মায়ের প্রসঙ্গ এলে ছলছল করছিল জেমসের চোখ
Published: 14th, April 2025 GMT
গুলশান সোসাইটি লেক পার্কে গত ২৩ মার্চ আড্ডার মেজাজে পাওয়া গেল জেমসকে। প্রথম আলোর সঙ্গে আড্ডায় জীবনের নানা অজানা কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায় উঠে আসে দর্শন, জীবনের পূর্ণতা–অপূর্ণতা থেকে শৈশব ও কৈশোরের মধুর স্মৃতি।
জেমসের গায়ক–জীবন চাননি বাবা মোজাম্মেল হক ও মা জাহানারা খাতুন। আর তাই অভিমানী জেমসকে ঘর ছেড়ে পথে নামতে হয়। সেই পথ চলতে চলতে তাঁর ঠিকানা হয়ে যায় চট্টগ্রামের কদমতলীর পাঠানটুলি রোডে মতিয়ার পুলের সেই আজিজ বোর্ডিংয়ের ৩৬ নম্বর কক্ষটি। তারকাখ্যাতি পেলেও তা দেখে যেতে পারেননি তাঁর মা–বাবা।
জেমসের জনপ্রিয় গানের মধ্যে অন্যতম প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘মা’ ও ‘বাবা’। গানগুলো গাওয়ার সময় আবেগতাড়িত হতে দেখা যায় তাঁকে। কনসার্টে শ্রোতার সমুদ্রে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনি যখন গাইতে থাকেন, ‘বাবা কত দিন কত দিন দেখিনা তোমায়, কেউ বলে না তোমার মতো, কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়.
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, মায়ের হাতের কোনো রান্নার স্বাদ কি তাঁর মনে পড়ে, কোনো ঘ্রাণ কি এখনো পান। জবাবে জেমস বললেন, ‘তা তো মনে থাকবেই, ভুলে যাওয়ার কিছুই নেই। সব, সবকিছুই—মায়ের হাতের সব খাবার অনেক মিস করি। মায়ের হাতের রান্না তো সবারই ভালো লাগে, এটা তো আর ভুলে যাওয়া যায় না।’
জেমস নগরবাউল। নগরজীবনের ক্লান্তি হয়তো তাঁকেও গ্রাস করে। কোথাও একবার বলেছিলেন, একদিন হুট করে এই শহর ছেড়ে চলে যাবেন নিজ গ্রামে। জেমস কি এই শহর ছাড়তে চান এখনো?
তিনি বললেন, ‘এখনো খুব ইচ্ছা আছে শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার। সব সময় মনে হয়, শান্ত কোথাও চলে যাই। নাগরিক এ জীবনের ক্লান্তি বলতে আমার মধ্যে দুই ধরনের বিষয় কাজ করে। এখানে থাকতে বিরক্ত লাগে, আবার দূরে গেলে মিস করি। মানে একটা দোটানা। একবার শহর ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছা হয়, শহর ছেড়ে চলে গেলে মনে হয়, এ শহর আমাকে ডাকছে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা
‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’
এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন।
এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’
প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’
প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।