বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা মুসলিম এবং হিন্দু এক বৃত্তে দুটি ফুলের মতো। বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে, অথচ এদেশে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে একসময় গভীর বন্ধন ছিল।

বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত শ্রী শ্রী কালীবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সন্ধ্যা শুরু হতো শাঁখ ও ঘণ্টার ধ্বনিতে। আমি নিজেও পূজার প্রসাদ খেয়েছি বহুবার। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এক সময় আমাকে মন্দির বা সনাতন ধর্মের অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়েছে, যা আমার জন্য দুঃখজনক।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে অবস্থানকালে অনেকে প্রশ্ন করত— মুসলমান হয়ে আমরা কেন ভারতে এসেছি? তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই বলতেন, আমরা মানুষকে হিন্দু-মুসলমান হিসেবে দেখি না। আমাদের পরিচয়— আমরা বাংলাদেশি।

সামাজিক বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কে হিন্দু, কে মুসলমান— এসব ভুলে নতুন ধারার বাংলাদেশ গড়তে হলে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। রাজনীতি বা ধর্ম কোনোটিই মানুষের মূল পরিচয় নয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকেই বলেন, আমার মধ্যে রবীন্দ্রনাথের প্রতি একটা আলাদা প্রীতি রয়েছে। আমি তাকে কেবল কবি হিসেবে নয়, একজন দার্শনিক হিসেবেও দেখি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়, তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এগুলো ব্যবহার করি না।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট বলরাম গুহ ঠাকুরতা, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট সভাপতি শ্রী মনোরঞ্জন সিংহ, শ্রী শ্রী কালীবাড়ি মন্দির কমিটি সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র মল্লিক স্থানীয় বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। পরের তিনি সেন্ড মাদার তেরেসার স্কুলে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আবৃতি করে শুনান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র অন ষ ঠ ন ম সলম ন ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতির মৃত্যু 

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত মসজিদ কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫২) ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। প্রায় আড়াই মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার (১৪ জুন) তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় শনিবার (১৪ জুন) রাতে চর আবাবিল ইউনিয়নের উদমারা এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং সদস্য সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে অভিযুক্ত রহিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কিশোর গ্যাং সদস্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আরো পড়ুন:

পরকীয়ার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিষপান, মারা গেলেন স্বামী

ফুলকুমার নদে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু 

নিহতের ভাই মো. জসিম উদ্দিন জানান, দক্ষিণ চর আবাবিলের উদমারা এলাকায় জুয়ার আসর ও মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় ৩ এপ্রিল স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সদর হাসপাতালে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর শনিবার (১৪ জুন) তিনি মারা যান।

পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীর আলম উদমারা সাহাদু উল্যা মাঝিবাড়ি জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মসজিদের আশপাশে মাদক ও জুয়া বন্ধে তার ভূমিকার কারণে কিশোর গ্যাংয়ের বিরাগভাজন হন তিনি। হামলায় নেতৃত্ব দেন কিশোর গ্যাং সদস্য জুবায়ের, বাহার ও সাব্বির।

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী রাজিয়া বেগম ৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে রায়পুর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয় এবং ১০ এপ্রিল মামলা রুজু হয়।

এর আগে একই এলাকায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলায় সুদেব শীল মনু নামে একজন নিহত হন। এ সব ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসী একাধিকবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করলেও থামেনি কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। 
 

ঢাকা/লিটন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ