পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির পর্যটনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কাপ্তাই হ্রদ। একটা সময় এ হ্রদকে ঘিরে রাঙামাটিতে পর্যটকদের বেশি ভিড় জমলেও পরে তাতে ভাটা পড়ে। খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্রের প্রতি তৈরি হয় পর্যটকদের বাড়তি মনোযোগ, আগ্রহ ও উদ্দীপনা। তবে সময়ের ব্যবধানে আবারও চাঙা হয়ে উঠেছে রাঙামাটির পর্যটন। কাপ্তাই হ্রদে গড়ে ওঠা নিত্যনতুন রিসোর্ট–কটেজ পর্যটকদের আবারও আকৃষ্ট করছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, কাপ্তাই হ্রদে এই রিসোর্ট–কটেজগুলো কতটা পরিবেশ সুরক্ষার দিকে মনোযোগী হচ্ছে? 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, কাপ্তাই হ্রদে অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে, দ্বীপ বলা হলেও এসব মূলত ডুবে থাকা ছোট ছোট পাহাড়-টিলা। এসব দ্বীপে গড়ে উঠছে পর্যটকদের জন্য রিসোর্ট-রেস্তোরাঁ। এরই মধ্যে ২৫ থেকে ৩০টি রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। একটা সময় রাঙামাটি শহরে হোটেল–মোটেলের আধিক্য ছিল। এখন হ্রদের বিচ্ছিন্ন দ্বীপগুলোতে গড়ে ওঠা রিসোর্ট–কটেজ ছাড়াও হ্রদে রাত কাটানোর জন্য রয়েছে হাউসবোট। দ্বীপের রিসোর্টগুলোতে রাখা হয়েছে তারকা মানের হোটেলের মতোই আরামদায়ক কক্ষ। পর্যটকদের জন্য রয়েছে রকমারি পাহাড়ি খাবারের ব্যবস্থা। কাপ্তাই হ্রদের তরতাজা মাছ তো আছেই। এ ছাড়া নানা বিনোদনের উপকরণ রয়েছে, যার কারণে পর্যটকেরাও ছুটে আসছেন।

রিসোর্ট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক বছরে রাঙামাটিতে পর্যটনে যত উন্নয়ন কিংবা বিনিয়োগ হয়েছে, সব কাপ্তাই হ্রদকেন্দ্রিক। এখন প্রতিটি দ্বীপ ও পাড়ের ভিউ পয়েন্টের রেস্টুরেন্ট-রিসোর্ট-কটেজ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে পর্যটনে বেসরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগ হলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে। পর্যটন খাতে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন। তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা অন্তত সরকারিভাবে নেওয়া হলে পর্যটন খাতের আরও উন্নয়ন হতো।

রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদে রিসোর্ট–কটেজ গড়ে ওঠা পার্বত্য জেলাটির পর্যটনের জন্য নতুন প্রবণতা। ফলে হ্রদের পরিবেশের দিকে নজর দেওয়াটা জরুরি। যথাযথ অনুমতি নিয়ে ও নিয়ম মেনে রিসোর্ট–কটেজগুলো করা হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন–সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। যত্রতত্র রিসোর্ট–কটেজ গড়ে তুললে কাপ্তাই হ্রদের পরিবেশের ওপর কতটা প্রভাব পড়বে, সে বিষয়টিও বিবেচনায় আনতে হবে। ইতিমধ্যে রাঙামাটির জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র সাজেক ভ্যালি অতিরিক্ত কটেজ-রিসোর্টে ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। কক্সবাজারের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি ঘটেছে। খুলনায় সুন্দরবনের নিকটে রিসোর্ট গড়ে তোলায় অনিয়মের বিষয়টিও প্রথম আলোর প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে।

পর্যটনের ক্ষেত্রে সরকার যেমন পৃষ্ঠপোষকতা করবে, একইভাবে এটিও নিশ্চিত করতে হবে অপরিকল্পিত পর্যটনের জন্য যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয়। পাশাপাশি পর্যটকের নিরাপত্তায় সুরক্ষাজনিত যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। 

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য পর ব শ ব ষয়ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে গোসলরত নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণ করার দায়ে রুবেল (৩০) নামে এক কনটেন্ট ক্রিয়েটরকে এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসিন সাদীক। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রুবেল বরগুনা সদর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি মুদি দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি কনটেন্ট তৈরি করেন।

সৈকতের ফটোগ্রাফার আরিফ মিয়া  বলেন, ‘‘রুবেল নারীদের গোসলের ভিডিও করছিলেন। প্রতিবাদ করলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বিষয়টি দেখত পেয়ে তাকে আটক করি।’’

অপর ফটোগ্রাফার রাসেল বলেন, “রুবেলের মোবাইল চেক করে দেখি, অনেক ভিডিও। সঙ্গে সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশকে খবর দেই। পরে তাদের কাছে সোপর্দ করি।’’

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসিন সাদেক বলেন, “অনুমতি ছাড়া নারী পর্যটকদের ভিডিও ধারণের দায়ে রুবেলকে এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের অপরাধে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৈকতে নারী পর্যটকদের গোসলের ভিডিও ধারণ, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের কারাদণ্ড