যারা রাজনীতি করি, তারাই হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করেছি: মির্জা ফখরুল
Published: 30th, April 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “আমরা যারা রাজনীতি করি, তারা কাউকে নৌকা আর কাউকে ধানের শীষে ভাগ করেছি। হিন্দু-মুসলমানে ভাগ করেছি। এ ভাগ খুব ভয়ঙ্কর। আমরা কখনো হিন্দু-মুসলমান ভাগ হব না। আপনার ভোট আপনি দেবেন, যাকে খুশি তাকে দেবেন।”
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁওয়ের দেবীপুর মুন্সিরহাট এলাকায় দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টানদের ভাগ করে রাখা হয়েছে, অথচ আমরা যুগের পর যুগ একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছি। গ্রামে একে-অপরের বিপদে এগিয়ে আসার সময় হিন্দু-মুসলমান দেখি না। ভাগ হলে বছরের পর বছর অশান্তি লেগে থাকবে।”
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
আসুন সবাই ড.
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা তখনো মিলেমিশে থেকেছি। শান্তি নষ্ট করার জন্য সে সময় উপরে যারা ছিল, তারা আমাদের মধ্যে বিবাদ বাঁধিয়ে দিত। আমরা বিভাজনের দিকে যাব না।”
এলাকাবাসীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, থাকব। নির্বাচনে হারি অথবা জিতি আপনাদের সঙ্গেই থাকব। আমারা হিন্দু-মুসলিম মিলে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব। সবাই একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলব।”
তাড়াতাড়ি সংস্কার শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অনুরোধ করেছেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, “প্রফেসর ইউনূস দয়া করে তাড়াতাড়ি সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অনেক ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনাগুলো দেশের আরো ক্ষতি করবে। দেরি না করে তাড়াতাড়ি নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ম সলম ন ভ গ কর ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।