ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দুই মাস আগে ঘটা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে অবশেষে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিচ্ছে সরকার। উপাচার্যের অপসারণের খবর পৌঁছানোর পর অনশনরত শিক্ষার্থীরা তাঁদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে দীর্ঘদিনের অস্থিরতার অবশেষে অবসান হওয়ার আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে দেওয়া বক্তব্যে পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, তাঁদের এক দফা পূরণ হয়েছে। এখনো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আন্দোলনে একক কোনো নেতৃত্ব ছিল না, সবাই মিলে এটা পরিচালনা করেছেন। সামনে কুয়েটকে সংস্কারের জন্য বাকি যে দফাগুলো আছে ধীরে ধীরে তা পূরণ করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তবে এই পরিস্থিতিতে ভিন্ন সুর শোনা গেছে শিক্ষক সমিতির কণ্ঠে। উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার পদক্ষেপকে তারা ‘ন্যায়বিচারের পরাজয়’ আখ্যায়িত করেছেন। এর আগে গতকাল বুধবার শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্যাম্পাসের সুনাম নষ্ট করে, ক্যাম্পাসকে বাজি ধরে এটাকে ব্যাটেল গ্রাউন্ড বানিয়ে, কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।

আজও শিক্ষক সমিতি বলেছে, যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের জন্য আন্দোলন করছিল, তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির কবলে বন্দী। তাদের মতে, এ কারণেই গত ১৮ ফেব্রুয়ারির সংকট নিরসনে শিক্ষকদের কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি।

ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন গ্রুপে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা ক্যাম্পাসসংলগ্ন এলাকায় ফরম ও লিফলেট বিতরণ করেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং কুয়েটের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (কমিটি বিলুপ্ত) নেতা–কর্মীরা মিছিল বের করেন। মিছিল চলাকালে ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।

কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকাতেও। ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরের চিত্র.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ১৮ ফ ব র য় র উপ চ র য র জন ত স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

তেহরানে ইন্টারনেট বন্ধ করল সরকার, স্টারলিংক চালু করলেন মাস্ক

ইসরায়েলি হামলার প্রেক্ষাপটে ইরান সরকার যখন রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে, তখন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক সেখানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছেন বলে জানিয়েছেন।

শনিবার সকালে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে মাস্ক লিখেন, “The beams are on,” অর্থাৎ “সংযোগ চালু হয়েছে।”

এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েলের হামলায় পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি হওয়ার পর ইরান সরকার রাজধানী তেহরানে ইন্টারনেট সেবা অস্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করে। ইরানের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় দেশটির সাধারণ মানুষ আন্তর্জাতিক সংবাদ ও তথ্যের উৎস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় স্টারলিংকের মাধ্যমে বিকল্প ইন্টারনেট সংযোগ চালু করেন ইলন মাস্ক।

উল্লেখ্য, স্টারলিংক হলো স্পেসএক্সের মালিকানাধীন একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা, যা পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করতে সক্ষম। সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াশিংটন টাইমস

সম্পর্কিত নিবন্ধ