ভূমিকম্পের প্রভাব, কমতে পারে কনডোমিনিয়ামের ফ্ল্যাট বিক্রি
Published: 2nd, April 2025 GMT
দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার ভয়াবহ ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডের এক বহুতল ভবন ধসে পড়েছে। অনেক বহুতল ভবনের ছাদে অবস্থিত সুইমিংপুল থেকে পানি উপচে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে থাইল্যান্ডের আবাসন খাতে নতুন সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা।
ব্যাংককের বেশির ভাগ ভবন ভূমিকম্প–প্রতিরোধী হলেও এই ভূমিকম্পের পর কাঠামোগত দৃঢ়তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দুই মাস থাইল্যান্ডের বহুতল কনডোমিনিয়ামে ফ্ল্যাট বিক্রির গতি কমে যেতে পারে। খবর দ্য নেশন থাইল্যান্ডের। আবাসন খাতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোলিয়ার্স ইন্টারন্যাশনাল থাইল্যান্ডের গবেষণা ও যোগাযোগবিষয়ক পরিচালক ফাত্তারাচাই তাউইওং বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে অনেক অবিক্রীত কনডোমিনিয়াম আছে। এবারের ভূমিকম্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এখন তা আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।’
ফাত্তারাচাই তাউইওং আরও বলেন, ‘ক্রেতারা বর্তমানে কাঠামোগত দৃঢ়তা, ভবনের নিরাপত্তা ও ভূমিকম্প প্রতিরোধক্ষমতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইছেন। সে কারণে বছরের শুরুতে কনডোমিনিয়াম বিক্রি পূর্বাভাসের তুলনায় কমে যেতে পারে।’
এই ভূমিকম্পের উৎপত্তি মিয়ানমারে। ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্পের প্রভাব মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডেও ভয়াবহভাবে অনুভূত হয়েছে। এতে দেশটির রাজধানী ব্যাংককে নির্মাণাধীন ৩০তলা একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ে। ভবনে কর্মরত ৪৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ হয়েছেন।
সরকারি কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভবনটি নির্মাণাধীন ছিল। ভূমিকম্পের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এটি পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই খাতের ক্ষতি ঠেকাতে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকার ও আবাসন কোম্পানিগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এ লক্ষ্যে আরও কঠোর ভবন নির্মাণবিধি প্রয়োগ, ভবনের কাঠামোগত উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও ভূমিকম্পপ্রতিরোধী নির্মাণব্যবস্থা সম্পর্কে ক্রেতাদের পরিষ্কার তথ্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
থাই কনডোমিনিয়াম অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রসারত তেদুল্লায়াসাথিত বলেন, ২০০৭ সালের পর নির্মিত নতুন ভবনগুলো ভূমিকম্পপ্রতিরোধী হলেও নিয়মিত ভবন পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক এই ভূমিকম্পের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়।
কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড থাইল্যান্ডের গবেষণাপ্রধান ও পরামর্শক সুরাচেত কংচিপ বলেন, ‘ভবিষ্যতে কনডোমিনিয়াম কেনার ক্ষেত্রে ভূমিকম্প প্রতিরোধক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠবে। বিশেষ করে পুরোনো ভবনগুলোর জন্য দুর্যোগ বিমা করা জরুরি।
বাজার–বিশ্লেষকেরা বলেন, তাৎক্ষণিক বিক্রির সংকট সামলানো ও দীর্ঘ মেয়াদে ক্রেতাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করা বর্তমানে ব্যাংককের কনডোমিনিয়াম বাজারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
পর্যটননির্ভর দেশ থাইল্যান্ডের জন্য এই ভূমিকম্প কাল হতে পারে বলেও আশঙ্কা। যদিও দেশটির সরকার মনে করছে, চলতি বছর ৩ কোটি ৮০ লাখ বিদেশি পর্যটক থাইল্যান্ড ভ্রমণ করতে পারেন। গত সোমবার দেশটির পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র প কনড ম ন য় ম র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি
১ মাস আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। অথচ এসব যন্ত্রগুলো বিভিন্ন দপ্তর, অফিস ও ক্লাস রুমের দেয়ালে ঝুলছে। ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একাডেমিক ভবনগুলোতে নেই পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার। আবারে যেখানে, সেগুলোর বেশিরভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ। চলতি বছরের ২৯ জুন এগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।
আরো পড়ুন:
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ন বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব রকি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ নেই। ঘটনাক্রমে আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে এই মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের রাসায়নিক পদার্থ ঠিকভাবে কাজ না করলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এগুলো দ্রুত পরিবর্তন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রুদ্র সূত্রধর বলেন, “মেয়াদোত্তীর্ণ ফায়ার এক্সটিংগুইশার প্রায়ই কাজ করে না বা অল্প সময়ে গ্যাস শেষ হয়ে যায়। ফলে জরুরি অবস্থায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা ঘটতে পারে। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জীবন সরাসরি ঝুঁকির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় নিরাপত্তার ঘাটতি একটি বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।”
এ বিষয়ে নিরাপত্তা শাখার উপ-রেজিস্ট্রার লোকমান হাকিম বলেন, “এ বিষয়ে টেন্ডার হয়ে গেছে। টেন্ডার কেউ পেয়েছে। কাজের অনুমতি পেলে তারা কাজ শুরু করবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, “যারা কাজটা পেয়েছে। তারা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো লাগাবে। কিন্তু এখনো লাগায়নি। আর এটা নিয়মিত কাজের অন্তর্ভুক্ত।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী