অর্থনীতি পড়তে গিয়ে সিনেমার নেশা পেয়ে বসে...
Published: 28th, April 2025 GMT
অর্থনীতি পড়তে ভারতের পুনেতে গিয়েছিলেন অমিতাভ রেজা। ক্লাসরুমে মন বসেনি। বরং সময় পেলেই চলচ্চিত্র বিভাগের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে আর সিনেমা দেখে সময় কাটাতেন। এভাবেই সিনেমার নেশা পেয়ে বসে। প্রচুর সিনেমা দেখে তাঁর মধ্যে নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন জাগে। সিনেমার পোকা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরে নির্মাণে জড়িয়ে পড়েন অমিতাভ রেজা। ২০০০ সালে নির্মাণ করেন প্রথম টেলিভিশন ফিকশন। এর পর থেকেই শুরু। গত ২৫ বছরে এ নির্মাতার হাত দিয়ে দর্শক পেয়েছেন অসংখ্য বিজ্ঞাপনচিত্র, টেলিভিশন নাটক ও সিনেমা।
মাছরাঙা প্রোডাকশনের প্রযোজনায় অমিতাভের প্রথম টেলিভিশন ফিকশন ‘হাওয়াঘর’। পুত্রশোকে স্তব্ধ এক নারীর অতীতযাত্রার গল্প। অমিতাভ রেজার রচনায়, আকরাম খান ও অমিতাভ রেজা চৌধুরীর চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এটি নির্মিত হয়। ২৫ বছর আগের স্মৃতি মনে করে নস্টালজিক হয়ে ওঠেন অমিতাভ, ‘কত আগের স্মৃতি, প্রথমবার নির্মাতা হিসেবে ক্যামেরার পেছনে দাঁড়ানো। সামান্য বাজেট। মানুষ এখনো যে নাটকটির কথা স্মরণ করেন, মনে হলেই আপ্লুত হই। সেই সময়ের বেটা ক্যামেরায় এই টিভি ফিকশনটির চিত্রগ্রহণ করেছিলেন অপু রোজারিও, সম্পাদনায় ছিলেন সামির আহমেদ, শব্দ করেছিলেন রতন পাল, শিল্প নির্দেশনায় ছিলেন ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়, পোশাক পরিকল্পনায় আফসানা মিমি আর সংগীত পরিচালনায় সায়ান চৌধুরী অর্ণব। কাজটির কথা মনে হলেই স্মৃতিকাতর হয়ে যাই।’
অমিতাভ রেজা চৌধুরী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দোয়ার ফজিলত ও আদব
দোয়া শব্দের আভিধানিক অর্থ আহ্বান করা বা প্রার্থনা করা। পরিভাষায় দোয়া হলো কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার রোধে মহান আল্লাহকে ডাকা এবং তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
প্রিয় নবীজি (সা.) বলেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (বুখারি ও মুসলিম) ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৩)
আল–কোরআনের বর্ণনা, ‘আর তোমাদের রব বলেন, “তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের জন্য সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।”’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬০)
মুমিনের পরিচয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের পার্শ্বদেশ শয্যা থেকে আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। কেউ জানে না তার কৃতকর্মের জন্য তাদের কী কী চোখজুড়ানো প্রতিদান লুকায়িত আছে।’ (সুরা-৩২ সাজদা, আয়াত: ১৬-১৭)
‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয় আমি অতি নিকটে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দেই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ইমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎকাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১)দোয়া ও আমল কবুল হওয়ার মূল শর্ত হলো ইখলাস। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। অতএব, তাঁকে ডাকো খাঁটি ইবাদতের মাধ্যমে।’ (সুরা-৪০ মুমিন, আয়াত: ৬৬)
দোয়া কবুলের অন্যতম শর্ত হলো হালাল উপার্জন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে রাসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার করো এবং সৎ কাজ করো; তোমরা যা করো, সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৫১) ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা পাক পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার করো, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৭৩)
নবীজি (সা.) বলেন, ‘উষ্কখুষ্ক ধুলায় ধূসরিত অবস্থায় দীর্ঘ সফরকারী একজন যে স্বীয় দুই হাত আকাশের দিকে প্রসারিত করে বলে, “হে প্রভু! হে প্রভু!” অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম এবং সে হারাম দ্বারা লালিত, তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে?’ (মুসলিম: ১৬৮৬)
নির্জনে নীরবে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাকো কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫)। ‘পৃথিবীকে কুসংস্কারমুক্ত ও ঠিক করার পর তাতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করো না। তাকে আহ্বান করো ভয় ও আশাসহকারে। নিশ্চয় আল্লাহর করুণা সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৫৫-৫৬)
দোয়ার আদব হলো দৃঢ়সংকল্প ও আকুতির সঙ্গে দোয়া করা, দোয়া কবুলে প্রবল আশাবাদী হওয়া।
হজরত জাকারিয়া (আ.) তাঁর দোয়ায় বলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনার কাছে দোয়া করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪) হজরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন, ‘আশা করি, আমার প্রতিপালকের নিকট দোয়া করে আমি বিফল হব না।’ (সুরা-১৯ মারিয়াম, আয়াত: ৪৮)
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]