ফাতেমাদের গায়ের পোশাক ছাড়া কিছুই রইল না
Published: 9th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে ১৫টি বসতঘর ও চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের হাদি ফকিরহাট বাজারে মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, তাদের প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আজ বুধবার ফাতেমা বেগম নামে এক নারী বলেন, তিনিসহ ১৫টি পরিবারের কেউ গায়ের পোশাক ছাড়া কিছুই আগুন থেকে রক্ষা করতে পারেননি। প্রাণে বাঁচলেও সবাই এখন নিঃস্ব।
আগুনে ফাতেমা বেগম ছাড়াও যাদের বাড়ি পুড়েছে তাদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম, কবির হোসেন, মোহাম্মদ খোকন, রফিকুল ইসলাম, ডালিম, হোসেন, চঞ্চল, তোজা, টিটু, আসাদুল, মতিউর রহমানের নাম জানা গেছে। একই দুর্ঘটনায় পুরোপুরি পুড়ে গেছে জাহেদুল ইসলাম মুন্নার মালিকানাধীন আইসক্রিমের একটি কারখানা ও স্ক্র্যাপের মালপত্রের দোকান এবং জাহাঙ্গীর আলমের ওয়ার্কশপ। তাদের প্রতিষ্ঠানের পাশের তাজমহল কমিউনিটি সেন্টারের অংশবিশেষও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাহেদুল ইসলাম মুন্নার দাবি, তার দুটি প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২৫ লাখ টাকার বেশি পণ্য পুড়ে গেছে।
ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁর সব যন্ত্রপাতি পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে অন্তত ১৫ লাখ টাকার।
মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের দলনেতা হায়াতুন্নবী বলেন, আগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করে। আড়াই ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
তাদের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। দ্রুত সময়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পাশের একটি বড় আবাসিক ভবন রক্ষা পেয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন ল ইসল ম ম রসর ই
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।