ফেসবুক পোস্টের জেরে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের ২ নেতার ওপর দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শহরের এসএম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াইশ' শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরা হলেন- সমন্বয়ক এবং গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মো.

জসিম উদ্দিন ও সদস্য সচিব সাইদুর রহমান।

আহত মো. জসিম উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিকেল ৪টার দিকে খাবার খাওয়ার উদ্দেশে ক্যাম্পাস থেকে গোপালগঞ্জ শহরের দিকে আমরা ৩ জন রওনা দেই। শহরের এসএম মডেল স্কুলের সামনের সড়কে পৌঁছালে ১০/১২ জন যুবক আমাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় তারা বলে, 'জসিম কে, তুই না?' এই কথার পর তারা আমাকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং পিছন দিক থেকে এলোপতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। লোকজন ভিড় করলে তারা আমাকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে বলে, 'তোরা চাঁদাবাজি করিস, তোদের চাঁদাবাজি ছোটাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বের হবি না, বের হলে তোদের খবর আছে।' এসময় আমি ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব সাইদুর রহমান আহত হই। যারা হামলা চালিয়েছে তাদের চিনি না। তবে বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতাকে নিয়ে দেওয়া ফেসবুক পোস্টের কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে সন্দেহ করছি।

জসিম ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে বলেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গিয়ে কয়েকজন বহিরাগত আমার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে থাকে। বিষয়টি জানতে পেরে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে নিষিদ্ধ সংগঠন গোপালগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিউটন মোল্লাকে নিয়ে পোস্ট দেই। সেখানে লিখেছিলাম 'জসিম কে, তোদের বাপ নিউটন মোল্লাকে জিজ্ঞেস কর'। ওই ফেসবুকে পোস্টকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান সমকালকে বলেন, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে  গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ ফ সব ক প স ট গ প লগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।

আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র‌্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।

আরো পড়ুন:

মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি

তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন

সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।

দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।

৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।

কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”

তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি