প্রতিষ্ঠার ১৯ বছর পেরিয়ে দুই দশকে পা রাখল পাহাড়, অরণ্য আর লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাসখ্যাত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ বুধবার দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’। এ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ের কোলে কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ পথচলার ১৯ বছরপূর্ণ হয়েছে; দুই দশকে পদার্পণ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এ সময়ে নানা অর্জন, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদানের মাধ্যমে স্বমহিমায় ভাস্বর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, পথচলার দুই দশকে পা দিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। শুরু থেকেই বিভিন্ন সংকট আর সম্ভাবনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে বর্তমান প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান করে নিতে পারবে এটি।

এবার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাঁকজমকপূর্ণভাবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হবে জানিয়ে জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, আজ সকালে পায়রা ও বেলুন ওড়ানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে কাটা ও দুপুর ১২টায় আলোচনা সভা ও বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা আছে। এ ছাড়া আরও কিছু আয়োজনের কথা আছে। এমন পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, ‘গৌরবের ১৯ বছর পার করে এগিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা এটিকে দেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’

২০০৬ সালের ২৮ মে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। ২০০৭ সালের ২৮ মে ৭টি বিভাগে ৩০০ শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাদান কার্যক্রম শুরু হয়। কুমিল্লা নগর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালমাই ও ময়নামতি পাহাড়ের কোলে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান। উঁচু-নিচু টিলা আর লালমাটির ক্যাম্পাসে বর্তমানে ৭ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর কোলাহলে মুখর থাকে ক্যাম্পাসটি। বর্তমানে ১৯টি বিভাগে মোট শিক্ষার্থী আছেন ৭ হাজার ১৩০ জন এবং শিক্ষক আছেন প্রায় ৩০০ জন। শিক্ষার্থীদের জন্য আছে ৫টি আবাসিক হল। শিক্ষকদের জন্য আছে ২টি ডরমিটরিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

৫০ একর জায়গার ওপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও ক্যাম্পাসের সম্প্রসারণ হয়েছে। সম্প্রসারণসহ অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীন ক্যাম্পাসের আয়তন বেড়েছে ১৯৪ দশমিক ১৯ একর। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির মোট আয়তন ২৪৪ দশমিক ১৯ একর ছাড়িয়েছে। ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সম্প্রসারণসহ অধিকতর উন্নয়নে এক হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২২ সালে শুরু হওয়া ওই প্রকল্পের কাজ চলমান। এটির বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রকল্পের অধীন সম্প্রসারণকৃত ক্যাম্পাসে ৪টি ১০ তলা একাডেমিক ভবন, দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন, ৪টি ১০ তলা আবাসিক হল, উপাচার্যের বাসভবন, শিক্ষকদের আবাসিক ভবন, ১০ তলা ডরমিটরি, কর্মচারীদের আবাসিক ভবন, স্কুল বিল্ডিং, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, অডিটরিয়াম, ইন্টারন্যাশনাল কমপ্লেক্স, মেডিকেল ও ডে-কেয়ার সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, স্মৃতিস্তম্ভ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, পারিবারিক বিনোদন এলাকা উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ আরও বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণকাজ চলমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প র দ ই দশক ক ভবন

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার তেজগাঁওয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তেজগাঁও সাউদার্ন পাম্পের পাশে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

নিহত খন্দকার সাইদুর রহমান (৩৮) পেশায় মার্চেন্ডাইজার ছিলেন। তাঁর বাড়ি ঢাকার পল্লবীর বাউনিয়ার আলাবদিরটেক এলাকায়। তাঁর বাবার নাম খন্দকার মোফাজ্জল হায়দার।

মৃতের ভাই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রাতে সাইদুর মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে একটি ট্রাকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মোটরসাইকেলে সাইদুরের সঙ্গে তাঁর এক সহকর্মীও ছিলেন। তবে তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান বলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল্লাহ আল মারুফ জানিয়েছেন।

আবদুল্লাহ আল মারুফ বলেন, যে ট্রাকটি সাইদুরের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়েছিল, তা আটক করা হয়েছে, তবে এর চালক পালিয়ে গেছেন।

পরিবারের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই সাইদুরের মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা আল মারুফ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ