Prothomalo:
2025-05-16@12:20:44 GMT

আমার একটা কষ্ট আছে...

Published: 16th, May 2025 GMT

প্রথম আলো :

এখন তো কনটেন্টের ছড়াছড়ি। আপনার কেন মনে হয় ‘ফ্যাঁকড়া’র প্রতি মানুষ আগ্রহ বোধ করবেন?

নিশাত প্রিয়ম : আমি নিজেও অনেক ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। পাশাপাশি বেশ ভালো ভালো ওয়েব সিরিজ হচ্ছে। প্রতিটি সিরিজে একটা নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু থাকে, যেটার ওপর নির্ভর করে পুরো গল্প এগিয়ে যায়, শেষ হয়। এটা এমন একটা সিরিজ, যেখানে গল্পটাই হিরো এবং এখানে প্রতিটি উপাদান দর্শক পাবেন। ভালোবাসা, সংকট, প্রতিশোধ, আপস অ্যান্ড ডাউন, বন্ধন, রোমাঞ্চ, এমনকি সহিংসতাও আছে। আমরা যে সাতজন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছি, সবারই পেছনের একটা গল্প আছে। প্রত্যেকের জায়গা থেকে সংকট আছে, চাওয়া আছে; সে জায়গা থেকে সবাই মিলে গল্পটা এগিয়ে নিয়েছে। যার কারণে দর্শকেরও বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। দর্শক খুবই পছন্দ করবেন সিরিজটি। এটাও আমাদের সার্থকতা, যাঁরা সিরিজটি দেখেছেন, একটা পর্ব শেষ হতে না আরেকটার ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছে; কী হবে, তা নিয়ে কথা বলছেন। যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা এ–ও বলছেন, এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল! তাই বলব, নিঃসন্দেহে প্রত্যেকের ‘ফ্যাঁকড়া’ দেখা উচিত।

প্রথম আলো:

‘অদৃশ্য’ সিরিজের অনেক পরে ‘ফ্যাঁকড়া’য় কাজ করলেন। খুব সময় নিয়ে কাজ করলেন কি?

নিশাত প্রিয়ম : এক বছর পর মুক্তি পেল ‘ফ্যাঁকড়া’। মাঝখানে বঙ্গতে ওয়েব ফিল্ম ‘সেকশন ৩০২’ করেছি। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘সিটি লাইফ’ ধারাবাহিকটি এক বছর ধরে প্রচারিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত কারণে মাঝখানে ছোট্ট একটা বিরতি ছিল, তাই কাজ একটু কম করা হয়েছে। টানা কয়েক মাস দেশের বাইরেও ছিলাম।

প্রথম আলো :

সামনে তো ঈদ, এ উৎসবের জন্য কী কাজ করলেন?

নিশাত প্রিয়ম : আরেকটা সিরিজের কাজ করছি। একটা অ্যানথোলজিতেও কাজ করেছি। বেশ কয়েকটা নাটকে অভিনয় করেছি। কবে, কখন প্রচারিত হবে, তা বলতে পারছি না; পরিচালকেরা এসব ভালো বলতে পারবেন।

প্রথম আলো:

নিশাত প্রিয়ম : ছোট পর্দায় যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁদের বড় পর্দায় কাজের একটা স্বপ্ন থাকে। আপনার কি তেমন কোনো স্বপ্ন আছে?

নিশাত প্রিয়ম : অবশ্যই আমরা যারা কাজ করছি, তাদের স্বপ্ন হচ্ছে বড় পর্দায় কাজ করব। আমারও তা–ই। আমিও এ রকম একটা গল্পের অপেক্ষায় আছি, যেটা পেলে মনে হবে আমি অবশ্যই সিনেমায় অভিনয় করতে চাই।

নিশাত প্রিয়ম। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে রাজনৈতিক দলের কার্যালয় বাদ দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান

বাগেরহাটে সড়কের জমি দখলমুক্ত করতে দুই দিনে হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের টাউন নোয়াপাড়া থেকে বলেশ্বর সেতুর পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়কের এই অভিযান চলে। তবে ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ের আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের বেশ কিছু কার্যালয় অক্ষত রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, দরিদ্র চা বিক্রেতা বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাঠের ছোট ঘর ভাঙতে কঠোরতা থাকলেও প্রভাবশালীদের বেলায় নিরব ছিলো দায়িত্বশীলরা। রাজনৈতিক দল, শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ব্যানারে থাকা অনেক কার্যালয়ই সড়কের জমি দখল করে আছে। যার বেশিরভাই ছিল আগে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের কার্যালয়।

তবে সড়ক বিভাগ বলছে, জমি পুনরুদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ওই অভিযানে বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের দু’পাশে থাকা প্রায় ৫০০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। দুই দিনব্যাপী অভিযানে ৪০ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই দখলমুক্ত হয়েছে।  

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগেরহাট শহরের দশানী থেকে সিএনবি বাজার পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার সড়কের পাশে এমন অন্তত ১০টি কার্যালয় দেখা গেছে। আগে আওয়ামী লীগের কার্যালয় হলেও এগুলো এখন বিএনপি ও তাদের সমর্থিতদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রেস সোসাইটি ও মানবাধিকার সংস্থা, ব্লাড ব্যাংক, শ্রমিক ইউনিয়নের ব্যানারের কিছু স্থাপনাকে অক্ষত দেখা গেছে। সেগুলোও বিএনপি এবং জামায়াত সমর্থিত নেতাদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বলছেন স্থানীয়রা। 

বছর দুই আগে হযরত খানজাহান (রহ.)-এর মাজার মোড়ে সড়কের জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে মহাধুমধামে উদ্বোধন করা হয়েছিল বাগেরহাট সদর উপজেলার আওয়ামী লীগের কার্যালয়। অভিযানে ভাঙা হয়নি সেই ভবন। তবে আশপাশে থাকা অন্যসব কাঠ-বাঁশের স্থাপনাও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কার্যালয়টির সামনে এখন আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ প্রধান কার্যালয় বাগেরহাট জেলা লেখা ব্যানার। আছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাসহ নেতাদের ছবি।

ইজিবাইক চালক মহিদুল হক বলছিলেন, ‘এগুলো ভাঙ্গে না, খালি পারে গরিবের প্যাটে লাথি মারতি। সবগুলো আওয়ামী লীগের অফিস ছিল। এট্টাও ভাঙ্গিনি। সব এহন অন্য দলের রূপান্তর হয়ে গেছে।’ 

স্থানীয়রা এই কার্যালয়গুলোকে বলছেন, ‘রূপান্তরিত আওয়ামী লীগ অফিস’। কখনেই এসব স্থাপনা ভাঙা হয়না বলেও অভিযোগ তাদের।

সদর উপজেলার শ্রীঘাট মোড় এলাকায়ও আশপাশের সবগুলো দোকান-ঘর ভেঙে দেওয়া হলেও অক্ষত একটি মাত্র ঘর। যেখানে বিএনপি, ছাত্রদল ও সেচ্ছাসেবক দল লেখা এবং দলীয় নেতাদের ছবিযুক্ত তিনটি ব্যানান। ছবি তোলার সময় ওই এলাকার ষাটোর্ধ এক প্রবীণ এগিয়ে এসে বলেন, ‘ছবি তুলে কী হবে, আগে আওয়ামী লীগের অফিস ছিল, এহন বিএনপির। যহন যার ক্ষমতায়, বোঝ না। সাধারণ মানুষের তা সব ভাঙ্গিছে ভালো মত।’

শ্রীঘাটের মত দশানী, মেঘনিতলা, মাজার, বারাকপুর, সিএনবি বাজার মোড়ের চিত্রও একই। এসব স্থানে অস্থায়ী দোকান থেকে শুরু করে সাপ্তাহিক হাটের জন্য বসানো চৌকি, খুটিও ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে নানা নেতার ছবিযুক্ত দলীয় কার্যালয়গুলো ভাঙা হয়নি। কেবল দশানী মোড়েই এমন তিনটি স্থাপনা ভাঙা হয়নি। তবে এগুলোর কোনটিতেই বাইরে থেকে কোন দলীয় ব্যানার বা নেতাদের ছবি দেখা যায়নি।

স্থানীয় এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই তিনটি অফিসের একটিতে থাকা যুবদলের ব্যানার আগের দিন খুলে রাখা হয়েছে, তবে তা ভাঙেনি। ওই স্থানে ৫ আগস্টের আগে শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। দশানী ব্লাড ব্যাংক লেখা আরেকটি অফিসও অভিযানে ভাঙা হয়নি। এটি ছিল আওয়ামী লীগের অফিস। ৫ আগস্ট বিকেলে পুড়িয়ে দেওয়ার পর সেখানে নতুন করে ঘর তুলে জামায়াত নেতাদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর অপর একটিতে আন্তঃজেলা ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, মিনিট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয় লেখা ব্যানার আছে।

ছোট ছাপড়া দোকান করে সংসার চালানো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের সবকিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে দিলেও অনেক স্থাপনা রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ অভিযোগ তুলছেন, অনেক পাকা স্থাপনা বাঁচিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মাজার মোড়ের সবজি বিক্রেতা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘সপ্তাহে দু’দিন হাট। বিকেলে কয়ডা শাকপাতা নিয়ে আইসে বসি, বেচা হরি চলে যাই। আমরা তো কিছু দখল করিনি। চাইরখেন বাঁশ পোতা তাও ভাইঙ্গে দিছে। বড় লোকগো কিছু ভাঙ্গে না।’ 

শহরের নতুন কোর্টের সামনের দোকানি নামজা আক্তার বলেন, ‘ছোট একটা হোটেল করে কোন রহমে মেয়ে দুডোর মুহি কয়ডা ভাত দেই। ভাঙবে শুনে সব সরায় নিচ্ছিলাম। হাত-পাও ধরলাম ১০টা মিনিটও সময় দেলো না।’

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের খুলনা জোনের এস্টেট ও আইন কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী সচিব পিযুষ চন্দ্র দে’র নেতৃত্বে ওই অভিযান পরিচালিত হয়।

কিছু স্থাপনা না ভাঙা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সওজ’র বাগেরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম মুঠোফোনে সমকালকে বলেন, ‘এরকম তো হওয়ার কথা না। এখানে কোন পার্টি বা কিছু দেখা হয় নাই।’ পরে এলাকা ধরে স্থাপনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় বিএনপির যে পার্টি অফিস, আমরা যখন ওখানে ভাঙতে গেছি, কনসার্ন যে ওয়ার্ড বা দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা এসে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে খুলে নেওয়ার জন্য সময় নিয়েছেন। এজন্য সরাসরি বুলডোজার লাগানো হয়নি। পার্টি অফিস, একটা পারপাসের পার্থক্য আছে।’

আবার ‘কাউকে ফেবার করা হয়নি। উচ্ছেদের বিষয়ে কোন চাপ ছিল না’ বলেও দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ