প্রথম আলো :
এখন তো কনটেন্টের ছড়াছড়ি। আপনার কেন মনে হয় ‘ফ্যাঁকড়া’র প্রতি মানুষ আগ্রহ বোধ করবেন?
নিশাত প্রিয়ম : আমি নিজেও অনেক ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। পাশাপাশি বেশ ভালো ভালো ওয়েব সিরিজ হচ্ছে। প্রতিটি সিরিজে একটা নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু থাকে, যেটার ওপর নির্ভর করে পুরো গল্প এগিয়ে যায়, শেষ হয়। এটা এমন একটা সিরিজ, যেখানে গল্পটাই হিরো এবং এখানে প্রতিটি উপাদান দর্শক পাবেন। ভালোবাসা, সংকট, প্রতিশোধ, আপস অ্যান্ড ডাউন, বন্ধন, রোমাঞ্চ, এমনকি সহিংসতাও আছে। আমরা যে সাতজন প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছি, সবারই পেছনের একটা গল্প আছে। প্রত্যেকের জায়গা থেকে সংকট আছে, চাওয়া আছে; সে জায়গা থেকে সবাই মিলে গল্পটা এগিয়ে নিয়েছে। যার কারণে দর্শকেরও বিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। দর্শক খুবই পছন্দ করবেন সিরিজটি। এটাও আমাদের সার্থকতা, যাঁরা সিরিজটি দেখেছেন, একটা পর্ব শেষ হতে না আরেকটার ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে একটা রোমাঞ্চ কাজ করছে; কী হবে, তা নিয়ে কথা বলছেন। যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা এ–ও বলছেন, এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল! তাই বলব, নিঃসন্দেহে প্রত্যেকের ‘ফ্যাঁকড়া’ দেখা উচিত।
প্রথম আলো:‘অদৃশ্য’ সিরিজের অনেক পরে ‘ফ্যাঁকড়া’য় কাজ করলেন। খুব সময় নিয়ে কাজ করলেন কি?
নিশাত প্রিয়ম : এক বছর পর মুক্তি পেল ‘ফ্যাঁকড়া’। মাঝখানে বঙ্গতে ওয়েব ফিল্ম ‘সেকশন ৩০২’ করেছি। এ ছাড়া মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘সিটি লাইফ’ ধারাবাহিকটি এক বছর ধরে প্রচারিত হচ্ছে। ব্যক্তিগত কারণে মাঝখানে ছোট্ট একটা বিরতি ছিল, তাই কাজ একটু কম করা হয়েছে। টানা কয়েক মাস দেশের বাইরেও ছিলাম।
প্রথম আলো :
সামনে তো ঈদ, এ উৎসবের জন্য কী কাজ করলেন?
নিশাত প্রিয়ম : আরেকটা সিরিজের কাজ করছি। একটা অ্যানথোলজিতেও কাজ করেছি। বেশ কয়েকটা নাটকে অভিনয় করেছি। কবে, কখন প্রচারিত হবে, তা বলতে পারছি না; পরিচালকেরা এসব ভালো বলতে পারবেন।
প্রথম আলো:নিশাত প্রিয়ম : ছোট পর্দায় যাঁরা অভিনয় করেন, তাঁদের বড় পর্দায় কাজের একটা স্বপ্ন থাকে। আপনার কি তেমন কোনো স্বপ্ন আছে?
নিশাত প্রিয়ম : অবশ্যই আমরা যারা কাজ করছি, তাদের স্বপ্ন হচ্ছে বড় পর্দায় কাজ করব। আমারও তা–ই। আমিও এ রকম একটা গল্পের অপেক্ষায় আছি, যেটা পেলে মনে হবে আমি অবশ্যই সিনেমায় অভিনয় করতে চাই।
নিশাত প্রিয়ম। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ সফরে আসছেন তুরস্কের প্রতিরক্ষাশিল্প সংস্থার প্রধান
বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে আলোচনার জন্য তুরস্কের প্রতিরক্ষাশিল্প সংস্থার সচিব অধ্যাপক হালুক গরগুন ৮ জুলাই ঢাকায় আসছেন। এক দিনের সফরে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পাশাপাশি তিনি সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
তুরস্ক থেকে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র সোমবার প্রথম আলোকে জানিয়েছে, দুই দেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীর মাঝে সহযোগিতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণ, গবেষণা, কেনাকাটা, বিনিয়োগ ইত্যাদি নানা বিষয়ে অধ্যাপক হালুক গরগুন আলোচনা করতে পারেন।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের অধীনে সরাসরি কাজ করে প্রতিরক্ষাশিল্প সংস্থা (ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি এজেন্সি–এসএসবি)। মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুরস্কের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক—বিশেষ করে প্রশিক্ষণ, গবেষণার মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর বিকাশ ও বিবর্তনের বিষয়ে এসএসবি মূল ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তুরস্কের সমরাস্ত্র কেনাকাটা এবং বিনিয়োগের দেখভাল করে এসএসবি।
তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুল বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার রাজনৈতিক দিকটি দেখভাল করেন। আর তুরস্কের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কৌশলগত বিষয়টির দায়িত্বে রয়েছেন হালুক গরগুন। কারণ, এসএসবি প্রতিরক্ষাশিল্প নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ তুরস্কের প্রতিরক্ষাশিল্পের জন্য প্রধান সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থা। এটি সমরাস্ত্রের নকশা ও উৎপাদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কাছে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেয়।
বাংলাদেশের কূটনীতিকেরা বলছেন, সম্প্রতি ঢাকা–আঙ্কারা সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে তুরস্ক নানা ধরনের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দিয়ে থাকে। গত সাত বছরে বারাক্তার টিবি–২ ড্রোনসহ অন্তত ১৫ ধরনের আধুনিক সমরাস্ত্র কিনেছে বাংলাদেশ।
মূলত ২০১৮ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে সমরাস্ত্র কেনাকাটা এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। এর পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির আরও কিছু সমরাস্ত্র কেনাকাটা, বাংলাদেশে সমরাস্ত্রের কারখানা স্থাপন ও বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর নিয়েও আলোচনা চলছে। দুই দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দীর্ঘ মেয়াদে আরও শক্তিশালী হওয়ার নানা ইঙ্গিত আছে বলে মনে করেন ঢাকার কূটনীতিকেরা।
গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ওমের বোলাত। সফরকালে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। প্রধান উপদেষ্টা তাঁকে বাংলাদেশে প্রতিরক্ষাশিল্প স্থাপন, প্রযুক্তি স্থানান্তর, বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
উত্তরে ওমের বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্ক টেক্সটাইল শিল্প ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৈচিত্র্যময় করতে পারে। প্রতিরক্ষাশিল্প, স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধশিল্প এবং কৃষিযন্ত্র খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে।
সমরাস্ত্রবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে আঙ্কারার কাছ থেকে কোবরা আর্মার্ড পারসোনাল ক্যারিয়ার ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে ঢাকা।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই দেশের বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার আওতায় তুরস্ক নির্মিত মাইন থেকে সুরক্ষাকারী যান, সাঁজোয়া যান এবং বহুমাত্রিক রকেট প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিনেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত কামানের গোলা বিক্রির বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কাছে সামরিক হেলিকপ্টার ও ট্যাংক বিক্রিতে আগ্রহী তুরস্ক। তুরস্কের একটি কোম্পানি বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিকে শেল বানানোর প্রযুক্তি দিয়েছে। এ ছাড়া নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের টহল নৌযান তৈরির জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রস্তাব করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে তুরস্ক থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সমরাস্ত্র কিনেছে। ওই বছর গ্রাউন্ডেড সার্ভিলেন্স রাডার, কৌশলগত সাঁজোয়া যান কোবরা ২-সহ কয়েক ধরনের সাঁজোয়া যান ও বহনযোগ্য জ্যামার কেনা হয়। পরবর্তী বছরগুলোতে অফশোর ক্রেন, সাঁজোয়া যান এবং অ্যাম্বুলেন্স, মিসাইল লঞ্চিং সিস্টেম, ওরলিকন স্কাই গার্ড রাডার সিস্টেমসহ নানা ধরনের সমরাস্ত্র কেনা হয়েছে।
আরও পড়ুনতুরস্ক থেকে সমরাস্ত্র কেনা বেড়েছে২৭ ডিসেম্বর ২০২৩