সিরির বিরুদ্ধে কান পাতার অভিযোগ, অ্যাপলের কাছ থেকে মিলতে পারে ১০০ ডলার ক্ষতিপূরণ
Published: 11th, May 2025 GMT
ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত কথোপকথনে কান পাতার অভিযোগে অ্যাপলের ভার্চ্যুয়াল সহকারী সিরি নিয়ে করা এক মামলার নিষ্পত্তিতে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে অ্যাপল। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কেউ যদি সিরি–সমর্থিত যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন এবং ওই সময় গোপন বা ব্যক্তিগত কথোপকথনের সময় সিরি অনিচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয় হয়ে থাকলে, তিনি ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই অভিযোগ ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালে একটি যৌথ মামলা (ক্লাস অ্যাকশন) করা হয়। মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারিতে। তাতে সম্মত হয়ে অ্যাপল সাড়ে ৯ কোটি ডলার পরিশোধে রাজি হয়েছে। এ অর্থের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
আবেদনের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ জুলাই। একজন ব্যবহারকারী সর্বোচ্চ পাঁচটি যন্ত্রের জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রতি যন্ত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে; অর্থাৎ একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০০ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন। তবে আবেদন করলেই ক্ষতিপূরণ মিলবে, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। বৈধ আবেদনসংখ্যা ও যাচাই-বাছাইয়ের ওপর নির্ভর করেই চূড়ান্ত অর্থ প্রদান করা হবে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, সিরি অনিচ্ছাকৃতভাবে সক্রিয় হয়ে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত কথোপকথন রেকর্ড করত। সেই রেকর্ড অ্যাপলের নিয়োগপ্রাপ্ত তৃতীয় পক্ষের ঠিকাদারদের কাছে মান পরীক্ষার উদ্দেশ্যে পাঠানো হতো।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে অ্যাপল। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, অ্যাপল কখনোই সিরি ব্যবহারকারীদের তথ্য বিপণনের জন্য ব্যবহার করেনি, কোনো তৃতীয় পক্ষের কাছে তা বিক্রি করা হয়নি, এমনকি বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যেও কখনো সরবরাহ করা হয়নি।
সূত্র: ম্যাশেবল ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র জন য অ য পল
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া