কয়েক দশক ধরে সোনার মহাজাগতিক উৎস নির্ধারণ করার চেষ্টা করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। আর্কাইভ করা মহাকাশ মিশনের নথিতে পাওয়া একটি সংকেতের ওপর ভিত্তি করে নতুন গবেষণা সেই সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ম্যাগনেটার বা উচ্চ চৌম্বকীয় নিউট্রন তারা হতে পারে এই উৎস।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ১ হাজার ৩৮০ কোটি বছর আগে বিগ ব্যাংয়ের পর মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়। প্রথম দিকে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের মতো হালকা মৌল, এমনকি অল্প পরিমাণে লিথিয়ামও বিদ্যমান ছিল। বিস্ফোরিত নক্ষত্রগুলো লোহার মতো ভারী মৌল নির্গত করে। এটি নবজাতক নক্ষত্র ও গ্রহগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। মহাবিশ্বজুড়ে সোনার (যা লোহার চেয়ে ভারী) উপস্থিতি জ্যোতির্পদার্থবিদদের কাছে একটি রহস্য তৈরি করেছে।

দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটার্সে প্রকাশিত গবেষণার প্রধান লেখক অনিরুদ্ধ প্যাটেল। তিনি নিউইয়র্ক সিটির কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার পিএইচডির ছাত্রও। তিনি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মহাবিশ্বে জটিল পদার্থের উৎপত্তির নিরিখে এটি একটি মৌলিক প্রশ্ন। এটি একটি মজার ধাঁধাও। এর এখনও সমাধান করা যায়নি।’ তিনি জানান, আগে সোনার মহাজাগতিক উৎপাদন কেবল নিউট্রন তারার সংঘর্ষের সঙ্গে যুক্ত ছিল।

২০১৭ সালে দুটি নিউট্রন তারার মধ্যে সংঘর্ষ পর্যবেক্ষণ করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই সংঘর্ষ স্থান-কালে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নামে পরিচিত ঢেউ এবং সেই সঙ্গে গামারশ্মি বিস্ফোরণ থেকে আলো নির্গত করেছিল। কিলো নোভা নামে পরিচিত এ সংঘর্ষের ঘটনাটি সোনা, প্লাটিনাম ও সিসার মতো ভারী মৌলও তৈরি করেছিল। কিলো নোভাকে মহাকাশে ‘সোনার খনি’র সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে।

লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক এবং গবেষণাটির সহলেখক জ্যোতির্পদার্থবিদ এরিক বার্নস বলেন, ‘বেশির ভাগ নিউট্রন তারার সংযুক্তি গত কয়েকশ কোটি বছরে ঘটেছে। কিন্তু নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া ২০ বছরের পুরোনো নথি নতুন তথ্য হাজির করছে। এগুলোর পাঠোদ্ধার আগে করা যায়নি। এগুলো ইঙ্গিত দেয়, অনেক আগে গঠিত ম্যাগনেটার থেকে আসা শিখাগুলো মহাবিশ্বের প্রারম্ভে সোনা তৈরির অন্য একটি পথ খুলে দিতে পারে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বর ণ পদ র থ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।

এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”

তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। 

এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ