মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল
Published: 29th, April 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার এলাকায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আগামীকাল বুধবার শেষ হচ্ছে। ওই দিন রাত ১২টার পর থেকে জেলেরা নদীতে জাটকা ছাড়া সব ধরনের মাছ ধরতে পারবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।
এর আগে গত ১ মার্চ থেকে দুই মাস মেঘনায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। জাটকা রক্ষায় অভয়াশ্রম নিরাপদ করতে ওই এলাকায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। স্থানীয় মৎস্য বিভাগ জানায়, গত ফেব্রুয়ারিতে জারি করা ওই পরিপত্রে জাটকা বা ইলিশ ধরা ছাড়াও এগুলো বিক্রি, মজুত, পরিবহনও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় জেলেরা সব মাছ ধরতে পারবেন। তবে জাটকা ধরার নিষেধাজ্ঞা আগামী জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ ছাড়া মেঘনায় অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহারও নিষিদ্ধ থাকছে।
বিজয় কুমার দাস দাবি করেন, মতলব উত্তর উপজেলার সীমানায় গত ১ মার্চ থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মোট ১৮০টি অভিযান চালানো হয়েছে। এসব অভিযানে ১৭ টন জাটকা, ১৪ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ৭টি নৌকা জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করা হয় ১৭ জেলের। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জাটকা রক্ষা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত তাঁরা এ সহায়তা পাবেন।
নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলেরা। ষাটনল এলাকার জেলে রিপন বর্মণ ও ফুলচান বর্মণ বলেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। আর্থিক সমস্যায় গত দুই মাস খুব কষ্টে কেটেছে। আগামীকাল রাত ১২টার পর তাঁরা আবার মেঘনায় মাছ ধরা শুরু করবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণের কিস্তি পরিশোধ নিয়ে বিরোধ, চাচার মারধরে ভাতিজার মৃত্যুর অভিযোগ
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ব্রাহ্মণচক গ্রামে চাচার কিল–ঘুষি ও মারধরে ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মাইনউদ্দিন সরকার (৪৫) উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের রুহুল আমিন সরকারের ছেলে। তিনি পেশায় বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন। অভিযুক্ত মো. ফারুক (৫০) তাঁর চাচা। ঘটনার পর পুলিশ ফারুকের স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে যৌথভাবে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা নিয়ে চাচা–ভাতিজার মধ্যে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।
একই সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি এনজিও থেকে কয়েক মাস আগে ফারুক ও মাইনউদ্দিন যৌথভাবে এক লাখ টাকা ঋণ নেন। ঋণের কিস্তি সমানভাবে পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। চলতি মাসের কিস্তির ১৫ হাজার টাকা ফারুকের মাধ্যমে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাইনউদ্দিন নিজেই ওই টাকা জমা দেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। আগেও তাঁদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল। আজ সকালে কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুজনের মধ্যে আবারও কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ফারুক ভাতিজা মাইনউদ্দিনের মাথা, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল–ঘুষি মারেন। এতে মাইনউদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অচেতন হয়ে যান। আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ফারুক পালিয়ে যান।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মাইনউদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহত মাইনউদ্দিনের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন বলেন, মো. ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। তিনি নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে কিল–ঘুষি মেরে ও মারধর করে তাঁর চাচাতো ভাইকে খুন করেন ফারুক।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ফারুকের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী মাফিয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে। এটি হত্যাকাণ্ড বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ বা জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে।