রিসোর্টের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটছে কুমির
Published: 20th, October 2025 GMT
অবকাশযাপনে মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে বিলাসবহুল কোনো হোটেলে বা রিসোর্টে গেছেন, সেখানে সুইমিংপুলের নীল শান্ত পানির পাশে পাতা চেয়ারে শুয়ে চোখ বন্ধ করে রোদ পোহাচ্ছেন। হঠাৎ যদি জানতে পারেন, সুইমিংপুলের পানিতে সাঁতরে বেড়াচ্ছে একটি কুমির—কী করবেন, ভেবে দেখেছেন কখনো?
এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের শেরাটন গ্র্যান্ড মরাজ রিসোর্টে। বিলাসবহুল এই রিসোর্টের অবস্থান অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের উপকূল ঘেঁষে কোরাল সাগরপারের শহর পোর্ট ডগলাসে। শহরটি গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের কাছে।
শনিবার বিকেলে রিসোর্টের দুই অতিথি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম টিকটকে ভিডিও পোস্ট করেন। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিশাল সুইমিংপুলে সাঁতার কাটছে একটি ছোট কুমির।
রিসোর্টের অতিথি লিসা কেলার তাঁর টিকটক ভিডিওতে বলেন, ‘আমি কাউকে ভয় দেখাতে চাইছি না। তবে শেরাটনের পুলে একটি কুমির আছে।’
দ্বিতীয় ভিডিওতে লিসা দেখান, সুইমিংপুলের চারপাশের লাউঞ্জে পাতা চেয়ারে শুয়ে অতিথিরা সূর্যস্নান করছেন।
টিকটকে আরেক ব্যক্তি কুমিরের ভিডিও পোস্ট করেন। @জ্যাসিল নামের ওই অ্যাকাউন্ট থেকে বলা হয়, ‘পোর্ট ডগলাসের গ্র্যান্ড মরাজ রিসোর্টের সুইমিংপুলে একা একটি কুমির আরাম করে সাঁতার কাটছে।’
ভিডিওর নিচে একজন মন্তব্য করেন, হোটেলের সুইমিংপুলে কুমির দেখা যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়; গলফ কোর্সেও একটি কুমির দেখা গিয়েছিল।
কুইন্সল্যান্ডের পরিবেশ, পর্যটন, বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন বিভাগের (ডিইটিএসআই) একজন মুখপাত্র গতকাল রোববার পোর্ট ডগলাসের হোটেলের সুইমিংপুলে কুমির পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পরে রেঞ্জাররা ঘটনাস্থলে যান।
ডিইটিএসআই মুখপাত্র বলেছেন, ‘কিউওয়াইল্ডলাইফ’ অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ অক্টোবর পোর্ট ডগলাসের একটি হোটেলের পুল থেকে একটি কুমির উদ্ধার করার পর সেটিকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
ওই এলাকায় কুমির সতর্কতার ‘সাইনপোস্ট’ বসানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আসিম মুনির: পাকিস্তানের নতুন ‘সুলতান’
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি কিংবা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ নন, পাকিস্তানে এই সময়ে সবচেয়ে বড় ‘ভিআইপি’র নাম ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির আহমেদ শাহ। ৫৭ বছর বয়সী ‘হাফেজে কোরআন’ এই সেনা কর্মকর্তা চার তারকা জেনারেল থেকে পাঁচ তারকা ফিল্ড মার্শাল, সেনাপ্রধান থেকে ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ বা (সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান) হয়েছেন। ধাপে ধাপে উঠে এখন তিনি পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীর মাধ্যমে কার্যত আইনের ঊর্ধ্বে থাকা একজন ব্যক্তি।
আসিম মুনির একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘প্রিয় বন্ধু’, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘আয়রন ব্রাদার’। উল্টো দিকে ভারতের মতে, ‘সবচেয়ে বড় হুমকি’ এবং আফগান তালেবানের দৃষ্টিতে ‘এক নম্বর শত্রু’।
বর্তমানে পাকিস্তানের সেনা, নৌ, বিমানবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, পারমাণবিক কমান্ড—সবই আসিম মুনিরের হাতে। সব মিলিয়ে নতুন একধরনের সামরিক শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছেন আসিম মুনির, যাকে অনেকেই বলছেন ‘মুনিরবাদ’।
যে পথে তিনি এলেন
১৯৬৮ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে আসিম মুনিরের জন্ম। তাঁর পরিবার ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর পাঞ্জাবের জলন্ধর থেকে পাকিস্তানে আসে। প্রথমে তারা টোবা টেক সিংয়ে বসবাস করে, পরে রাওয়ালপিন্ডির ধেরি হাসানাবাদে স্থায়ী হয়।
ছোটবেলায় আসিম মুনির গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন, যেখানে জীবন ছিল সহজ কিন্তু শৃঙ্খলাবদ্ধ। স্থানীয় স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ছিল দারুণ আকর্ষণ। ফাস্ট বোলিংয়ে তাঁর দক্ষতা ছিল প্রশংসনীয়, যা তাঁর শারীরিক সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের পরিচয় দেয়। ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি তাঁর আগ্রহ ছিল তীব্র।
আসিম মুনিরের বাবা সৈয়দ সরওয়ার মুনির ছিলেন রাওয়ালপিন্ডির এফজি টেকনিক্যাল হাইস্কুলের প্রিন্সিপাল এবং একজন ইমাম। তাঁর বাবার ধর্মীয় ও শিক্ষকতার ভূমিকা পরিবারে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ ও নৈতিক পরিবেশ তৈরি করে। মা সম্পর্কে খুব কম তথ্য পাওয়া যায়। সৈয়দ বংশের এই পরিবারে ইসলামি মূল্যবোধ ছিল গভীরভাবে প্রোথিত।
আসিম মুনিরের স্ত্রী সৈয়দা ইরুম আসিম এবং তাঁদের তিন সন্তান রয়েছেন। তাঁরা রাওয়ালপিন্ডিতে থাকেন। তবে তাঁদের জীবন প্রকাশ্যে আসে না। এ বছরের আগস্টে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পেয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি খবর ছড়িয়ে পড়েছিল; কিন্তু এর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
আসিম মুনির প্রাথমিক শিক্ষা পেয়েছেন রাওয়ালপিন্ডির মারকাজ মাদ্রাসা দারুল তাওহিদে ধর্মীয় পরিবেশে। পরবর্তী সময়ে তিনি অ্যাবোটাবাদের পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
শৈশবেই পুরো পবিত্র কোরআন মুখস্থ করা মুনিরের ব্যক্তিগত পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
মঙ্গলা মিলিটারি কলেজে পড়ার সময় আসিম মুনির হিফজ সম্পন্ন করেন। আইএসপিআর ও অফিশিয়াল জীবনীতে এটি বিশেষভাবে উল্লেখিত। ফিল্ড মার্শাল হওয়ার পর পাকিস্তানের মূলধারা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই পরিচয় আরও জোরালোভাবে উপস্থিত হয়েছে। আসিম মুনির সামরিক একাডেমিতে অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন।
ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময় সেনাদের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন আসিম মুনির: ১ মে ২০২৫, মঙ্গলা