হুইল চেয়ারে বসে নিজের সিনেমার প্রিমিয়ারে হাজির মোশাররফ করিম
Published: 30th, March 2025 GMT
শনিবার রাত ৮টা। রাজধানীর বিমানবন্দর সংলগ্ন সেন্টার পয়েন্ট স্টার সিনেপ্লেক্স। একে একে আসছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। উপলক্ষ নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবনের ঈদের সিনেমা ‘চক্কর ৩০২’ এর প্রিমিয়ার শো। কিন্তু এই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা মোশাররফ করিম যখন প্রবেশ করলেন তখন তাঁকে দেখে অবাক হয়েছিলেন উপস্থিত সবাই। কারণ, অন্যদিনের মত স্বাভাবিক ছিলেন না তিনি। পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে হুইল চেয়ারে করে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন এই অভিনেতা।
প্রথমে মোশাররফ করিমকে দেখে অনেকেই মনে করেছিল এটি হয়তো সিনেমার প্রচারণার একটি অংশ। কিন্তু না। মোশাররফ করিম ও নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন জানালেন, এটি সিনেমার প্রচারণার কোনও অংশ না। বাস্তবে তাঁর পায়ে ফোঁড়াজনিত কারণে অস্ত্রোপচার হয়েছে।
শরাফ আহমেদ জীবন সমকালকে বলেন, ‘মোশাররফ ভাইয়ের পায়ে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। তারপরও যে তিনি আজকের প্রিমিয়ারে আসবেন এটা আমরা কল্পনাও করিনি। তিনি তাঁর ডেডিকেশনের জায়গা থেকে এসেছেন। এজন্যই তিনি সেরা। এজন্যই তিনি মোশাররফ করিম। একজন নির্মাতা হিসেবে বলতে পারি, এদেশে তাঁর মত ডেডিকেটেড অভিনেতা পাওয়া সত্যিই কঠিন।’
‘‘
প্রিমিয়ার শোতে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন, অভিনেত্রী আফসানা মিমি, বিজরী বরকতুল্লাহ, মেহজাবিন চৌধুরী, রুকাইয়া জাহান চমক, আইশা খান, চক্কর সিনেমার অভিনয়শিল্পী ইন্তেখাব দিনার, সুমন আনোয়ার, রওনাক হাসান, মৌসুমী নাগ ও শাশ্বত দত্তসহ আরও অনেকে।
প্রিমিয়ার শো শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন মোশাররফ। তিনি বলেনম, “এখানে উপস্থিত হয়ে আজ সিনেমাটি যারা দেখলেন তারাই বলতে পারবেন এটি কেমন আছে। তবে আমি এটুকু বলতে পারি সবাই দারুণ অভিনয় করেছেন। কারণ, জীবন সবার থেকে অভিনয়টা আদায় করে নিয়েছেন। এছাড়া এখানে নতুন কয়েকজন শিল্পী কাজ করেছেন। তারা কিন্তু কোনও অংশেই কম করেনি। ওদের নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। আশাকরি সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে।”
‘চক্কর ৩০২’ সিনেমার টিজার এসেছে ২৬ মার্চ। ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের টিজারে টিজার অনুসারে, হত্যা রহস্য ঘিরে আবর্তিত হবে গল্প। যেখানে উঠে আসবে জীবনের নানান অন্ধকার।
পরিচালক জীবন বলেন, “গল্পটা আমাদের নিজেদের গল্প, দেশের গল্প। একটা মানুষের সম্পর্কের গল্প। দর্শক যদি গল্পের সঙ্গে, চরিত্রের সঙ্গে নিজেদের কানেক্ট করতে পারে তাহলে সিনেমাটি পছন্দ করবে। এখানে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছি না।”
২০২১-২২ অর্থবছরে ‘চক্কর’ সিনেমার জন্য অনুদান পান জীবন। প্রথমে সিনেমাটির নাম ছিল ‘বিচারালয়’। পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পরিবর্তন করে নাম রাখা হয়েছে ‘চক্কর ৩০২’।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি