বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে: আসিফ
Published: 27th, March 2025 GMT
সংগীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও আসিফ আকবর একজন ক্রিকেটার ও ক্রিকেটপাগল মানুষ। প্রেম-বিয়ে-সংসার তাকে নানা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে নিয়ে গেছে। ফলে আসিফের আর জাতীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলা হয়নি। তার কাছে ক্রিকেট মানেই আকুলতা। আরো একবার স্মৃতিবেদনায় ভাসলেন এই তারকা।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন আসিফ আকবর। তাতে স্মৃতি হাতরে এই গায়ক বলেন, “ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলাম কৈশোরের উচ্ছ্বল সময়টায়। এসএসসি পরীক্ষার সময়ই ঢাকা লীগে অভিষেক হয়ে যেত, বাধা হয়ে দাঁড়াল বোর্ড পরীক্ষা। কুমিল্লার প্লেয়ারদের চিটাগং লীগে খেলতে হলে ঢাকার আগে সেখানে রেজিস্ট্রেশন করতে হতো, তখন সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ বিমানে রেজিস্ট্রেশনের। এভাবে গেল আরো একটি বছর, সফলতার সাথে চিটাগং লীগ খেললাম বার্ডস শিপিং করপোরেশনে। ৯১/৯২ সেশনে এসে আবার খড়গ নেমে এলো এইচএসসি পরীক্ষার, প্রেম করে বিয়ে করে ফেললাম ৯২ সালে।”
ক্রিকেটার আসিফের পরিচয়পত্র
আরো পড়ুন:
ফের একসঙ্গে বালাম-ন্যানসি
ঢাকায় পাকিস্তানি গায়ক মুস্তফা জাহিদের কনসার্ট
পরের ঘটনা বর্ণনা করে আসি আকবর বলেন, “তারপর অনার্স পড়তে গিয়ে ঢাকায় প্রতিষ্ঠার রণে ভঙ্গ দিতেই হলো। একই সাথে হারিয়ে গেল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অফিসার পদে যোগদানের সুযোগ এবং ইচ্ছেটাও। পড়াশোনা, সংসার, সন্তান আর প্রতিষ্ঠা পাবার সংগ্রামে কেটে গেল আরো বেশ কিছু বছর। দুঃসহ সব সময় পেরিয়ে প্রতিষ্ঠা পেলাম গানে, অথচ এই গানের জায়গাটাতেই আমি সবচেয়ে বেশি দুর্বল।”
৩ দশক আগের ক্রিকেটার আসিফ আকবরের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। যা দেখে আপ্লুত এই তারকা। আসিফ আকবর বলেন, “দীর্ঘদিন পর ক্রিকেট পাগল বন্ধু আসাফের মাধ্যমে খুঁজে পেলাম ক্রিকেটার হিসেবে নিজের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার। আসাফ অনেক চেষ্টার পর হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ক্রিকেটার পরিচয়পত্র। কৈশোরের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেলেও এই ছোট্ট পরিচয়পত্রটি আপ্লুত করেছে আমায়, মনে হলো বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্বীকৃতি এখন আমার দখলে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে আমার আইডি নাম্বার— ৩৩৮৯। ভাই বন্ধু আসাফের প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা, ক্রিকেট নিয়ে দীর্ঘ আড্ডায় আমাদের ছবিই তোলা হয়নি।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আসামি না হয়েও স্বেচ্ছায় কারাগারে যাওয়া সেই যুবক প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে মাদকের একটি মামলায় আসামি সেজে আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যাওয়া এক যুবককে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। তাঁর নাম মো. রাকিব। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রকৃত আসামি মো. সুমনের হয়ে আদালতে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেন রাকিব। আদালতের আদেশে ১ জুলাই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে আটক রাকিবকে জালিয়াতি ও প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন। আসামিকে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট নগরের আকবর শাহ থানার কৈবল্যধাম এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যানে অভিযান চালিয়ে ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে র্যাব, যার মূল্য ৪ লাখ টাকা। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় গাড়িচালক রাহাত ইসলামকে। পালিয়ে যান চালকের সহকারী (হেলপার) মো. সুমন। এ ঘটনায় র্যাব কর্মকর্তা বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে রাহাত ইসলাম ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়।
আদালত পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি সুমনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরই মধ্যে সুমনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিষয়টি জানতে পেরে সুমন নিজেকে কারামুক্ত রাখতে তাঁর পরিবর্তে নোয়াখালীর রাকিবকে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় ১ জুলাই। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোস্তফা শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সুমনের হয়ে রাকিব আত্মসমর্পণের সময় তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ওয়াহিদ মুরাদ।
আদালতে একজনের পরিবর্তে আরেকজন আত্মসমর্পণের বিষয়টি ধরা না পড়লেও কারাগারে গিয়ে ধরা পড়ে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে (তথ্যভান্ডার) ভোটারদের আঙুলের ছাপ সংরক্ষিত আছে। এ পদ্ধতিকে বলা হয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আঙুলের ছাপে ধরা পড়েছে অনেক বন্দীর আসল পরিচয়। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি মাসের জুলাই পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আসা ১৬ জনের আঙুলের ছাপে শনাক্ত করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আদালত থেকে কারাগারে আসা প্রত্যেক নতুন আসামির আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। সেখানে আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা আসল পরিচয় উঠে আসে। ইকবাল হোসেন আরও বলেন, ‘সুমনের হয়ে কারাগারে আসা রাকিব স্বীকার করেছেন তিনি মাদক মামলার প্রকৃত আসামি নন। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তিনি সুমন সেজেছেন। তাঁকে বলা হয়েছে, দ্রুত কারাগার থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে। তাই তিনি রাজি হয়েছেন। বিষয়টি চিঠি দিয়ে আদালতকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে ‘আয়নাবাজি’, ধরা পড়েছে আঙুলের ছাপে০৮ নভেম্বর ২০২৩কারাগার থেকে চিঠি পাওয়ার পর মামলা করার নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে আসামিকে আত্মসমর্পণকারী আইনজীবী ওয়াহিদ মুরাদের কাছে কারণ ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার আকবর শাহ থানার জিআরও সাইদুর রহমান বাদী হয়ে গত রোববার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় মো. রাকিব ও মো. সুমনকে আসামি করা হয়। সুমন এখনো পলাতক।