মলিন একটি জামা হাতে নিয়ে কাঁদছিলেন পদ্মা রানী (৩৫), পাশেই পাসপোর্ট সাইজের ছবি হাতে নির্বাক বসে ছিলেন তার স্বামী প্রফুল্ল রাজবংশী (৪৪)। ছবি ও জামাটি তাদের বড় মেয়ে প্রিয়াঙ্কা রাজবংশীর (১৬)। যিনি প্রায় দেড় মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। 

আইনের সহায়তা নিয়ে এবং বহু খোঁজাখুঁজি করেও মেয়ের খোঁজ না পেয়ে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। মেয়ের কথা জিজ্ঞেস করতেই বাড়িটিতে তৈরি হয় আবেগঘন এক পরিবেশ।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দীর্ঘ দিন ধরেই পার্শ্ববর্তী এলাকার এক যুবক উত্যক্ত করে আসছিল প্রিয়াঙ্কা রাজবংশীকে। দিয়েছিল অপহরণের হুমকিও। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ মার্চ বাড়ির পাশ থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। গেল দুই মাসেও খোঁজ মেলেনি তার।

এ ঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ এর অপহরণ ও সহায়তার অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দুই জনের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় মামলা (নম্বর- ২৯) করেন ওই কিশোরীর বাবা মাছ বিক্রেতা প্রফুল্ল রাজবংশী।

এর আগে, গত ১৯ মার্চ ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীপাড়া এলাকায় নিজের বাড়ির পাশ থেকে ওই কিশোরী নিখোঁজ হন।

আসামিরা হলেন- ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের ভাবনহাটি এলাকার মো.

আশরাফুল হোসেন (২০), তার বাবা ইমান আলী (৪৪), মা আনোয়ারা বেগম (৩৮) ও একই এলাকার আবু বক্করসহ (৪৪) অজ্ঞাত দুই জন।

নিখোঁজ কিশোরী প্রিয়াঙ্কা রাজবংশী (১৬) ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের কাওয়ালীপাড়া এলাকার প্রফুল্ল রাজবংশীর মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী বালিয়া ইউনিয়নের প্রত্যাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়তেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত মো. আশরাফুল হোসেন দীর্ঘ দিন ধরেই ভুক্তভোগী কিশোরীকে উত্যক্ত ও বিরক্ত করে আসছিল। বিষয়টি জানতে পেরে কিশোরীর বাবা তাকে একাধিকবার নিষেধ করেন ও তার পরিবারের সদস্যদেরও অবহিত করেন। তবে তারা তাকে শাসন না করে বরং উষ্কে দেয়। এর জেরে অভিযুক্ত ওই যুবক কিশোরীকে অপহরণের হুমকি দেয়।

আরও জানা যায়, গত ১৯ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই কিশোরী বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে মুদি জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে যান। সেসময় অভিযুক্ত এক নম্বর আসামি যুবক দুই, তিন ও চার নম্বর আসামির প্ররোচনা ও সহায়তায় ভুক্তভোগী কিশোরীকে অজ্ঞাত সিএনজিতে তুলে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। 

মেয়ে বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তবে না পেয়ে দুই ও তিন নম্বর আসামির বাড়ি গেলে তারা ওই কিশোরীকে ফেরত দেবে বলে জানান। তবে তারা কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এর জেরে তার বাবা বাদি হয়ে মামলা করেন।

নিখোঁজ কিশোরীর বাবা প্রফুল্ল রাজবংশী বলেন, ‘‘ঘরে ঢুকলেই মেয়েটার কথা মনে করে। ঘর ভর্তি তার জামাকাপড়, পড়ার বই, জিনিসপত্র। দেড় মাস ধরে তাকে দেখতে পারছি না। বেঁচে আছে, নাকি মেরেই ফেললো- নাকি পাঁচার করে দিল- কিছুই জানি না। সবার কাছে অনুরোধ আমার মেয়েটাকে আমার কাছে ফেরত এনে দেন। পুলিশ, আদালত আইন ধরলাম। তারা চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনও মেয়েটাকে এনে দিতে পারলো না কেউ। আমি আমার মেয়েটাকে ফেরত চাই।’’ এসব কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিখোঁজ কিশোরীর মা পদ্মা রানী বলেন, ‘‘আমি আমার মেয়েটাকে খুব আদর করে মানুষ করছি। বড় করছি। মেয়েটা দেড়টা মাস ধরে কোথায় আছে জানি না। কিছু করতে পারছি না। বেঁচে আছে নাকি মারা গেল, আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই।’’

স্কুল পড়ুয়া কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রতিবেশীরাও। মিনু রানী নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘মেয়ের মা-বাবা অনেক কষ্ট করে তাকে মানুষ করেছে। এসএসসি পরীক্ষা দিত আর কিছু দিন পর। সেই মেয়েটা এভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল। খুঁজেও পায় না। দরিদ্র পরিবারটা অসহায় হয়ে পড়েছে। মেয়েটা অনেক ভালো ছিল। আপনারা সবাই তাকে একটু খুঁজে বের করে দেন।’’

এ বিষয়ে ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রিয়াঙ্কা নিখোঁজের বিষয়ে অত্র থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। একজন এজাহারনামীয় আসামি গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান আছে। আশা করছি শিগগিরই তাকে আমরা উদ্ধার করতে পারব।’’

ঢাকা/আরিফুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওই ক শ র আম র ম য় পর ব র এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় বছর ধরে নিখোঁজের পর ফেনীতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার, সেই আহাদ আসলে কে

পরিবারের কাছে তিনি কাস্টমস কর্মকর্তা। ফেনীর স্থানীয় লোকজনের কাছে কখনো দিনমজুর, কখনো ফল ব্যবসায়ী। আবার কেউ কেউ তাঁকে চাকরিপ্রত্যাশী হিসেবেও চেনেন। কিন্তু তিনি আসলে কে—এ প্রশ্নের উত্তর মেলেনি এখনো।

মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভূইগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মো. ইমানি মিয়ার ছেলে আবদুল আহাদের (৪৬) পরিচয় নিয়ে এমনই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। গত বুধবার ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এলাকায় দিনমজুরের কাজ করতেন। কেউ বলছেন, ফল ব্যবসায়ী। তবে পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি কাস্টমস কর্মকর্তা। ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।

কিন্তু অপহরণের পর এই ছয় বছর আহাদ কোথায় ছিলেন, ফেনীতে কীভাবে গেলেন, কেন দিনমজুরির কাজ করতেন, তার কোনো উত্তর মেলেনি। রাজধানী ঢাকার এক কাস্টমস কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, এই নামে কাস্টমসে কেউ কর্মরত ছিলেন, এমন তথ্য মেলেনি। তবে চট্টগ্রামের ঠিক কোন কার্যালয়ে বা বিভাগে তিনি কর্মরত ছিলেন, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারলে তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

অন্যদিকে নির্দিষ্ট পদ-পদবির কথা না জানালেও আহাদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি কাস্টমস কর্মকর্তা ছিলেন। ছয় বছর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। এ ঘটনায় পরিবারের একাধিক সদস্য জামালপুর, সিলেটসহ একাধিক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ছয় বছরেও খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুক্রবার দুপুরে জানাজা শেষে আহাদের মরদেহ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবার পাশে দাফন করা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তিই নিখোঁজ আহাদ

বুধবার আহাদের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ফেনী পিবিআই কার্যালয়ের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পুলক বড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে পিবিআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ব্যক্তির আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে। ফলাফল হাতে পাওয়ার আগেই মরদেহের সঙ্গে থাকা এটিএম কার্ড থেকে পরিচয় শনাক্ত হয়। পরবর্তী সময়ে আঙুলের ছাপের ফলাফলের সঙ্গে এটিএম কার্ডের প্রাপ্ত তথ্যের মিল পাওয়া যায়। এতে পুলিশ নিশ্চিত হয়, মৃত ব্যক্তিই আবদুল আহাদ।

কাস্টমস কর্মকর্তা, ফল ব্যবসায়ী, নাকি দিনমজুর

পরিচয় নিয়ে জল্পনা তৈরি হলে আবদুল আহাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেন প্রথম আলোর প্রতিবেদক। শুক্রবার ফেনী শহর ও ছাগলনাইয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে আবদুল আহাদের পরিচিত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মৃত্যুর খবর ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার দুপুরেই এক ব্যক্তি পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, আহাদ তাঁর সঙ্গে দিনমজুরের কাজ করেছেন। আবার আরেক ব্যক্তি দাবি করেন, গত কোরবানির ঈদে তাঁর বাড়িতে কসাইয়ের কাজ করতে এসেছিলেন। তবে এই দুজনের পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।

ফেনী শহরের কলেজ রোড এলাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল হিসাব নম্বর খুলেছিলেন আহাদ। সেখানে তিনি নিজেকে ফল বিক্রেতা উল্লেখ করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় উল্লেখ করেন, দ্বিতীয় শ্রেণি পাস। ওই ব্যাংক হিসাবের নমিনি করেছিলেন তাঁর বড় মেয়েকে। ঠিকানা উল্লেখ করেছিলেন শহরের সহদেবপুর এলাকা। ফেনীর ওই এলাকায় সাধারণত শ্রমিকশ্রেণির লোকজন বেশি বাস করেন। তবে ওই এলাকার বিভিন্ন বাসিন্দা কাছে জিজ্ঞেস করে এবং কলোনি ঘুরেও আহাদ সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

সহদেবপুর এলাকার একটি কলোনির বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ওই এলাকায় সিলেট বা মৌলভীবাজারের কোনো শ্রমিক থাকেন না। খুলনা, বাগেরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা অঞ্চলের শ্রমিকেরা এই এলাকায় থাকেন। তাঁরা রাজমিস্ত্রিসহ বিভিন্ন দিনমজুরির কাজ করেন।

ফেনীর ওই ব্যাংকে হিসাব খোলার সময় একটি মুঠোফোন নম্বরও ব্যবহার করেছিলেন আহাদ। তবে বর্তমানে নম্বরটি সিরাজগঞ্জ জেলার এক ব্যক্তি ব্যবহার করছেন। তিনি দাবি করেন, এটি এখন তাঁর নামে নিবন্ধন করা। হিসাবটিতে তেমন লেনদেন হতো না। চলতি বছরের ২৫ মে শেষবার তিনি ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করেছেন। তবে এর বেশি কিছু জানাতে চায়নি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম বলেন, পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছেন, মৃত আহাদ এলাকায় দিনমজুরের কাজ করতেন। কাজ শেষে তিনি অনেক সময় থানা রোড এলাকার একটি মার্কেটের বারান্দায় রাত যাপন করতেন। তবে সেখানেও তিনি নিয়মিত থাকতেন না।

নিখোঁজ, না অপহরণ

২০১৯ সালের ৭ মে আবদুল আহাদকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিল তাঁর পরিবার। তবে গতকাল শনিবার জানানো হয়, ওই বছরের ১ মে এ ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন গভীর রাতে অপহরণকারীরা আহাদের স্ত্রীর মুঠোফোন নম্বরে কল করে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তবে ফোনটি ধরেন তাঁর শ্যালক। মুক্তিপণের দাবি তিনি তাঁর বোন মাহাবুবা আক্তারকে জানান। পরদিন দুপুরের মধ্যে দুটি বিকাশ নম্বরে মোট ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাঠানো হয়।

জানতে চাইলে মাহাবুবা আক্তার দাবি করেন, ২ মে দুপুর ১২টায় সর্বশেষ আহাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। তখন অপহরণকারীরা আহাদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়েছিল। অপহরণের পর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে তা নেওয়া হয়নি।

অপহরণের এ ঘটনার ২৫ দিন পর ২০১৯ সালের ২৭ মে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন আহাদের বড় ভাই। সেই জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২ মে ‘২৬৯ শেখঘাট, কোতোয়ালি, সিলেট’—এ ঠিকানা থেকে ব্যবসার কাজে কালীঘাট বাজারে গিয়েছিলেন আহাদ। এরপর আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ওই জিডিতে অপহরণ বা মুক্তিপণ শব্দের কোনো উল্লেখ ছিল না। কেন উল্লেখ করা হয়নি, সে বিষয়ে জানতে আহাদের বড় ভাই শেখ আবদুর নুরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কথা বলতে চাননি।

আরও পড়ুনছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ৩০ অক্টোবর ২০২৫

জানতে চাইলে আহাদের স্ত্রী মাহাবুবা আক্তার বলেন, ওই জিডিতে কেন অপহরণের বিষয়টি লেখা হয়নি, সেটা তিনি জানেন না। আহাদের বড় ভাই বিষয়টি বলতে পারবেন।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। এ অপহরণের পাঁচ মাস পর, ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আহাদের বড় ভাই শেখ আবদুর নুর জামালপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সে মামলায় আহাদকে চাকরিপ্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অপহরণকারীদের যে দুটি বিকাশ নম্বর থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল, সে দুটি নম্বরের ঠিকানা ছিল জামালপুর। এ কারণে জামালপুরে মামলাটি হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।

আদালতে করা এ মামলায় শেখ আবদুর নুর চারজনকে আসামি করেন। এর মধ্যে দুজন জামালপুর ও দুজন সিলেট জেলার বাসিন্দা। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল কমলগঞ্জ উপজেলার কুমড়াকাপন এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি আহাদ। অর্থাৎ সিলেট থানায় করা জিডির সঙ্গে এ মামলার তথ্যের কোনো মিল নেই।

এদিকে আহাদের স্ত্রী মাহাবুবা আক্তার, বোন নাঈমা নাসরিন, ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমান ও শ্যালক মুজাহার উদ্দিন সায়েম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে পরে কাস্টমসে যোগ দেন আহাদ। তিনি পেশাগত কাজে সিলেট, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ একাধিক স্থানে অবস্থান করেছেন। তবে কাস্টমসের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও এ বিষয়ে তথ্য মেলেনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় বছর ধরে নিখোঁজের পর ফেনীতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার, সেই আহাদ আসলে কে