আ’লীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে জাকির খানের মিছিল ও সমাবেশ
Published: 22nd, April 2025 GMT
আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপি নেতা জাকির খানের অনুসারীরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকালে শহরে ২নং রেলগেটস্থ মহানগর বিএনপির সাবেক কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিশাল মিছিল বের করে তারা। মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে এ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলে প্রায় সহস্রাধীক নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশগ্রহণ করে।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাষাঢ়াস্থ নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়। মিছিলে থাকা প্রায় সহস্রাধীক নেতাকর্মীরা ‘জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করো’ আওয়ামী লীগের আস্তানা বাংলাদেশে রাখবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এসময় তাদের স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে গোটা শহর।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত দিনের খুনি সরকার দেশের বাইরে ভারতে অবস্থান করে এ সোনার বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের জানমালের ক্ষতি করার নীলনকশা তৈরি করেছেন।
আজকে রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে এবং আমাদের নেতা জাকির খানের পক্ষে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে মাঠে নেমেছি। ইনশাআল্লাহ্ যতদিন না জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাবো না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বক্তারা আরও বলেন, যারা এ ঝটিকা মিছিল করছেন আপনাদের সাবধান করে দিচ্ছি কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। যদি বাংলাদেশের জনগণের জানমালের কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করেন, তাহলে আমরা কেউ ঘরে বসে থাকবো না।
আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশে জাকির খানের পক্ষে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়বো। আপনাদের প্রতিরোধ করতে যা যা করা দরকার, আমরা তাই করতে প্রস্তুত আছি।
বক্তারা শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি ভারতে বসে আপনার মোষ্টিম কিছু আওয়ামী লীগ, যুবলীগ আর কুত্তালীগ দিয়ে দেশের আঠারো কোটি মানুষের শান্তি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছেন। আপনাকে বলে দিচ্ছি, এর পরিনাম শুভ হবে না।
দেশ নায়ক তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে এবং নারায়ণগঞ্জের আপামর জনসাধারনের নেতা আমাদের নেতা আমাদের অহংকার জাকির খানের নারায়ণগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
দেশের আঠারো কোন মানুষের শান্তির জন্য যদি আমাদের বুকের তাজা রক্তেরও প্রয়োজন হয়, আমরা রাজপথে তা ঢেলে দেবো। তবুও কোন অবস্থাতেই দেশের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হতে দেবো না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির অন্যতম নেতা ও জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম টুলু, মহানগর বিএনপি নেতা সলিমুল্লাহ্ করিম সেলিম, আমিনুল ইসলাম, ফরিদ আহমেদ, মহানগর মৎস্যজীবী দলের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম রতন, সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লিংকন খান, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি পারভেজ মল্লিক, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি এইচ এম হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক অর্থ বিষয়ক সম্পাদক নূরে আলম হানিফ, মহানগর মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু, যুগ্ম আহ্বায়ক মীর মোহাম্মদ রাজীব, শাহীন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক লিমন ভূঁইয়া, মহানগর কৃষকদলের সহ সভাপতি সালেহ আহমেদ রনি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাকিব হাসান রাজ, বন্দর উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিয়ন, ফতুল্লা থানা শহীদ জিয়া পরিষদের সভাপতি নয়ন তালুকদার, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লিংরাজ খান, সরকারি তোলারাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য ফাহিম আহমেদ প্রমূখ।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ছ ত রদল র স ব ক দল র স ব ক স ন র য়ণগঞ জ আম দ র রহম ন আওয় ম আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।