমার হয়ে, আমি ওইভাবে কথা বলি না, লিখিও না! আমার লেখার সঙ্গে আমার কাছের মানুষ আর অনেক ভক্ত পরিচিত! তাদের আপনারা ওইগুলো ‘আমার কথা’ বলে বিশ্বাস করাতে পারবেন না! আপনার যদি এত ইচ্ছা থাকে লিখতে তাহলে নিজের নামে লিখতে বসুন, অন্যাকে দিয়ে কেন আপনার মনের কথা বলাচ্ছেন!
এত কষ্ট করে লিখছেন, কৃতিত্ব আপনারই প্রাপ্য! মিথ্যার ওপর ভর করে কারোর নাম দিয়ে লেখার যদি সাহস থাকে, তাহলে নিজের নাম দিয়ে লেখার সাহস দেখান! আপনারা এত কষ্ট করে আমার নাম ভাঙিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা থেকে অনুগ্রহপূর্বক নিজেদের বিরত রাখুন! সময় নষ্ট করছেন! তার চেয়ে চোখ বন্ধ করে গল্প শুনুন বা চোখ খুলে বই পড়ুন! প্রযুক্তির অনেক গুণ, ওটা ব্যটবহার করি যথাযথভাবে!
পরিশেষে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেরা ভালো থাকি, অন্যকে ভালো রাখি।’
প্রসঙ্গত, ফেসবুকে অপির ভুয়া এ পেজগুলো দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। যেখানে এর আগেও অভিনেত্রীর পারিবারিক ছবি শেয়ার করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডি রয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত র র অন ক র আইড আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।