একবার মনে হচ্ছিল রাজস্থান রয়্যালস জিতবে, তো পর মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল জিতবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। এই মনে হচ্ছিল নায়ক হবেন আন্দ্রে রাসেল, তো একটু পরেই মনে হচ্ছিল টানা ছয় ছক্কা মারা রিয়ান পরাগই হবেন নায়ক। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচের ভাগ্য শেষ পর্যন্ত হাসল কলকাতার দিকে তাকিয়েই। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার শেষ বলে গড়ানো যে ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ১ রানে জিতে প্লে-অফ খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল কলকাতা।

ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ২২ রান দরকার ছিল রাজস্থানের। ইডেন গার্ডেনে শুভম দুবে প্রায় জিতিয়েই দিয়েছিলেন দলকে। বৈভব অরোরার করা ওভারের প্রথম দুই বলে জফরা আর্চার ডাবল ও সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দুবেকে। পরের তিন বলে ছক্কা-চার-ছক্কায় ১৬ রান তুলে শেষ বলে হিসাবটাকে ৩ রানে নামিয়ে আনেন দুবে। ওই বলে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান আর্চার। ফল, কলকাতার ১ রানের জয়। আর এই জয়ে ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে ওঠার লড়াইয়ে ভালোভাবেই টিকে থাকল কলকাতা।

টসে জিতে ব্যাট করে কলকাতা করে ৪ উইকেটে ২০৬ রান। এই রানের ৮৫-ই এসেছে শেষ ৫ ওভারে, শেষ ৩ ওভারে ৫৭ রান। আন্দ্রে রাসেল ও রিংকু সিংয়ের তাণ্ডবে রাজস্থানের বোলাররা খেই হারিয়েছিলেন। প্রথম ৯ বলে ২ রান করা রাসেল পরের ১৬ বলে করেছেন ৫৫ রান। ৬১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে অংকৃশ রঘুবংশীকে দর্শক বানিয়ে রাখা রাসেল ২৫ বলে ৫৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। এবারের আইপিএলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডারের এটিই প্রথম ফিফটি। ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন রাসেল। রাজবংশীর বিদায়ের পর উইকেটে আসা রিংকু ১ চার ও ২ ছক্কায় ৬ বলে করেছেন ১৯ রান।

রান দাঁড়ায় ইনিংসের চতুর্থ বলে বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশীকে হারানো রাজস্থান দ্বিতীয় ওভারে হারায় ক্রুনাল সিং রাঠোরকে। এরপর রিয়ান পরাগকে নিয়ে যশস্বী জয়সোয়ালের ৩১ বলে ৫৮ রানের জুটি। মঈন আলী জয়সোয়ালকে (২১ বলে ৩৪) ফেরানোর পর ৫ রানের মধ্যে বরুণ চক্রবর্তী ফিরিয়ে দেন ধ্রুব জুরেল ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে।

এরপর রাজস্থান অধিনায়ক পরাগ শিমরান হেটমায়ারকে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন দলকে। ১৩ ও ১৪তম ওভার মিলিয়ে টানা ছয়টি বৈধ বলে ছক্কা মেরে ইডেনের দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন পরাগ। তবে ১৬তম ওভারে হেটমায়ারের বিদায়ের পর জয় ও সেঞ্চুরির ‘ডাবল’ চাপ নিতে পারেননি পরাগ। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন রাজস্থান অধিনায়ক। ৪৫ বলে ৯৫ রান করার পথে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কা মারা পরাগের বিদায়ের পর মনে হচ্ছিল এখন শুধু ব্যবধানই কমাতে খেলবে রাজস্থান। কিন্তু ইমপ্যাক্ট হিসেবে নামা শুভম দুবে ভাবলেন অন্যরকম, খেললেন ১৪ বলে ২৫ রানের ইনিংস। তবে শেষ পর্যন্ত এত কাছে তবু এত দূর অনুভূতি নিয়েই ফিরতে হলো তাঁকে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা

প্রতিদিনের মতো কাজ শেষে গতকাল সোমবার বাসায় ফিরছিলেন নাজমা বেগম। ঢাকার টঙ্গী এলাকায় থাকেন তিনি। পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে হঠাৎ ফোন করে জানান, তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। দ্রুত ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন নাজমা। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি ভিডিও দেখান নাজমাকে। সে ভিডিওতে দেখতে পান, তাঁর ১০ দিন ধরে নিখোঁজ ছেলে আবদুল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।

ছেলের খোঁজ পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ছুটে আসেন তিনি। রেলস্টেশন থেকে সরাসরি চলে আসেন চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে। এখানেই ৮ দিন ধরে ভর্তি আবদুল্লাহ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৮ সেপ্টেম্বর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে হাসপাতালে আনা হয়। সে সময় তার নাম-ঠিকানা কিছুই জানা যায়নি। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবেই হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে নেওয়া হয় তাকে। পরদিন তার অস্ত্রোপচার হয়। গত শনিবার আবদুল্লাহর জ্ঞান ফেরে। এরপর নিজের ও বাবা-মায়ের নাম আর বাসার ঠিকানা জানায় সে।

চিকিৎসকেরা সেই সূত্রে ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানাভাবে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ফেসবুকে আবদুল্লাহর ছবি দিয়ে খোঁজ চাওয়া হয় বাবা-মায়ের। সেই ছবি পরিচিতদের মাধ্যমে দেখেন নাজমা বেগম। এরপর ছুটে আসেন চট্টগ্রামে। হাসপাতালে এসেই নার্সদের সহায়তায় যান নিউরোসার্জারি বিভাগে। সেখানে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ)চিকিৎসাধীন আবদুল্লাহকে দেখেন।

আজ বিকেলে হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের সামনে কথা হয় আবদুল্লাহর মা নাজমা বেগমের সঙ্গে। সকালেই চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন তিনি। জানালেন, তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আবদুল্লাহ সবার বড়। ছোট মেয়ের বয়স পাঁচ ও আরেক ছেলের বয়স দুই। আবদুল্লাহ সুস্থ আছে জেনে স্বস্তি পেলেও দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। কারণ, এটিই প্রথমবার নয়, এর আগেও কয়েকবার ঘর থেকে কিছু না বলে বেরিয়ে যায় সে।

নাজমা বেগম বলেন, প্রায়ই আবদুল্লাহ ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। এদিক–সেদিক চলে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এর আগেও ঢাকার আশপাশে এদিক-সেদিক চলে গিয়েছিল সে। ৬ সেপ্টেম্বর সে ভাত খাওয়া থেকে উঠে হঠাৎ চলে যায়। সে ফিরে আসবে এই আশায় থানায় যাননি। কিন্তু ১০ দিন হয়ে যাওয়ায় এদিক–সেদিক খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। ঢাকায় বিভিন্ন স্টেশনে ছেলের খোঁজে গেছেন বলে জানান নাজমা।

চমেক হাসপাতালে চিকিৎসকেরা আবদুল্লাহর বরাত দিয়ে জানান, বাসা থেকে বেরিয়ে সে কক্সবাজার যাচ্ছিল। পথে চট্টগ্রামে ট্রেন থামলে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ হয়ে উঠছে সে।

চিকিৎসকেরা জানান, আবদুল্লাহকে যখন আনা হয় তার মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তার মাথার এক পাশের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে পড়ার কারণে মাথায় আঘাত লাগে। হাড়ের কিছু অংশ মস্তিষ্কের ভেতরে গেঁথে যায়। অস্ত্রোপচারও সফল হয়েছে। তবে জ্ঞান না ফেরায় তার পরিচয় জানা যায়নি। জ্ঞান ফেরার পর তার তথ্য নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।

শুরু থেকে আবদুল্লাহর অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মু. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, ‘তার হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চলে গিয়েছিল। অস্ত্রোপচারের পর স্বাভাবিকভাবে সেটি জোড়া দেওয়া হয়েছে। এখন সে পুরোপুরি সুস্থ। তাকে আমরা আজ-কালের মধ্যে ডিসচার্জ করে দেব। শিশুকে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীর ব্যাটে শ্রীলঙ্কাকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দিল আফগানিস্তান
  • সত্যি কি ‘মণিহার’ বন্ধ হচ্ছে
  • চট্টগ্রাম চেম্বারে ‘পরিবারতন্ত্র’ পুনর্বহালের অভিযোগ
  • পাকিস্তানি খেলোয়াড়ের থ্রো লাগল আম্পায়ারের মাথায়, এরপর যা হলো
  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা