আইপিএল উপলক্ষে ইউটিউব চ্যানেল ‘স্পোর্টস তাক’–এ সরাসরি অনুষ্ঠান চলছিল। এমন সময় হঠাৎ তিনি মেজাজ হারিয়ে টেবিলে থাকা শক্ত কোনো বস্তু তুলে নিয়ে ছুঁড়ে মারেন পেছনে থাকা টেলিভিশনে। এতে স্ক্রিন ফুটো হয়ে টেলিভিশন বন্ধ হয়ে যায়।

এটুকুতেই ক্ষান্ত হননি। স্টুডিওর কাঁচের টেবিলেও ধাক্কা দেন। এতে টেবিলের সঙ্গে সাজিয়ে রাখা একটি ব্যাট মঞ্চ থেকে ছিটকে পড়ে। এ সময় তাঁকে শান্ত করার চেষ্টা করেন পাশে থাকা এক ব্যক্তি।

এমন অদ্ভুত কাণ্ড যিনি ঘটিয়েছেন, তিনি অনুষ্ঠানেরই উপস্থাপক! নাম তাঁর পঙ্কজ। গত রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের ম্যাচ পরবর্তী আলোচনা অনুষ্ঠানে তাঁর মেজাজ হারানোর কারণ ঋষভ পন্তের হতশ্রী ব্যাটিং। অনুষ্ঠানে ক্রীড়া সাংবাদিক বিক্রান্ত গুপ্তও উপস্থিত ছিলেন।

আইপিএলের মেগা নিলামে ২৭ কোটি রুপিতে পন্তকে কিনেছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। অর্থের ঝনাঝনানির এই টি–টোয়েন্টি লিগের ইতিহাসে ভারতের উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানই সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। লক্ষ্ণৌর অধিনায়কও করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু রেকর্ড দামের চাপ ঠিকই টের পাচ্ছেন পন্ত। সবচেয়ে দামি হওয়ায় তাঁর কাছ থেকে সমর্থকদের প্রত্যাশাও অনেক বেশি।

আরও পড়ুননিলামে কেউ কেনেনি, সেই ‘লর্ড’ শার্দূলই এখন সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি৬ ঘণ্টা আগে

নিজের দিনে যেকোনো বোলিং আক্রমণকে গুঁড়িয়ে দিতে পারেন পন্ত। মাঠের সব পাশেই উদ্ভাবনী শট খেলে দর্শকদের বিনোদনও দিয়ে থাকেন। কিন্তু এ বছর তাঁকে ছন্দে দেখা যাচ্ছে না। গত সোমবার দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে লক্ষ্ণৌর জার্সিতে নিজের অভিষেক ম্যাচে ০ রানে আউট হন পন্ত। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে স্টাম্পিংও মিস করেন। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটে হেরে যায় লক্ষ্ণৌ।

এবারের আইপিএলে রান তুলতে পন্তকে যেন সংগ্রাম করতে হচ্ছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ