কুমিল্লায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রে যুবকের মৃত্যু, পাল্টাপাল্টি হামলা
Published: 23rd, May 2025 GMT
কুমিল্লা নগরীর একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে কাজী সোহেল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর ডুলিপাড়া নগরীর নিউ যত্ন মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে এ ঘটনায় এলাকার লোকজন ও সোহেলের পরিবার প্রতিবাদ জানালে মাদক নিরাময় কেন্দ্রের লোকজনের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে।
কাজী সোহেল জেলার বরুড়া উপজেলার ১০নং উত্তরশীল মুড়ি ইউনিয়নের লতিফপুর গ্রামের শাহাদাত হোসেনের ছেলে।
সোহেলের বড় বোন মাসুদা বেগম সমকালকে জানান, আমার ভাইকে ৩ মাস ১২ দিন আগে নগরীর ডুলীপাড়া এলাকায় নিউ যত্ন মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইকে ওই নিরাময় কেন্দ্রে দুপুরের খাবার খাইয়ে আমরা বাড়ি চলে যায়। বিকেলে ওই মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র থেকে আমার ভাই ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে আমাদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ওই নিরাময় কেন্দ্রে ছুটে আসলে এখানের শত শত লোকজনের উপস্থিতিতে দেখি। আমার ভাইকে নিরাময় কেন্দ্রের লোকজন মেরে ফেলেছে বলে প্রতিবাদ করলে নিরাময় কেন্দ্রের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদক নিরাময় কেন্দ্রের এক কর্মচারী বলেন, সোহেল ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে, তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাত পৌনে দশটার দিকে সদর দক্ষিণ মডেল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শত্রুতার জেরে সাত গরুকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগ, মারা গেছে ৩টি
গোপালগঞ্জে পূর্ব শত্রুতার জেরে খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিনটি গরু হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চারটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দুই কৃষক পরিবারের অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত শনিবার (১ নভেম্বর) মধ্যরাতে সদর উপজেলার সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কীভাবে গরুগুলো মারা গেছে তা খতিয়ে দেখতে নমুনা সংগ্রহ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পুলিশ বলছে, তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
গাইবান্ধায় ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা: মামলা দায়ের
এলাকাসাসী জানান, সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামের দুই ভাই মো. রাসুল গাজী ও হাসিব গাজী কৃষি কাজ করে সংসার চালান। তারা খামার করে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন। শনিবার মধ্যরাত সাড়ে ১২টার দিকে গরুর গোঙানির শব্দ শুনে পাশের বাড়ির এক আত্মীয় ছুটে গিয়ে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন দুই ভাইকে। তারা স্থানীয় পশু চিকিৎসককে খবর দেন। সকাল হওয়ার আগেই তিনটি গরু মারা যায়। একই গোয়াল ঘরে থাকা একটি বড় ষাঁড়, একটি বাছুর ও অপর গোয়ালে থাকা দুটি ষাঁড় এখনো অসুস্থ।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মো. রাসুল গাজী জানান, শত্রুতা করেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তাদের গরুগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই টের পেয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেও বাঁচানো যায়নি গরুগুলো। দুই ভাইয়ের আরো চারটি গরু অসুস্থ রয়েছে। এতে তাদের অন্তত ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
কারা তাদের গরু হত্যা করেছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাসুল গাজী বলেন, “ঘর থেকে বের হয়ে কয়েকজনকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছি। তাদের চেহারা দেখতে পারিনি। ফলে কাউকে চিনতে পারিনি।”
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক হাসিব গাজী বলেন, “কারো সঙ্গে আমাদের শত্রুতা থাকতেই পারে। এই অবলা পশুগুলো কার কী ক্ষতি করেছে। কোন অপরাধে এদের হত্যা করা হলো। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এলাকাবাসী মো. ইমদাদ শেখ বলেন, “গত শনিবার রাতে বৃষ্টি হয়। এই সুযোগে গরুগুলোকে বিষ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”
গোপালগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সর্দার বলেন, “সিংগারকুল পূর্বপাড়া গ্রামে কয়েকটি গরুকে বিষ খাওয়ানো হয় এমন খবর পেয়ে সকালে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তিনি অসুস্থ গরুগুলোকে চিকিৎসা দেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পয়জনজনিত কারণেই গরুগুলো মারা গেছে। মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই গরু তিনটির মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে তদন্ত শুরু করি। মারা যাওয়া গোরুগুলোর নমুনা সংগ্রহ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ