রাজতন্ত্রের দাবিতে নেপালে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ, নিহত ২
Published: 29th, March 2025 GMT
নেপালে বিলুপ্ত রাজতন্ত্র পুনরায় চালুর দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গতকাল শুক্রবার এক সাংবাদিকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী এবং পুলিশ কর্মকর্তা আহত হন। এ ঘটনায় মোট ৪৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র দীনেশ কুমার আচার্য ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন বিক্ষোভকারী এবং অপরজন সাংবাদিক ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন আহত বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। স্থানীয় একটি টিভি স্টেশন জানিয়েছে, একটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হলে তাদের একজন কর্মী নিহত হন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, শুক্রবার (২৮ মার্চ) সকালে সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের হাজার হাজার সমর্থক কাঠমান্ডুর পূর্ব প্রান্তে জড়ো হয়েছিল। একসময় কিছু বিক্ষোভকারী নিষিদ্ধ এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল ছুড়ে এবং জনতাকে জলকামান ছিটিয়ে পিছে হটানোর চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতে কারফিউ জারি করা হয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, এদিন রাজধানীর অপর প্রান্তে, বর্তমান প্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থার সমর্থক হাজার হাজার মানুষ একটি পাল্টা সমাবেশে জড়ো হয়েছিল, তবে তা শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ ব্যাপক রাজপথ বিক্ষোভের মুখে তার কর্তৃত্ববাদী শাসন ত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং দুই বছর পর ২০০৮ সালে সংসদ রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার পক্ষে ভোট দেয়। নির্বাচনের মাধ্যমে ২৩৯ বছরের রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে নেপাল হিন্দু রাজ্য থেকে ধর্মনিরপেক্ষ ফেডারেল প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।
তখন থেকে নেপালের শেষ রাজা ৭৭ বছর বয়সী জ্ঞানেন্দ্র কাঠমান্ডুর বাড়িতে সাধারণ নাগরিক হিসেবে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন। রাজতন্ত্র বিলুপ্তির পর থেকে গত ১৬ বছরে নেপালে ১৪টি সরকার গঠন হয়েছে। তবে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরাজ করছে ফলে প্রভাব পড়েছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে শাহকে রাজা হিসেবে পুনর্বহাল এবং হিন্দুধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ফিরিয়ে আনার দাবি ক্রমবর্ধমান হচ্ছে। রাজতন্ত্রবাদী গোষ্ঠীগুলো দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে দুর্নীতি এবং ব্যর্থ শাসনব্যবস্থার জন্য অভিযুক্ত করেছে। মানুষ রাজনীতিবিদদের প্রতি হতাশ বলে তারা দাবি করেছে।
জ্ঞানেন্দ্র, যিনি সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপনের জন্য রাজপ্রাসাদ ছেড়েছিলেন, তিনি রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি। ক্রমবর্ধমান সমর্থন সত্ত্বেও সাবেক রাজার অবিলম্বে ক্ষমতায় ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কম।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জতন ত র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত