না’গঞ্জে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের আড়াই কোটি টাকার অনুদান ও সঞ্চয়পত্র প্রদান
Published: 30th, April 2025 GMT
জুলাই গণঅভ্যত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন জুলাই যোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় প্রদত্ত আর্থিক অনুদানের চেক ও তিন শহীদ পরিবারের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ আর্থিক অনুদানের চেক ও সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো.
এ সময় ৪ জন শহিদ পরিবারের সদস্যের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। পাশাপাশি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির ২১২ জন যোদ্ধাকে এককালীন ১ লাখ টাকা করে অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের অনুপ্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের সাহসিকতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি নতুন, উদ্ভাসিত বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী ও সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।
এদিকে এ অনুষ্ঠানটি শুধু অনুদান বিতরণ নয়, বরং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান জানানোর এক অনবদ্য প্রয়াস হয়ে উঠেছিল।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ জ ল ই গণঅভ য ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন পর ব র অন দ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় জুলাই হত্যার বিচার ও শহীদ পরিবারের পুনর্বাসনের আকুতি জানানো হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
জাবি ছাত্রদলের ১৫ নেতাকে অব্যাহতি
এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও ১০ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
এসব শহীদরা হলেন, আলিফ আহম্মদ সিয়াম, শ্রাবণ গাজী, শাইখ আস-হা-বুল ইয়ামিন, নাফিসা হোসেন মারওয়া, সাফওয়ান আখতার সদ্য, মো. কুরমান শেখ, ছায়াদ মাহমুদ খান, নিশান খান, আস-সাবুর ও সুজন মিয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপর শহীদদের স্বরণে একটি ডকুমেন্টারি ভিডিও দেখানো হয়। পরে শহীদদের স্বীকৃতি স্বরূপ সংবর্ধনা, সনদ ও স্মারক প্রদান করা হয়।
শহীদ আলিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মো. বুলবুল কবির বলেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের হারিয়েছি ১ বছর হতে চললো। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচার এখনো নিশ্চিত হয়নি। আপনারা শহীদদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ চেয়ারে বসেছেন। ফ্যাসিস্টদের বিচার নিশ্চিত করুন।”
শহীদ শ্রাবণ গাজীর পিতা মো. মান্নান গাজী বলেন, “আমাদের সন্তানরা তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু হাসাপাতালে যারা আহত আছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।”
শহীদ নাফিসা হোসেনের মামা মো. হজরত আলী নাফিসার শহীদ হওয়ার বর্ণনা করতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি জুলাই শহীদদের পরিবারের পুর্নগঠন এবং শহীদদের নামে হল, সড়ক বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণের প্রস্তাব করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, “জুলাই আন্দোলনের স্বরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে যেসব দাবি করা হয়েছে, আমি প্রশাসনের একজন হয়ে তা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তুলব।”
তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের এখানে যেহেতু কিন্ডারগার্টেন, স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের পড়াশোনার সুযোগ প্রদান করা হোক। এ বিষয়ে আমরা সিন্ডিকেটে আলোচনা করব। একইসঙ্গে জুলাই শহীদদের পরিবারের সদস্যদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
এর আগে, সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে অদম্য-২৪ স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন শিক্ষকরা।
গত ১৪ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বরণ ও ধারণ করতে মাসব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী