উৎসবের পর শূন্য অনুভব করা বা পোস্ট-ফেস্টিভ্যাল ব্লুজ কাটাবেন কীভাবে
Published: 3rd, April 2025 GMT
হঠাৎ করে পুরোনো জীবনের ছকে ফেরাটা নিঃসন্দেহে কঠিন। তাই চেষ্টা করুন একটু একটু করে পুরোনো ধারায় ফিরতে। ভালো না লাগার একটা অনুভূতিতে মন আচ্ছন্ন থাকতেই পারে। একে বলা হয় পোস্ট-ফেস্টিভ্যাল ব্লুজ বা পোস্ট-হলিডে ব্লুজ। তবে মনের অবস্থা যেমনই হোক, ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন। সুন্দর সময়টা বরং আগামী দিনের পাথেয় হয়ে উঠুক। এ সম্পর্কে বলেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী শারমিন হক।
ব্যস্ত থাকুনঈদের ঠিক পরপরই কাজের চাপ একটু কম থাকতে পারে। এ সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন।
এমন কিছু করুন, যা আপনার ভালো লাগে। ধরা যাক, আপনি বই পড়তে ভালোবাসেন। তবে এই মুহূর্তে আপনার বই পড়তেও ইচ্ছা না–ও করতে পারে। তবু হালকা ধাঁচের একটা বই হাতে নিন। একটু হলেও পড়ুন। মন খারাপের অনুভূতিটা একটু কমবে।
সময় পেলে বাইরে থেকে একটু হেঁটে আসুন।
কাছেপিঠে কোথাও প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেলে সেখানে যান। রোদে সময় কাটান।
বিভিন্ন ধরনের শরীরচর্চা করতে পারেন ঘরে এবং ঘরের বাইরে।
শিথিলায়ন ব্যায়াম করুন।
অন্যের জন্য কিছু করলে আনন্দ পাবেন। অসহায় মানুষ ও প্রাণীদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন।
নতুন কিছু শিখতে পারেন। অনলাইনেও কিছু প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুননিজে নিজে যেভাবে বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠলাম১০ মে ২০২৩পরিকল্পনা করুনপ্রায়ই ছুটি না মিললেও কিন্তু আপনি পরের ছুটির পরিকল্পনা করতে পারেন একটু একটু করে। এক ছুটির আনন্দকেই নাহয় টেনে নিন পরের ছুটি পর্যন্ত। ভেবে দেখুন, আবার একটা বড় ছুটি কখন পাবেন। তখন কী কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে ভাবলে আপনার ভালো লাগবে। বড় ছুটির আগে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় কী করবেন, সেটাও ঠিক করুন। ছোট ছোট ছুটি কাজে লাগান ইতিবাচকভাবে।
আরও পড়ুনগরমেও কি বিষণ্নতা বাড়ে২৫ এপ্রিল ২০২৪থাকুক যোগাযোগআপনজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। মুঠোফোনে কথা হোক। ভিডিও কলে দেখাও হোক।
যাঁদের সঙ্গে ঈদে দেখা হয়নি, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখুন। বহু দিন আগে কথা হয়েছে, এমন বন্ধু-স্বজনদের খোঁজ নিন।
কাছেপিঠে পরিচিত যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। পিকনিকের মতো আয়োজন হতে পারে। কিংবা একজনের বাসায় কয়েকজন একটি করে পদ রান্না করে নিয়ে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করতে পারেন কোনো কোনো দিন।
সদ্য কাটিয়ে আসা সুন্দর দিনগুলোর কথা ইতিবাচকভাবে ভেবেও আনন্দ পেতে পারেন।
আরও পড়ুনমা–বাবার বিষণ্নতা যেভাবে সন্তানের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনতে পারে২৭ নভেম্বর ২০২৪.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিজের সিনেমা দেখারও টিকিট পাননি জয়া আহসান
ঢাকার ছবি নিয়ে অভিনেত্রী জয়া আহসানের এমন দৌড়ঝাপ বহুদিন দেখা যায়নি। কেবল কলকাতার ছবি নিয়ে তাঁর সাফল্য ও দৌড়ঝাপ বিগত কয়েক বছর দেখেছেন দর্শক। এবার চিত্র বদলেছে। ঈদুল আজহায় দেশের সিনেমা হলে একসঙ্গে দুটি সিনেমা নিয়ে হাজির হয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব। ঈদের সকাল থেকে শুরু করে আজও, দর্শকদের সঙ্গে সিনেমা হলে ছুটে চলেছেন জয়া। ছবির সঙ্গে দর্শকের হৃদয়ের সংযোগটা যেন নিজ চোখেই দেখছেন তিনি।
ঈদুল আজহার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই তাণ্ডবের প্রচারণায় দেখা গেছে জয়াকে। সিনেমা মুক্তির পর সে প্রচারণা বাড়িয়েছেন বহুগুণ। ‘তাণ্ডব-এর প্রচারে গিয়ে জয়া বলেন, ঈদে যখন কোনো সিনেমা মুক্তি পায়, তখন ঈদের আবহটাই যেন সেই সিনেমাকে ঘিরে তৈরি হয়। ঈদের সকাল থেকেই সবাই খবর নেয়, সিনেমাটি কেমন চলছে। জানলাম, তাণ্ডব দেখতে সকাল থেকেই হলে দর্শকের ভিড় লেগে আছে। সিনেমাটি নিয়ে মানুষ রীতিমতো উন্মাদ হয়ে উঠেছে। এটাই তো আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
তাণ্ডব সিনেমার মাধ্যমে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় পর শাকিব খানের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন জয়া। অ্যাকশন ঘরানার এই সিনেমাটিতে তিনি অভিনয় করেছেন এক সাংবাদিকের চরিত্রে। ছবিতে আরও রয়েছেন আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, রোজী সিদ্দিকী, এজাজুল ইসলাম, সুমন আনোয়ার ও মুকিত জাকারিয়ার মতো দক্ষ অভিনয়শিল্পীরা।
দর্শকের সঙ্গে একত্রে বসে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে জয়া বলেন, ‘আমি নিজেই দর্শকের সঙ্গে সিনেমাটি উপভোগ করছি। একজন দর্শক হিসেবে বলতে পারি, পুরো টাকাটা উসুল! সিনেমা হলে যখন চারদিক থেকে শিস ও হাততালির শব্দ উঠছিল, তখনই বুঝে গেছি, তাণ্ডব মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, তাণ্ডব-এর মূল শক্তি তার গল্প। আমাদের টিম ছিল অসাধারণ। পর্দার সামনেও যেমন, তেমনি পেছনেও সবাই একদম হৃদয় দিয়ে কাজ করেছে। আমরা নিজেরাও ভীষণ আনন্দ নিয়ে ছবিটি করেছি। এরই মধ্যে দর্শকদের যে সাড়া পাচ্ছি, তাতে মন ভরে গেছে।”
অন্যদিকে, ‘উৎসব’সিনেমার প্রচারেও পিছিয়ে নেই জয়া আহসান। এ ছবিটিও দর্শকের সঙ্গে দেখার জন্য গেছেন তিনি। তাদের সঙ্গে বিনিময় করেছেন কুশল, শুনেছেন ভালো লাগা-মন্দলাগা।
জয়া বলেন, উৎসব দেখার পর দর্শকেরা নিজেরাই বলছেন– এই সিনেমাটি অনেক দিন মানুষের মনে থাকবে। ছবিটিতে যে শিল্পীরা কাজ করেছেন, তাদের সবাইকে একসঙ্গে পাওয়া ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। আমি নিজে দেশের বাইরে ও দেশের ভেতরে ছুটে চলা একজন শিল্পী; চঞ্চল ব্যস্ত একজন মানুষ, আর অপি তো যে কোনো কাজ করেন না-যতক্ষণ না সেটা তাঁর পছন্দ হয়। এতগুলো ভিন্নধর্মী শিল্পীকে এক ফ্রেমে আনা গেছে কেবল পরিচালকের মুনশিয়ানায়। আমার বিশ্বাস, সিনেমাটির যাত্রা আরও দীর্ঘ হবে।’
জয়ার দুই ছবি দেখতেই দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। টিকিট পাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন। প্রসঙ্গটি সামনে এনে জয়া বলেন, আমি নিজেই সিনেমা দেখতে গিয়ে টিকিট পাইনি। সেটা মনে হলে লজ্জাও লাগে। আশা করি, নির্মাতারা দর্শকদের জন্য টিকিট পাওয়ার সুযোগ আরও সহজ করে তুলবেন।’
ঈদের দুই ভিন্ন স্বাদের ছবি ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’দুটোতেই জয়াকে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে, ভিন্ন ভিন্ন আবহে। অথচ, প্রতিটি চরিত্রেই যেন তাঁর এক নিজস্ব ছাপ, এক অনবদ্য সত্তা। সিনেমা হলে ঢুকলেই দেখা যাচ্ছে, তাণ্ডবের ভরপুর দর্শকদের উপস্থিতি। আর ধীরে ধীরে জমে উঠছে উৎসব সিনেমাটিও।