রূপগঞ্জে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কোন পরিক্ষার্থীকে বহিস্কার করা না হলেও অনুপস্থিত রয়েছেন ৫৭ জন পরিক্ষার্থী। পুরো উপজেলায় এ বছর ছাত্রছাত্রী মিলে মোট পরিক্ষার্থী ছিল ৬ হাজার ১৬৮ জন শিক্ষার্থী। যার মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৯৫২ জন এবং ছাত্রী ৩ হাজার ২১৬ জন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে (১০ এপ্রিল) এসএসসি ও সমমানের পরিক্ষার প্রথম দিনে রূপগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ঈসমাইল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল আলম বলেন, রূপগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৬টি পরিক্ষা কেন্দ্রের জন্য ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছি। সুশৃঙ্খলভাবে এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫ সম্পন্ন করতে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। একই সঙ্গে জেলার সকল কোচিং সেন্টার ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে চলাচলের নির্ধারিত সীমানা লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হবে।

পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বোর্ড কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কোন সেটে পরীক্ষা হবে তা জানায়। আমরা তখনই তা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিই। এখন পর্যন্ত সব কেন্দ্রে সময়মতো প্রশ্নপত্র পৌঁছেছে এবং শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরীক্ষা দিচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছে, প্রশ্ন সহজ হয়েছে এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে। এবার প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। সবার উচিত সঠিকভাবে পরীক্ষা দিয়ে ভালো ফল অর্জন করা।”

পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ, প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ, মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ, প্রশ্নপত্র নিরাপদ পরিবহন ও বিতরণ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ফটোকপি মেশিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ পর ক ষ র থ র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ফুডপ্যান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার আবু সালেহ, মাসে আয় কত জানেন

পরিবারের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অভাবের সংসারে নিজেকে একরকমের বোঝাই মনে করতেন। কিছু একটা করা দরকার। পরিস্থিতি যেন আবু সালেহ আহমেদকে দিন দিন আরও বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অনেক স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্নে নিজেকে অটুট রেখেছেন। আর পাড়ি দিতে হয়েছে অনেকটা পথ। ধৈর্য নিয়ে নিজের স্বপ্নের দিকে তাকিয়ে আজ সালেহ নিজেকে বলতেই পারেন একজন সফল ফ্রিল‍্যান্সার। কেননা এখন তিনি মাসে আয় করেন তিন লাখ টাকা।

আবু সালেহ আহমেদ। ডাকনাম আফনান। বাবা মো. কুতুব উদ্দিন শেখ মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এখন অবসর নিয়েছেন। মা সাজেদা খাতুন গৃহিণী। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তারাপুর গ্রামের আবু সালেহ আহমেদ এখন অবশ্য এলাকায় থাকেন না। থাকেন ঢাকার কাঁঠালবাগানে। এখান থেকেই আফনান গড়ে মাসিক তিন লাখ টাকা আয় করেন। ছোট্ট একটা অফিসও নিয়েছেন, যেখানে চারজন ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান করেছেন।

২০১৬ সালে সেনগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাসের পর ২০২০ সালে লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন আবু সালেহ আহমেদ। এখন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে স্থাপত্য বিভাগে চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ছাত্রাবস্থাতেও তাঁর মাসিক আয় কোনো কোনো মাসে পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ২৭ বছর বয়সী আবু সালেহ আহমেদ বিয়ে করেছেন গত বছর। স্ত্রীর নাম ফাতেমা জোহরা।

পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াই ছিল কঠিন

আফনান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আসলে মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করে বের হয়েছি। তখন ইচ্ছা থাকলেও আমাদের সামর্থ্য ছিল না ভালো জায়গায় পড়ার। আমার চার বছর যে সম‍য়টা কেটেছে, আসলে খুব কষ্টে কেটেছে। কলেজে আমি এক্সট্রা কারিকুলামে ভালো ছিলাম, ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ছিলাম, বেশ কিছু জায়গায় বিতর্ক করে চাম্পিয়নও হয়েছি। স‍্যারদের চোখে পড়েছি। একসময় আর পেরে উঠছিলাম না, তাই দুই বছর পড়তে পড়তেই টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) নিতে গিয়েছিলাম। লক্ষ্মীপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকেরা আমার কথা শুনে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যার ফলে আমি পড়াশোনাটা শেষ করেছি।’

আবু সালেহ আহমেদ প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘দিনগুলো কঠিন ছিল। টিউশনি করাতাম। ১ হাজার ৫০০ টাকা পেতাম। ১ হাজার টাকা মেসভাড়া ও ৫০০ টাকায় খাওয়া। সকালে ও রাতে খেতাম। মাসে তা–ও খাওয়ার বিল আসত ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। মেসের বাকিরা সেটা দিয়ে দিত। তারপর একদিন ২ হাজার ৫০০ টাকার একটা টিউশনি পেয়ে একটু যেন শক্তি পেলাম। এভাবেই আমার ডিপ্লোমার চার বছর কেটেছে।’

একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায়

২০২০ সালে ডিপ্লোমা পড়া শেষ করেই একবুক স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আবু সালেহ আহমেদ। এসেই শুরু করেন আবার জীবনসংগ্রাম। কোথাও কাজ পাচ্ছিলেন না। শেষমেশ ফুডপ্যান্ডায় রাইডার (ডেলিভারি বয়) হিসেবে কাজ নেন তিনি। কিন্তু শুধু ফুডপ্যান্ডায় কাজের আয় দিয়ে তাঁর চলছিল না। তখন থেকেই কাজের পাশাপাশি কিছু একটা করার চেষ্টা করছিলেন। কিছু জায়গায় খোঁজ নিয়ে ভর্তি হয়ে যান তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটিতে। খাবার ডেলিভারির পাশাপাশি কাজও শিখতেন।

আবু সালেহ আহমেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফুডপ্যান্ডার ডেলিভারি বয় থেকে সফল ফ্রিল্যান্সার আবু সালেহ, মাসে আয় কত জানেন