চট করে আইএমএফের শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করব না: ইতালিতে অর্থ উপদেষ্টা
Published: 4th, May 2025 GMT
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কঠিন শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করবে না বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘চট করে আমরা আইএমএফের শর্ত মেনে নিয়ে কিছুই করব না। কারণ, আইএমএফের অর্থ ছাড়াই ভালো করছি। আমরা এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা নিইনি।’
ইতালির মিলানে আজ ৪ মে রোববার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৮তম বার্ষিক বৈঠক শুরু হয়, যা চলবে ৭ মে পর্যন্ত। এই বৈঠকে যোগ দিয়ে সংস্থাটির দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইংমিং ইয়াংয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি আকারে মিলানে অর্থ উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্যের ভিডিও আজ গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আইএমএফের ঋণের কিস্তি দেরি হওয়ার ঘটনা এডিবির বাজেট সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, এটা ছিল অর্থ উপদেষ্টার কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন। জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজেট সহায়তার বিষয় আইএমএফ দেখে। সংস্থাটি সামষ্টিক অর্থনীতির বিষয় জানতে চেয়েছে। আলোচনা চলছে, আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে। আইএমএফ বলেছে, অর্থনীতিতে ভালো করার বিষয়ে একটা চিঠি পেলে তারা আশ্বস্ত হতো। আমরা বলেছি যে তা দেওয়া হবে, তবে এখনই নয়।’
এডিবি ও আইএমএফের ঋণ সহায়তা না পেলেও বাস্তবসম্মত বাজেট দেওয়া যাবে বলে মনে করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রশংসা করেছে এডিবি। সংস্থাটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাদের অর্থনীতির অবস্থা জানতে চেয়েছিলেন। বলেছি, অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। ব্যাংক খাতে অনেক সংস্কার হয়েছে। বাণিজ্য বিষয়ে বেসরকারি খাতে একটি সম্মেলন হবে। এডিবি বলেছে, বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের জন্য ঢাকায় একটা কর্মশালার আয়োজন করতে।’
এডিবি আইএমএফের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিল, এ কথা উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বলেছি আইএমএফের সঙ্গে এখনো আলোচনা চলছে।’
অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিয়ে এডিবির সন্তুষ্টির বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এডিবি বলেছে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ভালো করছে। আমাদের অর্জন নিয়ে তারা খুশি। বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে এডিবি খেয়াল রাখছে। বলেছে, তারা আমাদের প্রকল্প সহায়তাসহ ব্যাংক খাত ও এনবিআরের সংস্কারে সহায়তা করবে।’
কিন্তু প্রকল্প সহায়তার চেয়ে বাজেট সহায়তা বেশি দরকার বাংলাদেশের, এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা নমনীয় শর্তে এডিবির কাছে বাজেট সহায়তা চেয়েছি। তারা বলেছে, এ–বিষয়ক তাদের তহবিল সীমিত। তারপরও তারা দেখবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৯তম বিশেষ বিসিএসে আরবি বিভাগ না থাকার প্রতিবাদ
৪৯তম বিসিএসের (সাধারণ শিক্ষা) বিজ্ঞপ্তিতে ‘আরবি ও ইসলামি শিক্ষা’ না থাকায় এর প্রতিবাদে এবং বিভাগটি অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ইবরাহীম নাফিস।
লিখিত বক্তব্যে ইবরাহীম নাফিস বলেন, শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক নিয়োগের জন্যই কেবল ৪৯তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সাধারণত সরকারি কলেজের প্রভাষক পদ বেশি শূন্য থাকলে বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রকাশিত ৪০তম বিসিএসের পর থেকে আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিষয়ে কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ইবরাহীম নাফিস বলেন, ‘দেশের ৬৬টি কলেজে আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিভাগ রয়েছে। ৪৯তম বিসিএসে কেবল সরকারি কলেজের প্রভাষক নিয়োগের জন্য দেওয়া হয়েছে বিধায় আমরা আশাবাদী ছিলাম যে বিজ্ঞপ্তিতে আরবি ও ইসলামি শিক্ষার প্রভাষক পদ শূন্য দেখানো হবে। কিন্তু আরবি ও ইসলামি শিক্ষার কোনো পদ শূন্য নেই দেখে আমরা চরম হতাশ হয়েছি।’
আরবি বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘যেসব কলেজে আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিভাগ রয়েছে, সেগুলোর শিক্ষকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে জানতে পারি, ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিষয়ে ৩৩টি প্রভাষক পদ শূন্য রয়েছে।’
ইবরাহীম নাফিস বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া পিএসসির (সরকারি কর্ম কমিশন) চেয়ারম্যানকেও মৌখিকভাবে আমাদের দাবিগুলো জানিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে ৪৯তম বিসিএসে (বিশেষ) পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিভাগের শূন্য পদগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানানো। দাবি না মানা হলে আইনি সহায়তা গ্রহণসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন আরবি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।