মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া মর্টার শেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। এ সময় প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মর্টার শেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে আহত হয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। মারা গেছে তিনটি গরু। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউপির আড়ালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয়রা জানান, মর্টার শেলটি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়। তবে বিস্ফোরণের তীব্রতায় অর্ধশত বাড়িঘর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আশিক নামে এক চাষির তিনটি গরু মারা গেছে।  

চা দোকানি আব্দুর রশিদ বলেন, মর্টার শেলের বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, প্রায় তিনশ’ মিটার দূরে আমার দোকানের প্রায় সবকিছু উড়ে যায়। শুধু আমার নয় আশপাশের অন্তত ৫০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মসজিদ ও বিল্ডিংয়ে ফাটল ধরেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা তানিয়া আক্তার বলেন, বিস্ফোরণের সময় মনে হয়েছে, ভূমিকম্প হচ্ছে। আশপাশের বাড়িঘর কেঁপে ওঠে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।  

এদিকে, এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা নিরাপত্তা বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাদের অভিযোগ, বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যদের মর্টার শেলটি দূরে নিরাপদ কোনো স্থানে বিস্ফোরণ না করে গ্রামেই নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করায় অর্ধশত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, সেনাবাহিনীর বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা উদ্ধার করা মর্টার শেলটি নিরাপদভাবে বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করেন। তবে শেলের স্প্রিন্টারের ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। ঘটনাস্থলেই তিনটি গরু মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, সোমবার আড়ালিয়া গ্রামের হানিফ মিয়ার জমির মাটি কাটার সময় অবিস্ফোরিত মর্টার শেলটি পাওয়া যায়। এদিন নিজেদের হেফাজতে রাখার পর তারা বুঝতে পারেন, এটি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অবিস্ফোরিত মর্টার শেল। পরে গ্রামবাসী বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানায়।


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ