আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আগের দুই বছর আমের ফলনে বিপর্যয় হয়েছে। এবার মুকুলের সময় আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। চৈত্র মাসের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন চাষি। তারা বলছেন, শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় গুটি ঝরা কমবে। সামনের দিনে কোনো দুর্যোগ না হলে গত দুই বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হবে। এ অবস্থায় স্প্রের পরামর্শ কৃষি বিভাগের।

চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এতে ২ লাখ ৬০ হাজার টন উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর প্রায় একই পরিমাণ বাগান থাকলেও অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় ফলন বিপর্যয় হয়। ২০২৩ সালে দীর্ঘ সময় শীত থাকায় মুকুল ঠিকমতো বের হয়নি। গত বছর মুকুল বের হওয়ার সময় বৃষ্টিপাত হওয়ায় নতুন পাতা গোজায়। কিছু আগাম মুকুল গাছে থাকায় সেগুলো পচে শুকিয়ে যায়।

গত বছর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গাছে মুকুল ছিল। এ কারণে মৌসুম শুরু হয় চড়া দামে। শেষ হয় আরও বেশি দামে। ফলে অনেকে ঠিকমতো মধুফল আমের স্বাদ নিতে পারেননি। এবার শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো। অন্য বছর চৈত্রে অতি তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা, খরা ও তাপদাহের কবলে ফলন বিপর্যয় হয়েছিল। এবার মুকুলের শুরু থেকেই আবহাওয়া ভালো।

গুটি মোটরদানা হওয়ার পর চৈত্রের খরায় ঝরতে থাকে বলে জানান পুঠিয়ার আমচাষি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ সময় গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হয়। এতে বাড়তি টাকা খরচ হতো। এবার সেই খরচ লাগেনি। সম্প্রতি বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে। এতে সেচের খরচ বেঁচে গেছে। গুটি ঝরাও থাকবে না বলে আশা করা হচ্ছে। এবার ফলনের জন্য ভালো পরিবেশ আছে। 

চাষিরা বলছেন, এবার মুকুল বের হওয়ার সময় ঘন কুয়াশা বা বৃষ্টি হয়নি। গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ গাছে এসেছে মুকুল। ফুল ফুটে গুটি মোটরদানা হতেই মিলেছে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। ফলে গুটিঝরা রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই। তারা দিনরাত যত্ন নিচ্ছেন। ছত্রাক ও পোকার আক্রমণ থেকে আম রক্ষায় নিয়মিত স্প্রে করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন আসবে।

বানেশ্বরের আমচাষি মো.

আলম হোসেন বলেন, আগের দুই বছর আবহাওয়া খারাপ থাকায় মুকুলের বদলে নতুন পাতা বের হয়েছিল। এবার প্রায় ৭৫ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছে। 

কৃষি বিভাগ বলছে, এবার ফল ধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। গাছে ভালো গুটি এসেছে। এ গুটি টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। বৃষ্টির কারণে এখন মাটির রস আছে। খরার কবলে পড়লে রস শুকিয়ে যাবে। এমন পরিবেশে ১৫ দিন পরপর গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হবে। এর আগে গাছে অনুমোদিত মাত্রায় সার দিতে হবে। বালাইনাশক, সার ও সেচ দিতে পারলে আম দ্রুত বড় হবে।

শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে জানিয়ে রাজশাহী ফল গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছের আমের গুটি মোটরদানা হয়েছে। এখনই নির্ধারিত মাত্রায় কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক একসঙ্গে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এ স্প্রে না করলে পোকায় আক্রমণ করবে, নষ্টও হবে। ছত্রাকও আক্রমণ করতে পারে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ ই বছর অন ক ল

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদেও আইএসআই প্রধান মালিক

পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) বর্তমান মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের বর্তমান মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিককে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের দশম জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। 

গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জেনারেল মালিক আইএসআই মহাপরিচালক হিসেবে তার বর্তমান পদেও বহাল থাকবেন।২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তিনি এই পদে রয়েছেন। প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।

তার এই নিয়োগের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একজন আইএসআই প্রধান একই সঙ্গে এনএসএ'র দায়িত্ব পেলেন। সম্প্রতি ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সামরিক উত্তেজনার মধ্যে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুহাম্মদ অসিম মালিক নতুন দায়িত্ব পাওয়ার খবর এলো। 

২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন পিটিআই সরকার অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানের এনএসএ পদটি শূন্য ছিল। সে সময় মঈদ ইউসুফ এনএসএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ