নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক শুভ্র সাগর আজ জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। একসময় স্কুলের শ্রেণিকক্ষে জ্ঞানের আলো ছড়ানো এই তরুণ শিক্ষক এখন নিজেই এক ভয়াবহ ও বিরল রোগের শিকার।

২০১৩ সালে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন শুভ্র সাগর। শিক্ষকতার এক বছর পর, ২০১৪ সালে হঠাৎ একদিন ক্লাস নেওয়ার সময় তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করেন।

এই স্ট্রোক তার জীবনে এক ভয়াবহ মোড় নিয়ে আসে। স্ট্রোকের পর থেকেই তিনি এক অজানা ও বিরল রোগে আক্রান্ত হন, যা তাকে দিনের পর দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। 

শুভ্র সাগরের অসুখটির নাম "হিমোল্যক্রিয়া", যা পৃথিবীতে অত্যন্ত বিরল। এই রোগের ফলে তার চোখ, মাথার তালু, নাক, কান, হাতের তালু এবং শরীরের পশমের গোড়া দিয়ে অঝোর ধারায় রক্ত ঝরে। তার রক্তচাপ হঠাৎ করে বেড়ে যায়, এবং সেই সময় শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হতে থাকে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন। শুভ্র সাগরসহ এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ জনের এ রোগ শনাক্ত হয়েছে।

চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ লড়াই

রোগ নিরাময়ের জন্য দেশের নামকরা চিকিৎসক থেকে শুরু করে ভারতের চেন্নাই পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো, এখনো পর্যন্ত এই রোগের কোনো কার্যকর ওষুধ বা স্থায়ী চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি।

চিকিৎসকরা শুধুমাত্র উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।

এই তরুণ শিক্ষক এখন চরম কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে, কিন্তু তিনি এখনো বেঁচে থাকার আশা ছাড়েননি।

তার স্বপ্ন ছিল আরও অনেক শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলার, কিন্তু এখন তিনি নিজেই বাঁচার জন্য লড়াই করছেন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ