শ্রীলঙ্কায় আজ রোববার ভোরে তীর্থযাত্রীবাহী একটি বাস খাদে পড়ে অন্তত ২১ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন। দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ পরিবহন কর্মকর্তা এই সব তথ্য জানিয়েছেন।

বাসটি শ্রীলঙ্কার দক্ষিণের তীর্থস্থান কাটারাগামা থেকে মধ্যাঞ্চলের কুরুনেগালা শহরের দিকে যাচ্ছিল। স্থান দুটির মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার।

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার আঁকাবাঁকা সড়কগুলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক রাস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম। রোববারের এই দুর্ঘটনা দেশটিতে কয়েক দশকের মধ্যে ঘটে যাওয়া অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা।

দুর্ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যায়, বাসটির ছাদ ও দুই পাশ ছিঁড়ে গেছে এবং অর্ধেকের বেশি আসন মেঝে থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। উল্টে বাসটি একটি চা-বাগানে গিয়ে পড়ে।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসটিতে ৭০ জনের বেশি যাত্রী ছিল, যা ধারণক্ষমতার চেয়ে প্রায় ২০ জন বেশি। এটি একটি সরকার মালিকানাধীন বাস। শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলের পার্বত্য এলাকা কোটমালের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি খাদে পড়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। রোববার ভোরের আগে আগে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল, না চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।’

পরিবহন উপমন্ত্রী প্রসন্ন গুনাসেনা দুর্ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, আহতদের দ্রুত দুটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘২১ জন মারা গেছেন। নিহত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, স্থানীয় বাসিন্দারা ধ্বংসাবশেষ থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে গেলে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বেশি হতে পারত। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে ২৪ জন আহত ব্যক্তি দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

একজন বেঁচে ফেরা যাত্রী স্থানীয় এক সাংবাদিককে জানান, তিনি বাসের সামনের অংশে ছিলেন এবং ভাগ্যক্রমে অল্প আঘাত পেয়ে প্রাণে বেঁচে গেছেন।

একটি ভিডিওতে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘বাসটি বাঁ দিকে ঝুঁকে ছিল। চালক যখন একটি মোড় পার হচ্ছিলেন তখনই তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন এবং বাসটি গভীর খাদে পড়ে যায়।’

শ্রীলঙ্কায় প্রতিবছর গড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হন। শ্রীলঙ্কা বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলোর অন্যতম।

রোববারের এই বাস দুর্ঘটনা শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এর আগে ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসে পোলগাহাওয়েলা শহরে একটি বাস রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় চালক হালকা আহত হলেও বাসের ৩৭ জন যাত্রী নিহত হয়েছিলেন।

২০২১ সালের মার্চ মাসে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন বাস শ্রীলঙ্কার পূর্বাঞ্চলের পাসারায় খাদে পড়ে গেলে চালকসহ ১৩ জন যাত্রী নিহত হন। পাসারা শহরটি রোববারের দুর্ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন

র‍াস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ। 

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। 

আরো পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা

রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।” 

দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।” 

তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” 

পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর