অন্তর্বর্তী সরকার যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন হয়নি: ফরহাদ মজহার
Published: 25th, April 2025 GMT
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে যেমন প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আমরা মনে করি, এই সরকার আমরা যেমন করে প্রত্যাশা করেছিলাম, তেমন করে হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের তার যে পূর্ণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি সরকার দরকার ছিল, সেটি আমরা পাইনি। না পাওয়ার ফলে আমরা অনেক কিছু নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এবং গণঅভ্যুত্থানে জনগণকে সুফল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছি।
শুক্রবার দুপুরে প্রেস ক্লাবের সামনে ‘শহরের গরিব শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিনা মূল্যে রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিশুদ্ধ পানির’ দাবিতে মানববন্ধন এবং গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে এ আয়োজন করে ভাববৈঠকি, জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর ও গণঅভ্যুত্থান সুরক্ষা মঞ্চ।
ফরহাদ মজহার বলেন, আমরা ড.
তিনি বলেন, সরকারকে প্রথম কাজ করতে হবে জনগণের সুপেয় পানি নিশ্চিত করার। ফলে আমরা এই সরকারকে সর্বোচ্চভাবে সহায়তা করব, যেন ঢাকা শহরে অবিলম্বে মানুষ বিনা পয়সায় সুপেয় পানি পায়। অত্যন্ত কম মূল্য পানি সরবরাহ করুন, যারা গরিব তারা যেন কিনতে পারে এবং একেবারেই যাদের সামর্থ্য নাই বা যারা শ্রমজীবী মানুষ তাদের বিনা পয়সায় পানি সরবরাহ করুন। আমরা মনে করি পানি পাওয়ার অধিকার গরিব মানুষের রয়েছে, পাবলিক প্লেসে বিনা পয়সায় পানি পাওয়ার অধিকার নাগরিকদের রয়েছে। ফলে আমরা অতিসত্বর এটা বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, নদীমাতৃক দেশের সম্পদ পানি। পানি আমাদের অর্থনৈতিক বিকাশের ভিত্তি। ফলে বাংলাদেশে আগামী উন্নয়নের যে নীতি, সে উন্নয়নের নীতিরও গোড়াতে (মূলে) থাকবে পানি। বাংলাদেশ মাত্রই এটা পানিভিত্তিক সংস্কৃতি, নদী ভিত্তিক সংস্কৃতি ফলে পানি আমাদের জীবন রক্ষা করে, প্রতিটি জীবের প্রাণ রক্ষা করে। এই নীতির ভিত্তিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অবিলম্বে একটি পানি কমিশন গঠন করতে হবে এবং জনগণকে সুপেয় পানির নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। এখানে তালবাহানা করার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, এই যে পানির মতো সম্পদ আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন। এই মিস্টি পানির দাম বিভিন্ন দেশে জ্বালানির দামের চেয়েও বেশি, দুধের দামের চেয়েও বেশি। এই সম্পদ সুরক্ষার মধ্য দিয়ে আমরা তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে যেকোনো ধনী দেশের কাতারে পৌঁছাতে পারি। এটা আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ। ফলে সুপ্রিয় পানি যারা নষ্ট করছে, বিষ দিয়ে, টক্সিক রাসায়নিক দ্রব্য নদীতে, সাগরে ফেলে দিয়ে, তাদের ক্রিমিনাল (অপরাধী) হিসেবে গণ্য করতে হবে। তার জন্য অবিলম্বে আমাদের ফৌজদারি আইন দরকার এবং যেসব বিষ আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ, পানি নষ্টের জন্য দায়ী সেই সব বিষ বন্ধ করার নির্বাহী আদেশ আমরা চাই।
মানববন্ধন ও গণসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, রিকশাচালক স্বপন মিয়া, উবিনীগের গবেষক সীমা দাস সীমু, লেখক ও প্রকৌশলী সাদিক মোহাম্মদ আলম, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব প্রীতম দাশ, সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক অ. মেজর আহমেদ ফেরদৌস, অ্যাক্টিভিস্ট জাহিদুল ইসলাম নাহিদ, ছাত্র সমন্বয়ক ফরহাদ হোসেন, গণ আকাঙ্ক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র গণঅভ য ত থ ন ফরহ দ মজহ র আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তরুণ সমাজ দেশপ্রেমে উত্তীর্ণ হয়েছে, বাংলাদেশ উচ্চস্থানে উন্নীত হবে : ডিসি
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যত্থান তারুণ্যের বীরত্বে গাঁথা, ছাত্র-জনতার দেশপ্রেমের এক মহাকাব্য।
সেদিন আমাদের এই তরুণ ছাত্র -জনতা একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ও নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যেভাবে দেশপ্রেমী উজ্জীবিত হয়ে নিজের রক্ত ঢেলে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করেছে সেজন্য আমি তাদের প্রতি জানাচ্ছি অসীম কৃতজ্ঞতা।
আমরা বিশ্বাস করি আমাদের তরুণ সমাজের যে দেশপ্রেম, সেই দেশপ্রেমের শক্তিতে আমরা আমাদের বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাব।
জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আমাদের তরুণ সমাজ যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে চেয়েছে আমরা সকলে মিলে সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই। যেখানে সকলের অধিকার নিশ্চিত হবে। আমরা বিশ্বাস করি আমাদের সেই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আগামী তরুণ সমাজ আমাদের পাশে থাকবে।
আমরা যে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে সেই চ্যালেঞ্জগুলো আমরা আপনাদের সবাইকে নিয়ে মোকাবেলা করতে চাই। আর আপনারা যে স্বপ্ন দেখেছেন আমরা সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই।
আমি বিশ্বাস করি আমাদের তরুণ সমাজ দেশপ্রেমে উত্তীর্ণ হয়েছে তারা আগামীতেই দেশ পরিচালনা করবে তাদের হাতে দেশ নিরাপদ হবে। বাংলাদেশ অন্তত উচ্চস্থানে উন্নীত হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন, জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইব্রাহিম হোসেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় সূরা পরিষদের সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক নিরব রায়হান।
বক্তব্য শেষে ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।