পানির লাইনের সংযোগ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে খুলনা ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদারের বিরুদ্ধে। 

তবে অর্থ দিয়েও পানির লাইন না পাওয়ায় খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ছয় জন গ্রাহক লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি। 

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, খুলনা মহানগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের নবীনগর এলাকার মুহাম্মদীয়া জামে মসজিদ সংলগ্ন চৌরাস্তার মোড়ের উত্তর দিকের গলিতে এই ছয় জন গ্রাহকের বসবাস। ওয়াসার পানির সংযোগ লাইন দেওয়ার কথা বলে খুলনা ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার ২০২৪ সালের ২৩ এপ্রিল আ.

লতিফ চিশতির নিকট থেকে ১৩ হাজার, এস এম কামরুজ্জামানের কাছ থেকে ১৪ হাজার, নজরুল ইসলামের কাছ থেকে ১৪ হাজার, আলম খানের কাছ থেকে ১৪ হাজার, মো. তৈয়বুর রহমানের কাছ থেকে ১৪ হাজার ও নূরজাহান বেগমের কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা কেউ পানির লাইন পাননি। 

গ্রাহক আ. লতিফ চিশতি বলেন, “ওয়াসার উপ সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার ১৫ দিনের ভিতরে পানির লাইন দেওয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু ৯ মাসের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আমরা পানির লাইন পাইনি।”

অপর গ্রাহক এস এম কামরুজ্জামান বলেন, “পানির লাইন পাওয়ার জন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ দেবে-কাল দেবে এভাবে বলে ঘোরাচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পানির লাইন দেয়নি।” 

এদিকে অভিযোগ স্বীকার করে ওয়াসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী চিন্ময় মহলদার বলেন, “অনেক সময় লাইন বসানোর পর গ্রাহক টাকা জমা দিতে গড়িমসি করে। অনেককে খুঁজে পাওয়া যায় না। এ কারণে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়েছি। তবে তার পরিমাণ ৮৩ হাজার নয়, ৬৯ হাজার টাকা। ৯ মাস ধরে এ টাকা আমার কাছেই আছে, অফিসে জমা দেওয়া হয়নি।” 

তিনি জানান, বিধি বহির্ভূতভাবে তিনি এ অর্থ গ্রহণ করেছেন। তবে আগামী ৮-১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকরা পানির লাইন পাবেন এবং তাদের কাছ থেকে গ্রহণকৃত টাকার অতিরিক্ত তাদের ফেরত দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ওয়াসার সচিব প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, “গ্রাহকদের কাছ থেকে ওয়াসার কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর নগদ টাকা গ্রহণের সুযোগ নেই। যদি কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন র ল ইন প ১৪ হ জ র গ র হক গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত