পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ গুম, আসামির দেখানো জায়গায় মাটি খুঁড়ে উদ্ধার
Published: 11th, April 2025 GMT
হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে নিখোঁজের সাতদিন পর চুনারুঘাটের কাপাইছড়া চা বাগানের গহীন জঙ্গলে মাটি খুঁড়ে লিটন মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় চুনারুঘাট উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাপাইছড়া চাবাগানের ৯ নন্বর টিলার ভেতর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। লিটন মিয়া মাধবপুর উপজেলার গোয়াছনগর এলাকার ছায়েদ আলীর ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৩ এপ্রিল সাতছড়িতে লাকড়ি সংগ্রহের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন লিটন। এরপর থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সাতদিনেও বাড়িতে ফিরে না এলে পরিবারের লোকজন বিষয়টি বুধবার পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানা পুলিশ কাপাইছড়া চা-বাগানে অভিযান চালিয়ে প্রমোদ রিকমন (৩২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রমোদ কাপাইছড়া চাবাগানের মঙ্গল রিকমনের ছেলে। পরে প্রমোদকে সঙ্গে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যমতে পাহাড়ি এলাকার কাপাইছড়া চা বাগানের ৯ নম্বর টিলার ভেতরে মাটি খুঁড়ে লিটন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রমোদ রিকমন পুলিশকে জানান, তার ১০টি গরু চুরি হয়েছে। ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় কাপাইছড়া বাগানে লিটনকে গরু চুরি সন্দেহে পাঁচজন মিলে আটক করে মারপিট করেন। একপর্যায়ে মাথায় আঘাত করলে মাটিতে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর প্রমোদ রিকমনসহ পাঁচজন মিলে লিটনের মরদেহ মাটিতে পুঁতে রেখে চলে যান।
মাধবপুর সার্কেলের এএসপি সালিমুল হক বলেন, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যমতে, কাপাইছড়া চা-বাগানের বাজারে অভিযান চালিয়ে প্রমোদ রিকমনকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে সঙ্গে নিয়ে চা বাগানের ৯ নম্বর টিলায় মাটি খুঁড়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম বলেন, ঘটনাটি জানার ১২ ঘণ্টার মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তারের পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১৭ মাস পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয় বাংলাদেশের
প্রায় দেড় বছর পর দেশের মাটিতে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়ে সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করল টাইগাররা। ঘরের মাঠে ১৭ মাস ও টানা ছয়টি টেস্টে জয়বিহীন থাকার হতাশা ভুলিয়ে দিল এই দুর্দান্ত সাফল্য।
বাংলাদেশের জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান মেহেদী হাসান মিরাজের। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে তুলে নেন সেঞ্চুরি, এরপর বল হাতে দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্রিকেটে এটি তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স। মিরাজ ছাড়াও ৯ উইকেট শিকার করে ম্যাচে বড় অবদান রাখেন তাইজুল ইসলাম, আর ওপেনার সাদমান ইসলামও তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।
প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে করে ২২৭ রান। জবাবে টাইগাররা তোলে ৪৪৪ রান, পায় ২১৭ রানের লিড। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। ফলে মাত্র তিন দিনেই টেস্ট জয়ের উৎসবে মাতে স্বাগতিকরা।
বল হাতে টাইগারদের শুরুটা এনে দেন তাইজুল ইসলাম। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ব্রায়ান বেনেটকে ফেরান স্লিপে সাদমানের হাতে ক্যাচ করিয়ে। একই ওভারে এলবিডব্লিউ করেন নিক ওয়েলচকে, রিভিউ নিয়ে পান উইকেটটি। এরপর উইলিয়ামসকেও বিদায় করেন অফ স্পিনার নাঈম ইসলাম, দ্বিতীয় স্লিপে সাদমানের হাতেই ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
চতুর্থ উইকেটে আরভিন-কারেন জুটি কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও, মিরাজ এসে ভেঙে দেন সেই জুটি। এক ওভারেই ফেরান আরভিন ও মাদেভারেকে। এরপর তাফাদওয়া সিগা, মাসাকাদজা ও কারেনকে ফিরিয়ে ইনিংসে নিজের ফাইফার পূর্ণ করেন মিরাজ। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এক টেস্টে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি, সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পাশে নাম লেখান।
শেষ দিকে আবার বল হাতে ফিরে রিচার্ড এনগারাভাকে ফেরান তাইজুল। এরপর রানআউটের মাধ্যমে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। এই জয়ে শুধু সিরিজে সমতায়ই ফিরেনি বাংলাদেশ, বরং দেশের মাটিতে দীর্ঘ দিনের টেস্ট জয়ের অপেক্ষাও ঘুচিয়েছে।